যশোরে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা

বাংলাদেশ

টিবিএস ডেস্ক 
20 September, 2021, 09:55 pm
Last modified: 20 September, 2021, 10:02 pm
এজাহারে বাদী ইমন উল্লেখ করেছেন, তার জানামতে কমপক্ষে ৩০ জন আমানতকারী ওই প্রতিষ্ঠানে মোট ২ কোটি ৪৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকা জমা করেন। প্রতিষ্ঠানটি কয়েক বছর কয়েকজন আমানতকারীকে সামান্য কিছু মুনাফা দেয়। এরপর ২০১৪ সালের ১ জুলাই রাতারাতি প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। 

যশোরের ৩০জন আমানতকারীর কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা (দুই কোটি ৪৫ লাখ ৩৬ হাজার) হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে।

উল্লেখিত আসামি ছাড়াও অজ্ঞাত আরো ৪০/৫০ জনের কথা উল্লেখ করে মামলাটি করেন, যশোর শহরের পশ্চিম বারান্দিপাড়া কদমতলা এলাকার রবিউল হোসেনের ছেলে মফিজুল ইসলাম ইমন (৪৪)।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা আলেম পরিচয়ে ইসলামধর্মী সহজ-সরল মানুষকে কুরআন-হাদিসের বয়ান দিয়ে, ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে, কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে পাচার করেছে। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত আসামিরা ওই ৩০ জনকে নানানভাবে বুঝিয়েছে- তারা আলমে, সৎপখে উপার্জন করেন। তাদের প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখলে, সুদবিহীন মুনাফা পাওয়া যাবে। এভাবে সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে, এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড এবং এহসান ইসলামী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের অফিসে মানুষকে নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে সাধারণ ইসলামপ্রিয় মানুষ তাদের কথায় বিশ্বাস করে বিনিয়োগ করে।

ওই অফিস দুটি যথাক্রমে; যশোর শহরের চৌরাস্তার মোড়ের শরীফ মার্কেটের তৃতীয় তলায় এবং আরএন রোডস্থ হোমিওপ্যাথিক কলেজের পেছনে ঊমেষ চন্দ্র লেনে অবস্থিত।  

এজাহারে ইমন উল্লেখ করেছেন, তার জানামতে কমপক্ষে ৩০ জন আমানতকারী ওই প্রতিষ্ঠানে মোট ২ কোটি ৪৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকা জমা করেন। প্রতিষ্ঠানটি কয়েক বছর কয়েকজন আমানতকারীকে সামান্য কিছু মুনাফা দেয়। এরপর ২০১৪ সালের ১ জুলাই রাতারাতি প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। 

এরপর প্রতিষ্ঠানের মূল কর্মকর্তারা আত্মগোপন করেন। সম্প্রতি এই বিষয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে, তিনি জানতে পারেন যশোর থেকে প্রতিষ্ঠানটি ৩২২ কোটি ১১ লাখ ৮০ হাজার ৭৫০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকার পরিমাণ আড়াই হাজার কোটি টাকা। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ পড়ে, যশোরের আমানতকারীদের পক্ষে টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় গত রোববার বিকেলে কোতয়ালি থানায় মামলাটি করেন ইমন।
 
এ বিষয়ে কোতয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, এহসান গ্রুপের টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি দেশের অনেক মানুষ জানে। এই গ্রুপের চেয়ারম্যান ঢাকায় আটক হয়েছেন। যশোরের অনেক মানুষ তার প্রতিষ্ঠানে আমানত রেখে ক্ষতির শিকার হয়েছেন বলেও জানতে পেরেছি। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীদের একজন থানায় মামলা দেওয়ায় তা রেকর্ড করে তদন্ত করা হচ্ছে। 

এ মামলার নাম উল্লেখিত আসামিরা হলেন- এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান মুফতি আবু তাহের নদভী (৫৭), প্রধান নির্বাহী ব্যবস্থাপক কাজী রবিউল ইসলাম (৬০), জিএম জুনায়েদ আলী (৫০), পরিচালক আজিজুর রহমান (৬০), মঈন উদ্দিন (৪৮), মুফতি গোলাম রহমান (৬৫), আব্দুল মতিন (৬০), পরিচালক (প্রশাসন) আমিনুল হক, কলিমুল্লাহ কলি (৪৫), মিজানুর রহমান (৫০), মুফতি ইউনুস আহমেদ (৫২), মনিরুল ইসলাম (৫২), আইয়ুব আলী (৫২), শাসুজ্জামান টিটো (৪০), যশোর শাখার ম্যানেজার আতাউল্লাহ (৪২), আব্দুল হালিম (৬০), সংস্থান মাঠকর্মী সিরাজুল ইসলাম সোনা মিয়া (৫৩), সংস্থার এফও কমিটির সভাপতি শামছুর রহমান (৫৫), সেক্রেটারি বাবর আলী (৫০). সংস্থার এফ ও কমিটির প্রচার সম্পাদক আব্দুল হক (৫৫), সংস্থার এফও কমিটির  সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম সেলিমউল আজম চৌধুরী (৫২), অর্থ সম্পাদক মোকসেদ আলী (৫০), এফও কমিটির সাবেক সেক্রেটারি মুফতী ফুরকান আহমেদ (৫০), লোকমান হোসেন (৪৮), এফ ও মোহাম্মদ আলী, আক্তারুজ্জামান, এহসান গ্রুপের পরিচালক এসএম মিরাজুর রহমান ও হাফিজুর রহমান। 
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.