চট্টগ্রামের ডিসির বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনি ব্যবস্থা নিতে নোটিশ
নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান খান।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সংস্থাপন সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার বরাবর নোটিশটি পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, 'আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জয় চেয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার মোনাজাত ও বক্তৃতা' শিরোনামে অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত খবর আমার দৃষ্টিতে এসেছে। বক্তব্যে রিটার্নিং কর্মকর্তা একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে ভোট চেয়েছেন এবং অন্যদের ওই রাজনৈতিক দলের জন্য দোয়া করতে অনুরোধ করেছেন। জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে তার নিরপেক্ষ ভূমিকা থাকা উচিত ছিল। অনুষ্ঠিত দোয়া অনুষ্ঠানে একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর জয় কামনা করে নোটিশগ্রহীতার (ডিসি) আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য জেলা পরিষদ নির্বাচনে তার ভূমিকা নিয়ে অন্য প্রার্থীদের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা ও সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নোটিশগ্রহীতার (ডিসি) ওই বক্তব্য থেকে একটি রাজনৈতিক দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রভাব বিস্তারের সমূহ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সব ভোটার ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা এমতাবস্থায় আস্থাহীনতায় ভুগছেন। নোটিশগ্রহীতার (ডিসি) কার্যকলাপে নির্বাচনী ফলাফল প্রভাবিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।'
নোটিশে আরো বলা হয়, রিটার্নিং কর্মকর্তার (ডিসি) মাধ্যমে ২০১৬ সালের জেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ৭৯, ৮০ ও ৮১ বিধির লঙ্ঘন হওয়া সত্ত্বেও অপর নোটিশগ্রহীতারা সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন, যা আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্যের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নোটিশগ্রহীতার (ডিসি) বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হলে নোটিশদাতা আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হবেন বলেও উল্লেখ করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এক সম্প্রীতি সভায় ডিসি বলেন, 'আমি মনে করি, বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে যদি থাকে, তাহলে আমাদের দেশে আওয়ামী লীগ বলি, বিএনপি বলি, জামায়াত বলি- সবাই নিরাপদ থাকবে। আমি মনে করি, বিএনপি-জামায়াতেরও এখন দোয়া করা উচিত শেখ হাসিনা যেন আবার ক্ষমতায় আসেন।'
আসন্ন দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে ওই সভার আয়োজন করা হয়। ওই দিন ছিল জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। সভা চলাকালে আওয়ামী লীগ মনোনীত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম সেখানে ঢুকে পড়েন। নেতা-কর্মীদের নিয়ে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তা ডিসি মমিনুরের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এই নির্বাচনে পেয়ারুলসহ তিনজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর সবাই হাত তুলে মোনাজাতে অংশ নেন। এসময় ডিসিও নেতাদের সঙ্গে হাত তুলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পেয়ারুলের জয় কামনা করেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।