ভারতের মাধ্যমে রাশিয়ার তেল আমদানি করতে চায় বাংলাদেশ

বাংলাদেশ

ইউএনবি
21 August, 2022, 05:35 pm
Last modified: 22 August, 2022, 01:41 pm
‘ভারত এখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাশিয়ার তেল আমদানি করছে। আর আসাম রাজ্যের নুমালিগড়ের শোধনাগার থেকে পরিশোধিত তেল আমদানির জন্য ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে।’

সম্ভাব্য বাণিজ্যিক ঝুঁকি এড়াতে তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে রাশিয়ার তেল আমদানি করতে আগ্রহী বাংলাদেশ।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল সূত্রের তথ্যমতে, রাশিয়ার তেল আমদানির জন্য বাংলাদেশের পছন্দের সেই তৃতীয় দেশটি হতে পারে প্রতিবেশী ভারত।

মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেছেন, 'ভারত এখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাশিয়ার তেল আমদানি করছে। আর আসাম রাজ্যের নুমালিগড়ের শোধনাগার থেকে পরিশোধিত তেল আমদানির জন্য ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে।'

সেখান থেকে রাশিয়ার সস্তার তেল কেনাটা সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়ানোর উপায় হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'দুই দেশের মধ্যে যদি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি থাকে, তাহলে এরকম ব্যবসা করা খুবই সম্ভব।'

সম্প্রতি রুশ কোম্পানি রুস্‌নেফট বাংলাদেশের কাছে কম দামে পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম, বিশেষ করে ডিজেল, বিক্রির প্রস্তাব দেয়। এর পরই রাশিয়া থেকে পেট্রোলিয়াম জ্বালানি আমদানির সম্ভাব্যতা নিয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা হয়।

মস্কোভিত্তিক রুস্‌নেফট রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি) প্রতি ব্যারেল পেট্রোলিয়াম জ্বালানি ৫৯ ডলারে বিক্রির প্রস্তাব দেয়। বর্তমানে বিশ্ববাজারে জ্বালানিটির মূল্য ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারের বেশি।

প্রস্তাব অনুযায়ী, রুশ কোম্পানিটি প্রিমিয়াম ও পরিবহন খরচসহ এই দামে পেট্রোলিয়াম চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে দেবে। 

তবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ কোম্পানিটির প্রস্তাব সম্পর্কে কিছু জানায়নি।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ প্রস্তাবের বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি।

বৃহস্পতিবার তিনি সংবাদ সংস্থা ইউএনবিকে বলেন, 'এখনও নতুন কোনো আপডেট নেই।'

বিপিসির সূত্র জানায়, রাশিয়ার তেল আমদানির বিষয়টি অন্যান্য দেশ থেকে জ্বালানি আমদানির চেয়ে আলাদা।

তারা বলেন, বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে পেট্রোলিয়াম জ্বালানি আমদানির সম্ভাব্য ঝুঁকি মূল্যায়ন করছে। কারণ এ ধরনের আমদানির ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা ক্ষুব্ধ হতে পারে।

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের জড়ানোর পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়ার ওপর একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তারা বলেন, কোনো দেশ সরাসরি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করলে তা ওপরও একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতে পারে। এ কারণেই তেল আমদানির বিষয়ে যেকোনো পদক্ষেপ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে না। 

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাশিয়ার কাছ থেকে পেট্রোলিয়াম জ্বালানি আমদানির প্রস্তাব পাওয়ার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এখন এরকম আমদানির সম্ভাব্য ঝুঁকি ও বিভিন্ন প্রক্রিয়া মূল্যায়ন করছে।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.