হল ও ক্যাম্পাস খোলার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন

বাংলাদেশ

24 August, 2021, 07:00 pm
Last modified: 25 August, 2021, 04:08 pm
‘হল খোলো, ক্যাম্পাস খোলো’ ব্যানারে দাঁড়ানো শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তোলা দাবিগুলো হলো- হল খুলে দেওয়া, হল খুলে স্বশরীরে পরীক্ষা নেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসার সুব্যবস্থা করা, হলে শিক্ষার্থীদের অনুপাতে আইসোলেশন সেন্টারের ব্যবস্থা করা ও দ্রুত শিক্ষার্থীদের টিকাদান সম্পন্ন করা। 
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেওয়া ও স্বশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে আজ বিকাল ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন বিভিন্ন হলের সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য ও নেতা-কর্মীরা। বিগত ১৭ মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। অনলাইনে চলছে ক্লাস। কিছু বিভাগে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হলেও, বেশিরভাগ বিভাগেই পরীক্ষার বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত। এ প্রেক্ষিতেই তাদের মানববন্ধনে বক্তাদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হয়।

'হল খোলো, ক্যাম্পাস খোলো' ব্যানারে দাঁড়ানো শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তোলা দাবিগুলো হলো- হল খুলে দেওয়া, হল খুলে স্বশরীরে পরীক্ষা নেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসার সুব্যবস্থা করা, হলে শিক্ষার্থীদের অনুপাতে আইসোলেশন সেন্টারের ব্যবস্থা করা ও দ্রুত শিক্ষার্থীদের টিকাদান সম্পন্ন করা। 

মানববন্ধনে বক্তব্যে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আদনান আজিজ চৌধুরী বলেন, "করোনা কখনোই পুরোপুরি যাবে না। সে কারণে নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে টিকাদানের আওতায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দেওয়া উচিত। হলে মেয়াদহীন শিক্ষার্থীদের কারণে সৃষ্ট আবাসন সংকটের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিলে হল খুলে দেওয়ার বিষয়টি সহজ হবে,"

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিক মাহবুব ইসলাম বলেন, "আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় অংশের শিক্ষার্থী অন্তত প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন। অন্যদিকে, হলের বর্তমান অবস্থা ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের পরিস্থিতি সাপেক্ষে এখনই বিশ্ববিদ্যালয় খোলা না গেলে, সব শিক্ষার্থীকে টিকাদানের আওতায় এনে আগামী অক্টোবর মাসের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার দাবী জানাচ্ছি," 

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিদ আজাদ সৌমিক বলেন, "আমরা সবাই জানি গত বছরের মার্চ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। কিন্তু একই সময়ে শপিং মল, রেস্টুরেন্ট ও কারখানা খোলা ছিল বিভিন্ন সময়ে। কোভিড শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ছড়ায় এরকম চিন্তা হাস্যকর। অনলাইন ক্লাস অনেক শিক্ষার্থীর জন্যই বোঝাস্বরূপ। আমরা দ্রুত এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চাই," 

শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের মেঘ মল্লার বসুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শামসুন নাহার হলের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অর্নি আনজুম, বেগম রোকেয়া হলের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী রিমিয়া রহমান, সূর্য সেন হলের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিকুল ইসলাম, মুহসীন হলের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের মাঈন আহমেদ, সুফিয়া কামাল হলের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তানহা তানজিন, জহুরুল হক হলের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী জাবির আহমেদ জুবেল, সল্লিমুল্লাহ মুসলিম হলের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুল হক নিশান প্রমুখ। 

সমাবেশে বক্তারা আরও জানান,  দ্রুত তাদের দাবি মেনে হল ও ক্যাম্পাস খোলার জন্য কর্তৃপক্ষ কোনো রকম ব্যবস্থা না নিলে আরও কঠোর আন্দোলনে যাবেন তারা। 

এদিকে, আজ বিকাল ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির এক সভায় বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ সভাকে কেন্দ্র করেই প্রভোস্ট কমিটির সভার আগে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনের আয়োজন করেন। 

উল্লেখ্য, দেশে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রাথমিক পর্যায়ে গত বছরের ১৭ মার্চ সকল প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।   

এরপর, দেশের মহামারি পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় উন্নতি না দেখায় কয়েক ধাপে বন্ধের সময়সীমা বাড়ানো হয়। তারপর থেকেই বন্ধ শ্রেণিকক্ষে সরাসরি পাঠদান এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ছাড়া কোনো পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়নি। 

 
 

 
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.