রাতের আঁধারে ভেঙ্গে ফেলা হলো প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭টি ঘর 

বাংলাদেশ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি 
11 July, 2021, 08:05 pm
Last modified: 11 July, 2021, 08:29 pm
দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে সদ্য বদলিকৃত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমি জেরিন কান্তা ঘরগুলো নির্মাণ করেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ঘরগুলো ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭টি ঘর রাতারাতি ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। দুর্নীতি ঢাকতে ঘরগুলো গায়েব করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভাঙা ঘরের অবশিষ্ট জিনিসপত্র ট্রাকে করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের তৈলকুপি গ্রামে গত পাঁচদিন আগে রাতের আঁধারে এ ঘটনা ঘটে।

লাঙলঝাড়া ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম বলেন, রাতের বেলা অনেক লোকজন এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে ঘর ভাঙা শুরু করে। ট্রাকে করে ঘরের ইটসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে চলে যায়। তাছাড়া, জানালা দরজাগুলো অন্য একটি ঘরের মধ্যে রেখেছে। ইউএনও স্যারকে জিজ্ঞেস করলাম, 'স্যার কি হচ্ছে'। তখন স্যার জানালেন, 'এখানে ঘরে লোকজন তুলে দিলে জীবনের ভয় আছে। তাই ঘরগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।'

তিনি বলেন, নতুন ঘর করলো, এখনও কাউকে ঘরে তুলতে পারলো; না তার মধ্যে ভেঙে গেলে লজ্জাজনক ব্যাপার, এজন্য ঘরগুলো রাতের বেলাই ভাঙ্গা হয়েছে। এছাড়া এখনো যে ঘরগুলো আছে, সেগুলো নতুন করে সংস্কার করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু জানান, তৈলকুপি গ্রামে ১৪টি ঘর নির্মাণ করা হয় পুকুরের পাড়ে।  দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে সদ্য বদলিকৃত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমি জেরিন কান্তা ঘরগুলো নির্মাণ করেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ঘরগুলো ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। পুকুর ভরাটের জন্য আরো ৬ লাখ টাকা খরচ করেন উপজেলা অফিস থেকে। গত এক সপ্তাহ আগে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাতের আঁধারে তৈলকুপি গ্রামের সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বুলডোজার লাগিয়ে ভেঙে ফেলেন। রাতের মধ্যেই ইটসহ বিভিন্ন মালামাল সরিয়ে ফেলা হয়েছে। দুর্নীতি ঢাকতে এটি করা হয়েছে।

জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে গৃহহীন মানুষদের জন্য এসব ঘর নির্মাণ করা হয়। এর প্রত্যেকটির প্রকল্প ব্যয় এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। ঘটনাস্থল থেকে ১৪টি ঘরের মধ্য থেকে সাতটি ঘর সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, উপকারভোগীদের ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ঘর ভাঙা হয়েছে। সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সময়ে এ ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের-২ এর প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, ঢাকা থেকে টিম যাবেন ওই এলাকায়। কোন অনিয়ম হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.