বাংলাদেশে শিশুখাদ্য পণ্য প্রক্রিয়াকরণ, ফিলিং ও প্যাকেজিং প্ল্যান্ট স্থাপন করলো নেসলে

বাংলাদেশ

17 June, 2021, 11:10 pm
Last modified: 17 June, 2021, 11:08 pm
এখন থেকে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ল্যাক্টোজেন ব্র্যান্ডের শিশুখাদ্য বাংলাদেশেই উৎপাদন করবে। 

দেশের শিশুখাদ্য পণ্যের বাজারে নিজেদের প্রভাব আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বাংলাদেশে অত্যাধুনিক 'ইনফ্যান্ট ফর্মুলা প্রসেসিং, ফিলিং ও প্যাকেজিং প্ল্যান্ট' স্থাপন করেছে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনকারী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান নেসলে।

এখন থেকে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ল্যাক্টোজেন ব্র্যান্ডের শিশুখাদ্য বাংলাদেশেই উৎপাদন করবে। 

নেসলে বাংলাদেশ-এর কর্মকর্তারা জানান, বুধবার থেকে তারা গাজীপুরের শ্রীপুরে ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কারখানায় শুধু ল্যাক্টোজেন-১ ও ল্যাক্টোজেন-৩ উৎপাদন শুরু করেছেন।  

প্রাথমিকভাবে কারখানায় বছরে ৬০০০ টন ল্যাক্টোজেন উৎপাদিত হবে। ধীরে ধীরে নিজেদের উৎপাদনক্ষমতা বাড়ানোর সাথে সাথে তারা ল্যাক্টোজেনের বাকি ভ্যারিয়েন্টগুলোও উৎপাদন শুরু করবেন। 

নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেড এর পরিচালক (কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স) নাকিব খান বলেন, 'নতুন কারখানায় বিশাল আকারে পণ্য এনে তারপর ইনফ্যান্ট ফর্মুলা প্রক্রিয়াকরণ, ফিলিং ও প্যাকেজিং করা হবে; যা শিশুখাদ্য সরবরাহের সংকট উপশম করবে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১০০০ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিবে।' 

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে প্রক্রিয়াকরণ করায় নেসলে পণ্যের সঙ্গে ৩০-৩৫ শতাংশ ভ্যালু যুক্ত হবে যা একটি বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ করবে। 

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের ৪০০০ কোটি টাকার শিশু খাদ্যের বাজারের একটি বড় অংশই নেসলের হাতে।

এক বছরে মোট ১০ হাজার টন শিশু খাদ্যের ৫৫-৬০ শতাংশ নেসলে সরবরাহ করে থাকে। বেশ কয়েক বছর ধরেই নেসলে 'নান' ব্র্যান্ডের দুধ রিপ্যাকেজিং করে আসছে। কিন্তু তাদের বেস্ট-সেলিং পণ্য ল্যাক্টোজেন অন্যান্য দেশের কারখানা থেকে আমদানি করে বাংলাদেশে সরবরাহ করতে হতো। 

নাকিব খান বলেন, ১৮০ টিরও বেশি দেশে ল্যাক্টোজেনের বাজার রয়েছে। ৩৪ টি দেশে ল্যাক্টোজেন প্রক্রিয়াজাত করা হয় এবং বাংলাদেশ সেখানে সর্বশেষ সংযোজন।

প্ল্যান্ট উদ্বোধনের পর শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, 'আমি অত্যন্ত খুশি যে নেসলে বাংলাদেশ তাদের গাজীপুরের শ্রীপুর কারখানায় 'ইনফ্যান্ট ফর্মুলা প্রসেসিং, ফিলিং এবং প্যাকেজিং প্ল্যান্ট' উদ্বোধন করতে যাচ্ছে। আমি ২০১৯ সালে অক্টোবরে সুইজারল্যান্ডের নেসলের হেডকোয়ার্টার, কোনলফিঙ্গান ফ্যাক্টরী এবং নেসলে গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি এবং সেই সময়ে নেসলের নেতৃত্বদানকারী দলের সাথে বাংলাদেশে তাদের বিশ্বমানের কারখানা স্থাপনে বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা করেছি। এটি আমার কাছে সন্তুষ্টির বিষয় যে, নেসলে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে।"

ভার্চুয়ালি ইভেন্টে যোগ দিয়ে নেসলে বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক দীপাল আবেই উইক্রেমা বলেন, 'শিশু অপুষ্টি কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য সবচাইতে দ্রুততম সময়ে অর্জিত হয়েছে যা ইতিহাসে বিরল।  বাংলাদেশ সরকারের পুষ্টিখাতে বিনিয়োগ এবং নানাবিধ কার্যক্রমের জন্যেই তা সম্ভব হয়েছে।'

'প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে বিশ্বমানের সুবিধায় সর্বোচ্চ মানের সুরক্ষা ও গুণমান সম্পন্ন পুষ্টিকর খাদ্যপণ্য পৌছে দেওয়া আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। বাংলাদেশের মানুষের প্রতিদিনের পুষ্টির চাহিদা মোকাবিলা করতে তাদের সাহায্য করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এরই লক্ষ্যে শ্রীপুর কারখানায় বিশ্বমানের খাদ্য উৎপাদন ও প্যাকিং সুবিধা নিয়ে আসতে পেরে আমরা গর্বিত", বলেন তিনি। 

নেসলের প্ল্যান্ট উন্মোচনের এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইনভেষ্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান জনাব মোঃ সিরাজুল ইসলাম খান, নেসলে সাউথ এশিয়া রিজিওনের মার্কেট হেড জনাব সুরেশ নারায়ণ, নেসলে জোন এশিয়া-ওশেনিয়া-আফ্রিকার নিউট্রিশন বিজনেস হেড মিঃ আরশাদ চৌধুরী। জোন এশিয়া-ওশেনিয়া-আফ্রিকা-এর রিজিওনাল ম্যানেজার মি. স্টেফান বার্নহার্ড এবং নেসলে জোন এশিয়া-ওশেনিয়া-আফ্রিকার টেকনিকাল প্রধান মি.  ক্রিস্টিয়ান শ্মিদ।

নেসলে , বিশ্বের বৃহত্তম খাদ্য ও পানীয় সংস্থা, বিশ্বে ১৫৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে এবং বাংলাদেশে ২৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে সুস্বাদু, পুষ্টিকর এবং উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করে আসছে।     
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.