বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাতের কথা স্মরণ ভুটানের রাষ্ট্রদূতের

বাংলাদেশ

টিবিএস ডেস্ক
10 March, 2021, 10:55 am
Last modified: 10 March, 2021, 11:13 am
রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুর ‘কীর্তিমান কন্যা’ এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বলেন যে তিনি "তার পিতার লক্ষ্য পূরণ করেছেন"।

ভারতে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল ভেটসপ নামগিয়েল সম্প্রতি বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাতের স্মৃতিচারণ করেছেন। 
 
সেটি ১৯৭৪ সালের কথা; মেজর জেনারেল নামগিয়েল তখন ভুটানের তৎকালীন রাজা জিগমে সিংগে ওয়াংচুকের বাংলাদেশ সফরের দায়িত্ব পালন করছিলেন। 

"দু'দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর, আমার রাজা, যিনি বর্তমান রাজার পিতা, ১৯৭৪ সালে এক রাষ্ট্রীয় সফরের জন্য বাংলাদেশে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। তখন শীতকাল ছিল। সে সফরে আমি এইড-ডি-ক্যাম্প হিসেবে দায়িত্বরত ছিলাম এবং আমার সৌভাগ্য হয়েছিল রাজার সাথে ভ্রমণের", বলেন নামগিয়েল ।  
 
"রাজা বঙ্গবন্ধুর সাথে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছিলেন… আমার সুযোগ হয়েছিল তার সাথে দেখা করবার। রাজার সাথে থাকার সুযোগে আমি বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পাই। তিনি অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন"। 

রাষ্ট্রদূত আরও যোগ করে বলেন, " তিনি যে ভালোবাসা, স্নেহ, শ্রদ্ধা এবং সমীহ প্রকাশ করেছিলেন তা আমাকে মুগ্ধ করেছিল "।
 
রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুর 'কীর্তিমান কন্যা' এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বলেন যে তিনি "তার পিতার লক্ষ্য পূরণ করেছেন" এবং "শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশ অত্যন্ত ভাল করছে।"  
 
দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সম্প্রতি স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হতে উন্নয়নশীল দেশে (ডিসি) উত্তরণ করেছে। জাতিসংঘের উন্নয়ন নীতি কমিটি এই সুপারিশ করেছে।  
 
বাংলাদেশ হাই কমিশন কর্তৃক আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এসব বক্তব্য রাখেন; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ স্মরণে সে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।  
 
বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ প্রদানের সময় রাষ্ট্রদূত নামগিয়েল ভারতের দেরাদুনে ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমিতে (আইএমএ) অবস্থান করছিলেন। তিনি সেখানে তার মিলিটারি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছিলেন। কিন্তু সে সময় 'বাংলাদেশে কী ঘটছিল সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল' ছিলেন তিনি ।  

তিনি বলেন, "আমার মনে আছে বাংলাদেশে যখন স্বাধীনতা সংগ্রাম চলছে, সে সময় আমরা প্রতিদিন নিয়ম করে রেডিও ও সংবাদপত্র অনুসরণ করতাম। আমরা দূরদর্শনের কাভারেজ শুনছিলাম...আমার মনে পড়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু যেদিন পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ফেরেন…" 

"আমার আজও মনে আছে, যে ব্যক্তি সংবাদ পরিবেশন করছিলেন...কী ভীষণ উত্তেজনা। খবরের প্রতিটি অংশে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্ব যেন ফুটিয়ে তোলা হচ্ছিল। সেদিনের সেই উত্তেজনা, সেই শ্রদ্ধা, সেই আবহ আমার এখনো স্পষ্ট মনে পড়ে"। 

ভারতের পর দ্বিতীয় রাষ্ট্র হিসেবে ভুটানের সাথেই বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ভুটানের রাষ্ট্রদূত বলেন, "ভুটান ও বাংলাদেশের মাঝে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে ... আমাদের ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে"। 

উল্লেখ্য,  ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১২ সালে ভুটানের তৃতীয় রাজা জিগমে দরজি ওয়াংচুককে মরণোত্তর স্বাধীনতা সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। এছাড়া উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদারের লক্ষ্যে গত বছর একটি দ্বিপাক্ষিক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ ও ভুটান। 

সূত্রঃ উইয়ন নিউজ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.