ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে জমেছে অতিরিক্ত সাড়ে চার হাজার কন্টেইনার

বাংলাদেশ

14 July, 2022, 09:30 am
Last modified: 14 July, 2022, 11:35 am
গত ৮ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে কন্টেইনার ছিল ৩৭ হাজার ৯৯৮ টিইইউস। ১৩ জুলাই এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৪৯৯।

প্রতিবছর ঈদের টানা ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম শতভাগ সচল থাকে। আমদানি পণ্য ডেলিভারি নিতে সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কন্টেইনার ডেলিভারিতে এর সুফল মেলেনা। ছুটিকালীন সময়ে কন্টেইনার ডেলিভারি নেমে আসে শূন্যের কোটায়।

এবারের ঈদুল আজহার ছুটিতেও একই চিত্র দেখা গেছে। ঈদের ছুটির আগে প্রতিদিন যেখানে সাড়ে চার হাজারের বেশি কন্টেইনার ডেলিভারি হয়েছে ছুটিকালীন সময়ে, সেটি নেমে আসে এক হাজারের নিচে। ডেলিভারি হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে চারগুণ কম। এছাড়া ঈদের দিনে বন্দর থেকে কোন কন্টেইনার ডেলিভারি হয়নি।

চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৮ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে কন্টেইনার ছিল ৩৭ হাজার ৯৯৮ টিইইউস। ১৩ জুলাই এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৪৯৯টিতে। ৬ দিনে বন্দর ইয়ার্ডে কন্টেইনার জমেছে অতিরিক্ত ৪ হাজার ৪০১ টিইইউস। স্বাভাবিক সময়ে বন্দর ইয়ার্ডে গড়ে ৩৫ হাজার টিইইউস কন্টেইনার থাকে।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের ছুটিকালীন সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্যের ডেলিভারি কার্যক্রমের জন্য কাস্টম হাউসে পর্যাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগসহ সার্বিক সুবিধাদির ব্যবস্থা রাখা, আমদানি রপ্তানির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখা এবং বন্দর অভ্যন্তরে স্থিত ব্যাংকের বুথ সমূহ খোলা রাখতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুরোধ করা হয়।

এছাড়া সিএন্ডএফ এজেন্টস, শিপিং এজেন্টস, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার এসোসিয়েশন, বেসরকারী আইসিডি, বার্থ অপারেটর, টার্মিনাল অপারেটর, শিপ হ্যান্ডেলিং অপারেটর, চট্টগ্রাম চেম্বার এবং বন্দর সংশ্লিষ্ট সকল স্টেক হোল্ডার প্রতিনিধিদের তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু বন্দর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো সচল কিংবা আমদানিকারকরা কন্টেইনার ডেলিভারি না নেওয়ায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোঃ ওমর ফারুক বলেন, প্রতিবারের ন্যায় এবারও ঈদের আগে বন্দর স্টেকহোল্ডারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিলো কন্টেইনার ডেলিভারি স্বাভাবিক রাখতে। কিন্তু ঈদে ডেলিভারির পরিমাণ কমে যায়। তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ডেলিভারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ঈদের ছুটিতে কারখানা, গুদাম বন্ধ থাকে। তাই তারা ঈদের ছুটিকালীন সময়ে পণ্যের ডেলিভারি নেন না। আবার অনেক আমদানিকারক ঈদের ছুটিতে বন্দরের ইয়ার্ডকে গুদাম হিসেবে ব্যবহার করতে চায়।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ঈদে প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মীরা ছুটিতে থাকে। বন্ধ থাকে কারখানা এবং গুদাম। তাই আমদানিকারকরা এই সময়ে বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি নিতে পারেনা।

চট্টগ্রাম বন্দরের পাশাপাশি ১৯টি বেসরকারি  আইসিডি থেকে খাদ্যপণ্য সহ ৩৮ ধরনের আমদানি পণ্য ডেলিভারি দেওয়া হয়। ঈদে আইসিডিতেও আমদানি পণ্য ডেলিভারির পরিমাণ কমে যায়।

আইসিডি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) সেক্রেটারি জেনারেল রুহুল আমিন শিকদার বলেন, গত ৫ জুলাই পর্যন্ত আইসিডিগুলোতে আমদানি কন্টেইনার ছিলো ৮ হাজার ১০০ টিইইউস। ১২ জুলাই আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ছিলো ৭ হাজার ৭২০ টিইইউস। এছাড়া আইসিডিতে রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার রয়েছে ৯ হাজার ৭৫২ টিইইউস, এবং খালি কন্টেইনার রয়েছে ৩৩ হাজার ৪৪০ টিইইউস।

চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার ডেলিভারির তথ্য অনুযায়ী, গত ৮ জুলাই ৪ হাজার ৭২১ টিইইউস, ৯ জুলাই ১ হাজার ৮৪৫ টিইইউস, ১০ জুলাই ৫৩৭ টিইইউস, ১১ জুলাই ০ টিইইউস, ১২ জুলাই ১ হাজার ১২২ টিইইউস এবং ১৩ জুলাই ১ হাজার ২০২ টিইইউস কন্টেইনার ডেলিভারি হয়। চট্টগ্রাম বন্দর সকাল ৮টা থেকে তার আগের ২৪ ঘণ্টা অনুযায়ী কন্টেইনার পরিবহনের হিসাব নির্ধারণ করে।

চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে কন্টেইনার ধারণ সক্ষমতা ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউস। বন্দর ইয়ার্ডে গত ৮ জুলাই ৩৭ হাজার ৯৯৮ টিইইউস, ৯ জুলাই ৪০ হাজার ১১৮ টিইইউস, ১০ জুলাই ৪০ হাজার ৭৮৮ টিইইউস, ১১ জুলাই ৪১ হাজার ১৩৪ টিইইউস, ১২ জুলাই ৪২ হাজার ৮১৫ টিইইউস এবং ১৩ জুলাই ৪২ হাজার ৪৯৯ টিইইউস কন্টেইনার ছিলো।  
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.