হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করেছে চবির রসায়ন বিভাগ

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
16 March, 2020, 05:00 pm
Last modified: 16 March, 2020, 05:11 pm
করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় নিজস্ব অর্থায়নে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন শুরু করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ। সোমবার প্রাথমিকভাবে পাঁচ বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন করা হয়েছে।

দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর বাজারে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের কৃত্তিম সংকট দেখা দিয়েছে । সংকটের কারণে প্রয়োজনীয় এই সামগ্রী বাজার থেকে কিনতে পারছেন না অনেকে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফার লোভে এই কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। 

তবে করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় নিজস্ব অর্থায়নে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন শুরু করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রসায়ন বিভাগ। সোমবার প্রাথমিকভাবে ২৫০ মিলিলিটারের পাঁচ বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন করা হয়েছে। সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এসএম আবে কাউছার। তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, আমি রসায়ন বিভাগের ক্রয় কমিটির সভাপতি। করোনার প্রকোপ শুরুর পর চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিনতে যাই। দোকানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার থাকলেও অতিরিক্ত মুনাফার লোভে দোকানি আমাকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেয়নি। 

তিনি আরও বলেন, ফিরে সিদ্ধান্ত নিলাম হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করবো। বিভাগের সভাপতি ড. শাহানারা বেগমকে জানালে তিনি এতে সম্মতি দেন। এরপর বিভাগের আরেক শিক্ষক ড. দেবাশিস পালিতসহ শিক্ষার্থীদের নিয়ে সোমবার প্রাথমিকভাবে ৫ বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করা হয়েছে।

অধ্যাপক এসএম আবে কাউছার বলেন, প্রাথমিকভাবে তৈরিকৃত হ্যান্ড স্যানিটাইজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেওয়া হয়েছে। তবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরির উপকরণগুলো সংকট রয়েছে। তাই এখনো স্বল্পমাত্রায় তৈরি করা হচ্ছে। অর্থায়নের একটি বিষয় রয়েছে।

রসায়ন বিভাগের সভাপতি ড. শাহানারা বেগম বলেন, করোনাকে পুঁজি করে একদল ব্যবসায়ী মুনাফা তৈরিতে ব্যস্ত। দেশীয় কোম্পানির তৈরি হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দাম রাতারাতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটাকে প্রতিহত করার জন্য স্বল্প পরিসরে নিজেদের অর্থায়নে কিছু হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদন করা হয়েছে।

এদিকে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, সংকটের মধ্যে এভাবে এগিয়ে আসাটা দরকার ছিল। 
শিক্ষার্থী পারভীন আখতার বলেন, এই উদ্যোগটা অবশ্যই ভালো। এভাবে আমাদের সমাজের প্রত্যেকে নিজেদের অবস্থান থেকে এগিয়ে আসলে কোনো ধরনের সংকট তৈরি হতো না।

উৎপাদিত হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতারের সঙ্গে দেখা করেছেন রসায়ন বিভাগের শিক্ষকরা। উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার বলেন, রসায়ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক তাদের উৎপাদিত হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। আমি তাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছি। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উৎপাদনে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। পরে তা চীনসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ছয় হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এক লাখ ৬৯ হাজার। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮ জন।
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.