মানব পাচারকারী চক্রের হোতাদের গ্রেপ্তারে প্রথম ইন্টারপোলের সাহায্য চাইলো বাংলাদেশ

বাংলাদেশ

টিবিএস ডেস্ক
11 November, 2020, 09:25 pm
Last modified: 11 November, 2020, 09:30 pm
বাংলাদেশ পুলিশ মোট ছয় পাচারকারীকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের সহযোগীতা চায়, এদের মধ্যে মিন্টু মিয়াই ছিল প্রথম।

সন্দেহভাজন মানব পাচারকারীদের বিবরণ  প্রথমবারের মতো ইন্টারপোলকে জানিয়েছে বাংলাদেশ। অভিবাসীদের অপহরণ এবং হত্যা বন্ধে এ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা গত মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেন পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশের অনুরোধের প্রেক্ষিতে চলতি সপ্তাহেই প্রথম বাংলাদেশি পাচারকারী হিসেবে মিন্টু মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থাটির 'রেড নোটিশ' তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তার অপরাধ বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়; 'এই ব্যক্তি বিদেশে গিয়ে চাকরি ইচ্ছুকদের সঙ্গে প্রতারণা করাসহ মুক্তিপণের দাবিতে তাদের বন্দি করে রাখা এবং হত্যার সঙ্গে জড়িত।' 

বাংলাদেশ পুলিশ মোট ছয় পাচারকারীকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের সহযোগীতা চায়, এদের মধ্যে মিন্টু মিয়াই ছিল প্রথম। বর্তমানে ইন্টারপোলের রেড নোটিশের আওতায় রয়েছে ৭ হাজার অপরাধীর নাম। সংস্থাটির সদস্য দেশসমূহের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব অপরাধীকে শনাক্ত করা এবং গ্রেপ্তারে সহায়তা করে, বলে জানান বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল সুপারিটেন্ডেন্ট সাইয়্যেদা জান্নাত আরা।   

তিনি রয়টার্সকে বলেন, ''উল্লেখিত ছয় পাচারকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের বিদেশে আকর্ষণীয় চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে, পরে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করতো। এরপর লিবিয়া নিয়ে গিয়ে তাদের আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করে আরও অর্থ আদায় করতো।''

''তারা মুক্তভাবে একদেশ থেকে অন্যদেশে ঘুরে বেড়াতো। কিন্তু, ইন্টারপোলের কাছে বিবরণ জমা দেওয়ায় প্রেক্ষিতে তাদের চলাচল সীমিত হয়ে পড়বে। কারণ, যে দেশেই তারা যাক সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের পলাতক অপরাধী হিসেবে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করবে,'' জান্নাত আরা যোগ করেন। 

ইন্টারপোলের 'রেড নোটিশ' শীর্ষক তালিকায় এখন নাম রয়েছে ৭০ জন বাংলাদেশির। পলাতক এসব অপরাধীকে গ্রেপ্তারের পর বিচার বা সাজার মুখোমুখি করতে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের অনুরোধ করা হয়েছে। পলাতকদের অধিকাংশই হত্যা, জাল মুদ্রা ব্যবহার এবং নীলছবি বিপণনের সঙ্গে জড়িত।  

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ মানব সম্পদ রপ্তানিকারক বাংলাদেশ। প্রতিবছর ৭ লাখ মানুষ বিদেশে কাজের সন্ধানে যান। প্রবাসী আয় জাতীয় অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। 

তবে দীর্ঘদিন ধরেই পাচারকারী চক্রের অন্যতম টার্গেট বাংলাদেশি নাগরিকেরা। বিদেশে চাকরি পাওয়ার লক্ষ্যে এদেশের নাগরিকেরাই সবচেয়ে বেশি অর্থ নিয়োগ ফি দিয়ে থাকেন অনিবন্ধিত দালালদের। এসব দালালেরাই মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে সরাসরি জড়িত এবং এরফলে শ্রমিকদের নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হতে হয়, বলে শ্রম অধিকার গোষ্ঠীগুলোর দীর্ঘদিনের অভিযোগ।   

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.