ভ্যাট বৃদ্ধির চাপে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা
নতুন অর্থবছরের শুরুতে ১ জুলাই থেকে অপারেটররা মোবাইল ইন্টারনেটের ওপর ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) কাটায় মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওপর চাপ বেড়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-কে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এএমটিওবি বা অ্যামটব)।
চিঠিতে অ্যামটব জানায়, মূল্য সংযোজন কর এবং সম্পূরক শুল্ক আইন-২০১২ অনুযায়ী মোবাইল অপারেটরদের ১৫ শতাংশ ভ্যাট সংগ্রহের অনুমোদন দেওয়া হলেও তারা ভ্যাটের হার কমিয়ে সংগ্রহ করছিল।
"কিন্তু অর্থ আইন-২০২২-এ পরিবর্তনের কারণে মোবাইল অপারেটরদের ২০২২-এর ১ জুলাই থেকে মোবাইল ডেটা পরিষেবায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট সংগ্রহ করে জমা দিতে হবে,"- চিঠিটিতে বলা হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে সম্পর্কিত।
তিনি বলেন, "ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে ভোক্তাদের পকেট থেকে টাকা যাবে। তাই এ খাতের নিয়ন্ত্রক হিসেবে আমরা বিষয়টি লিখিতভাবে এনবিআরকে জানাব।"
রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার শাহেদ আলম বলেন, "ভ্যাট আদায় বৃদ্ধি এবং ভ্যাট আদায়ে ন্যায্যতা ও সুবিচার নিশ্চিত করতে মূল্য সংযোজন কর আইন-২০১২ প্রণয়ন করা হয়েছিল। এই আইনে সকল প্রকার রেয়াত প্রাপ্যতাও নিশ্চত করা হয়েছিল।"
"ভ্যাট এর মূল নীতি এবং বৈশ্বিক মানদণ্ড বজায় রেখে ২০১২ সালের আইনে (যা ২০১৯ থেকে কার্যকর হয়) সকল ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ করা হয়। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে ২০১২ সালের আইনটি কার্যকর করার সময় থেকে হ্রাসকৃত হারে ভ্যাট আরোপ করা হতে থাকে এবং উপকরণের সংজ্ঞা পরিবর্তন করে রেয়াত সীমিত করা হয়। যার কারণে ব্যবসায়িক পর্যায়ে কার্যকর ভ্যাট হার বৃদ্ধি পেতে থাকে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকেই এই বাড়তি করের বোঝা বহন করতে হয়," বলেন তিনি।
"চলতি অর্থবছরের অর্থ আইনে আনুপাতিক হারে ভ্যাট রিবেট রদ বা বাতিলের বিধান রাখা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, ন্যায্যভাবে সামঞ্জস্য ব্যবস্থা থাকলেও সেবার প্রকারভেদ অনুযায়ী ভ্যাট রিবেট রদ বা বাতিল করা হবে এবং সামগ্রিক প্রাপ্যতা সীমিত করা হবে বলে বিধান রাখা হয়েছে। এ কারণে কার্যকর ভ্যাট হার অনেক বেশি বেড়ে যাবে, যা আমাদের পক্ষে বহন করা সম্ভব না। শুধু তাই নয়, নতুন আইনের কারণে ভ্যাট নিয়ে আইনি জটিলতা বৃদ্ধি পাবে। এসব কারণে ভ্যাট আইনের প্রাসঙ্গিক বিধান অনুযায়ী সকল ইন্টারনেট প্যাকেজের ওপর আদর্শ ভ্যাট হার অনুযায়ী ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট সংযুক্ত করা হয়েছে।"
বর্তমানে, দেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটি ৪৫ লাখ। এছাড়া মে মাসে দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি ৫৫ লাখে পৌঁছেছে।