ভোলায় সংঘর্ষ: ফেসবুক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে হ্যাকারের পরিচয় মিলেছে
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য শুভর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে যে ব্যক্তি ধর্মীয় উস্কানিমূলক কথা ছড়িয়েছে তাকে চিহ্নিত করা গেছে।
পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, তারা ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি পাঠিয়েছিলেন যাতে হ্যাকারের অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করা যায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সিঙ্গাপুরের ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে তথ্য দিয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ফেসবুক কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত তথ্যগুলো নিয়ে কাজ করছে। হ্যাকারকে গ্রেপ্তারের পর বিস্তারিত জানানো হবে।’
ফেসবুকের মেসেঞ্জার অ্যাপে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় গত রোববার কয়েক হাজার লোক বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে চার জন নিহত ও শ’দুয়েক আহত হন।
বিক্ষোভকারীরা সেদিন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তরুণ বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য শুভর বিচারের দাবি তুলেছিলেন। তারই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য শুভ নামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওই তরুণ নিজেই ১৮ অক্টোবর শুক্রবার রাতে বোরহানউদ্দিন থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে এবং তার কাছ থেকে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে।
বিপ্লবের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রাফসান ইসলাম শরীফ ও মোহাম্মদ ইমন নামের দুই দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করে।
বিপ্লবকে ফোন করে তার কাছে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ফিরে পাওয়ার বিনিময়ে ২ হাজার টাকা দাবি করায় শরীফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওদিকে ইমনই মূলত বিপ্লবের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেছেন বলে জানতে পারায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে, ২১ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত এক মামলায় বিপ্লব, ইমন ও শরীফকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই মামলায় বলা হয়, আসমিরা ‘পরস্পর যোগসাজশে’ মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতমূলক কথা ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। যার ফলে ২০ অক্টোবর ভোলায় সহিংসতার ঘটনা ঘটে এবং চার জন নিহতসহ শ’দুয়েক আহত হন।
ভোলার এক আদালত বৃহষ্পতিবার বিপ্লব, শরীফ ও ইমনকে ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।