ইলিশের সরবরাহ বাড়লেও দাম চড়া, সবজির বাজারে স্বস্তি

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
30 July, 2022, 10:55 am
Last modified: 30 July, 2022, 10:59 am
নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর কেজিতে ইলিশ মাছের দাম কমেছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে সরবরাহ ভালো থাকায় প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৪৫ টাকা দামে কেনা যাচ্ছে বেশিরভাগ সবজি।
ইনফোগ্রাফ- টিবিএস

রাজধানীর বাজারে ইলিশের সরবরাহ ব্যাপক হারে বাড়লেও দাম এখনও চড়া। 

তবে সবজি এবং মাংসের বাজার ক্রেতাদের কিছুটা স্বস্তি দিলেও চালের বাজার এখনও চড়াই আছে। সরকারের কাছ থেকে আমদানির অনুমতি পাওয়া গেলেও চালের দাম কমছে না।

২৪ জুলাই থেকে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকে রাজধানীর বাজারগুলোতে সরবরাহ বেড়েছে ইলিশ মাছের। তবে জোগান বাড়লেও দাম সেভাবে কমেনি। 

এখনও এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। আর এক কেজি ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকায়। 

৫০০ থেকে ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ৭০০-৮০০ টাকা। তবে সাগরের ইলিশের দাম নদীর ইলিশের তুলনায় কিছুটা কম।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, মগবাজার নায়াটোলা বাজার ঘুরে দেখা গেছে বাজার ভরা ইলিশ মাছ। 

বিক্রেতারা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর কেজিতে ইলিশ মাছের দাম কমেছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। দাম আরও কমবে বলে জানিয়েছেন তারা। 

কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ মারুফ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "ইলিশের সরবরাহ ভালো। বরিশাল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী থেকে মাছ বেশি আসছে, ফলে মাছের দাম কিছুটা কমেছে।"

তিনি বলেন, 'আগে ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের মাছ বিক্রি করতাম ১৭০০-১৮০০ থেকে টাকা। এখন বিক্রি করি ১৪০০ টাকায়। 

মাছের সরবরাহ বাড়ার পর বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও বেড়েছে জানিয়ে মারুফ বলেন, "আজকে ১০০ কেজি ইলিশ মাছ বিক্রি করেছি। সরবরাহ আরও বাড়বে। এতে মাছের দাম আরও কমে যাবে।"

কারওয়ান বাজারে রাজধানীর মিরপুর থেকে এসেছেন আব্দুল মতিন। তিনি প্রায় ৬ কেজি ইলিশ মাছ কিনেছেন। ১ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের এ মাছ প্রতি কেজি ১২৫০ টাকা দরে কিনেছেন। 

আব্দুল মতিন বলেন, "মাছের দাম কমেছে এ খবর শুনে বাজারে এসেছি। বাজার ভর্তি ইলিশ মাছ, কিন্তু সেই তুলনায় দাম তো কমাচ্ছে না বিক্রেতারা।"

"আগের চেয়ে কিছুটা কম হওয়ায় কিনে রাখলাম, ফ্রিজে সংরক্ষণ করে খাবো," বলেন তিনি।

তবে কিছুটা দাম কমলেও নিম্ন আয়ের মানুষের কেনার নাগালের বাইরেই থাকছে ইলিশ মাছ।

কারওয়ান বাজারে কথা হয় রিকশাচালক দুলাল মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, "আমাদের ইলিশ মাছ দেখেই যেতে হয় কেনার সামর্থ নেই।"

প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করেন জানিয়ে তিনি বলেন, "এই টাকা দিয়ে খুব কষ্টে চার সদস্যের পরিবার চালাই। কম দামে চন্দনা ইলিশ (বৈজ্ঞানিক নাম: Tenualosa toli) খেয়েই আমাদের ইলিশের স্বাদ নিতে হয়। 

আমদানির অনুমতিতেও চালের দাম কমেনি

বাজারে চালের দাম বাড়তে থাকায় সরকার আমদানির অনুমতি দিলেও দাম কমেনি। 

কারওয়ান বাজারের ইয়াসীন জেনারেল স্টোরের এক বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, "মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে কেজিতে এক টাকা। এখন ৭০ টাকা কেজি।"

বাজার ঘুরে দেখা গেছে মোটা চাল বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকায়। সরু চালের মধ্যে নাজিরশাইল চাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা থেকে ৮২ টাকা।

ঈদের আগে হঠাৎ দাম বেড়ে যাওয়া কাঁচা মরিচ এখনো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ১৮০ টাকা।

সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দামে খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। বাজারে সবজির সরবরাহ ভালো থাকায় প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৪৫ টাকা দামে কেনা যাচ্ছে বেশিরভাগ সবজি।

মগবাজার এলাকার সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ পিকুল বলেন, "দাম কিছুটা কম থাকলেও বিক্রি সেই তুলনায় হচ্ছে না। ঈদের আগে ৫ থেকে ৬ মণ বিক্রি করতাম । এখন বিক্রি করছি ৩ থেকে ৪ মণ সবজি।"

তিনি বলেন, পটল ৪০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, পেপে ৩০ টাকা বিক্রি করছি। বৃষ্টির কারণে কাঁচা মরিচের ক্ষেতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে দাম বেড়েছে বলে জানান পিকুল।

এদিকে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে মুরগি ও ডিম।

ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। আর পাকিস্তানি কক মুরগির কেজি ২৭০-২৮০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ১২০ টাকা। 

রাজধানীর মনিপুরি পাড়া থেকে কারওয়ান বাজারে এসেছেন সোহেল হোসেন। তিনি বলেন, "টিকে থাকার জন্য পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যর দাম যে বাড়তি, সেটা তো আর কমছে না।"

"এক বছর আগেও ১০০০ হাজার টাকায় যে পণ্য কিনতাম সেটা এখন কিনতে হচ্ছে ১৫০০ টাকায়। আয় তো বাড়াতে পারছি না। বাজার করতে এসে হিমশিম খাচ্ছি," যোগ করেন তিনি।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.