ফেব্রুয়ারিতে ক্লাস খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
সরকার দ্রুতই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ক্লাস খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে বলার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় ফেব্রুয়ারিতে ক্লাস খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
তবে অন্যান্য শিক্ষাবর্ষের ক্লাস ধীরে ধীরে খুললেও মাস্টার্স এবং অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত ক্লাস খোলার পরিকল্পনা চলছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে বলেন, তারা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে বলেছে।
তিনি বলেন, "মাস্টার্স এবং অনার্স শেষ বর্ষের কতোজন শিক্ষার্থী আবাসিক হলে থাকেন তার ওপর একটি সমীক্ষা শেষ করেছেন আমাদের হল প্রভোস্টরা। আমরা সোমবার এ বিষয়ে একটি সভার আয়োজন করেছি।"
কবে নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে পারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, "যদি করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয় এবং সরকার অনুমতি দেয় তবে ফেব্রুয়ারি থেকেই পুনরায় ক্লাস আরম্ভ করার পরিকল্পনা আমাদের।"
দেশের ৪৬টি পাবলিক ও ১০৬টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ক্লাস এবং পরীক্ষা নেওয়া হলেও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ভর্তি পরীক্ষা নিতে রাজি নয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে বলেন, বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছে। ক্লাস খুলে দিলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়বে।
তিনি বলেন, "সরকারের আদেশ এলেই বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে প্রস্তুত আমরা । আমাদের পক্ষে বিষয়টি কঠিন হলেও ,অবশ্যই পরিস্থিতি বুঝে পরিচালনা ও মোকাবেলা করতে হবে আমাদের।"
"তবে আগের মতো ক্লাস নেওয়া সম্ভব না এখন। আমরা কিছু শিক্ষার্থীকে নিয়ে এই ক্লাসগুলো করবো। তবে যারা করতে ইচ্ছুক নন, তারা অনলাইনেই ক্লাস করবেন।" যোগ করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা, বিশেষত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরেই আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে।
শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, অনলাইন ক্লাস কখনোই সরাসরি ক্লাসের বিকল্প হতে পারে না।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ওমর ফারুক টিবিএসকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় পুনরায় চালু করার বিষয়ে সরকারের উচ্চ মহল থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এখনও কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে মহামারির কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে সরকার ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ১৩ বার এই ছুটি বাড়িয়েছে। এরপর প্রশাসনিক কার্যক্রম ধীরে ধীরে আবার শুরু হলেও ক্লাস স্থগিতই রয়েছে।
তাছাড়া,সরকার গত বছর প্রাথমিক বিদ্যালয় সমাপনী পরীক্ষা (পিএসসি), জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (জেএসসি) এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা (এইচএসসি) এবং সমমানের পরীক্ষাও না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পিএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষার্থীদের অটো পাস দেওয়া হলেও , উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদেরকে জেএসসি এবং এসএসসি ফলাফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে। এছাড়া প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের সকল শিক্ষার্থীকে অটো পাশ দেওয়া হবে।