মুন্সীগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুরে পরিবহন শ্রমিকদের বিক্ষোভ
দেশজুড়ে জারিকৃত লকডাউনে বেশ কয়েকদিন ধরেই বন্ধ আছে বাস চলাচল। রোববার (২ মে) বাস খুলে দেওয়া, শ্রমিকদের আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা দেওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে মুন্সিগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর জেলার পরিবহন শ্রমিকদের বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা যাত্রীবাহি সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের আয়োজনে ৩ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। রোববার বেলা ১১ টার দিকে জেলার সিরাজদিখান উপজেলার নিমতলা এলাকায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে এ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহন চলাচলের ব্যবস্থা করার দাবি জানান। সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তার দাবি জানান তারা। সারা দেশে বাস ট্রাক টার্মিনাল গুলোতে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ১০ টাকা কেজিতে ওএমএসের চাল দেওয়ার দাবি তোলেন তারা।
এদিকে বাস চালুর দাবিতে বিক্ষোভ করছেন লক্ষ্মীপুরের পরিবহন শ্রমিকরা। আজ সকালে জেলা বাস ও মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে শহরের উত্তর তেমুহনী মুজিব চত্ত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে একই দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন বাস শ্রমিকরা। এসময় আগামী মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিরও ঘোষণা দেন বক্তারা।
আয়োজিত সমাবেশে শ্রমিকরা জানান, জেলায় কয়েক হাজার পরিহন শ্রমিক এবং কাউন্টারগুলোর মালিক- শ্রমিকরা অভাব-অনটনের মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
শ্রমিকরা অভিযোগ জানান, লকডাউনে শুধুমাত্র বাস বন্ধ রেখে সব ধরনের অফিস আদালত, মার্কেট, সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, কার, মাইক্রোবাস চালু রাখা হয়েছে। এতে গন্তব্যস্থলে যেতে যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি অর্থ। নষ্ট হচ্ছে কর্মঘন্টা, দূর্ভোগে থাকছে সাধারণ মানুষ।
শ্রমিকদের দাবি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চলাচল করলে এ খাতের শ্রমিকদের পাশাপাশি যাত্রীরাও হয়রানি মুক্তি থাকবেন।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক হাজী শাহজাহান স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চালুর পাশাপাশি শ্রমিকদের আর্থিক অনুদান, খাদ্য সহায়তা এবং শ্রমিকদের জন্য ১০ টাকায় চাল বিক্রির ব্যবস্থা করার দাবি জানান।
অন্যদিকে শ্রমিকরা অভিযোগ করে জানিয়েছন, সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে পরিবহন খাতের ড্রাইভার, পরিদর্শক, হেলপার, কাউন্টার ম্যানেজার, সহকারিসহ এ খাতের সাথে জড়িতরা অভাব অনটন থাকলেও দুঃসময়ে তারা পাশে পাচ্ছেন না পরিবহন মালিক, শ্রমিক ইউনিয়ন ও সরকারকে।
কয়েকজন শ্রমিক জানালেন, ধার-দেনা করে দিন কাটছে তাদের। সামনে ইদ আসছে। এখন তিন বেলা কোনোমতে খেতে পারাটাও কষ্টের। সেখানে ঈদের খরচের কথা ভাবতেও ভয় পাচ্ছেন তারা।
জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ শাহজাহান জানান, এ জেলায় কার্ডধারী পরিবহন শ্রমিকের সংখ্যা ৫৮০ জন। তবে কার্ডবিহীন পরিবহন শ্রমিক সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দ জানান, 'পরিবহন শ্রমিকদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের মাঝে সরকারি সহায়তা প্রদান করা হবে।'