‘বছরে ১২-১৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করা হয়’

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
24 October, 2021, 10:00 am
Last modified: 24 October, 2021, 12:07 pm
গণতন্ত্র ও সুশাসনের অভাব, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া, আর রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে প্রতি বছর দেশ থেকে বিপুল পরিমাণে অর্থ পাচার হচ্ছে। 

গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) সহ বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার হিসেবে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৮-৯ বিলিয়ন ডলার অবৈধভাবে পাচার হচ্ছে বলে দাবি করা হলেও প্রকৃত হিসাবে এর পরিমাণ আরও বেশি হবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

তারা বলছেন, পাচার হওয়া টাকার ৮০ শতাংশ ঘটছে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে ওভার ইনভয়েজিং আর আন্ডার ইনভয়েজিংয়ের মাধ্যমে। বাণিজ্যের বাইরে প্রভাবশালীদের দুর্নীতির মাধ্যমে আয় করে পাচার হওয়া অর্থ যোগ করলে এর পরিমাণ ১৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে।

শনিবার সন্ধ্যায় ইকোনমিকস স্টাডি সেন্টার এবং ইএমকে সেন্টারের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় এ সব বিষয় উঠে এসেছে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, গণতন্ত্র ও সুশাসনের অভাব, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া, আর রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে প্রতি বছর দেশ থেকে বিপুল পরিমাণে অর্থ পাচার হচ্ছে। 

এর ফলে সরকারের রাজস্ব কর আহরণ কমে আসায় সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে প্রত্যাশিত বরাদ্দ দেওয়া যাচ্ছে না।   

অনুষ্ঠানে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, "ব্যবসায়ীরা আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে যে অর্থ পাচার করেন তার পরিমাণ বছরে ৮-৯ বিলিয়ন ডলার। এর বাইরে রাজনৈতিক প্রভাবশালী আর দুর্নীতিবাজদের অর্থ যোগ করলে এর পরিমাণ ১২-১৫ বিলিয়ন ডলার হবে"।

তিনি বলেন, "বেশিরভাগ রাজনৈতিক প্রভাবশালীই কানাডার বেগমপাড়া কিংবা মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোম প্রোগ্রামে অর্থ পাচার করছে"। 

তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, এটর্নি জেনারেলের কার্যালয়সহ সরকারের সংস্থাগুলো সমন্বিত উদ্যোগ নিলে পাচার প্রতিরোধ করে উল্টো পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব। সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণে ২০১২ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলের পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। 

এ সময়ে আইনি কাঠামো আরও শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও সরকারের ইচ্ছা না থাকায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার নতুন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না বলেও তিনি মনে করেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে কাজ করা বিদেশি লোকজন তাদের আয়ের বড় একটা অংশই পাচার করছেন। এর পরিমাণ বছরে ২ বিলিয়ন ডলার।

আবার বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিদেশ যেতে ভিসার জন্য টাকা পরিশোধের নিয়ম না থাকলেও এ খাতে বছরে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি পাচার হচ্ছে। এ সব ঘটনা গুরুত্ব দিয়ে দেখার পরামর্শ দেন তিনি।

ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ঋণখেলাপি, জালিয়াতি, প্রতারণাসহ বিভিন্নভাবে অর্থ পাচারের কথা সংবাদ মাধ্যমে আসছে। সরকারের পক্ষ থেকে এসবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।   

 
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.