পল্লী বিদ্যুতের ১০ খুঁটির ভয়ে ৩০ একর জমির চাষাবাদ বন্ধ পাঁচ বছর

বাংলাদেশ

26 September, 2021, 10:15 pm
Last modified: 26 September, 2021, 10:14 pm
এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষি বিভাগের উদ্যোগে একাধিকবার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের দ্বারস্থ হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

লক্ষ্মীপুরে পল্লী বিদ্যুতের ১০টি হেলানো খুঁটির ভয়ে পাঁচ বছর যাবত চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা। ফলে অনাবাদী হয়ে পড়ে আছে ৩০ একর জমি। অন্যদিকে একই এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পথে ভয় করছেন ছাত্রছাত্রীরা। স্থানীয়রাও রয়েছেন ভয়ে। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষি বিভাগের উদ্যোগে একাধিকবার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের দ্বারস্থ হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। 

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেছে।
 
সেলিম উদ্দিন (৫০) রতনপুর গ্রামের বাসিন্দা। রোববার বিকেলে তিনি জানান, রতনপুর মাদরাসার পাশে প্রায় ত্রিশ একরের এ মাঠে গত ৫ বছর আগেও চাষাবাদ হতো। কিন্ত এখন হয় না। কৃষকরা এ মাঠে আসে না ভয়ে। এ জমিগুলোর ওপর দিয়ে গ্রামবাসীদের সরবরাহের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ ১১ হাজার ভোল্টের ৪ তারের লাইন টেনে রেখেছে। জমির সীমানার মধ্যে ১০টি পিলার গত ৫ বছর আগে হেলে পড়ে।
 
এতে স্থানীয়রা অভিযোগ করলে পল্লী বিদ্যুৎ খুঁটিগুলো সোজা না করে আরো ২০টি ছোট খুঁটি এনে বড় খুঁটিগুলোকে হেলান দিয়ে রাখে। ফলে কৃষি জমির পরিমাণ আরো কমে যায়। এখন সবগুলো হেলানো খুঁটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সামান্য বাতাস এলেই আগুন ধরে গ্রামের গাছে গাছে। ফসলী জমির পাশাপাশি বিভিন্ন বাড়ির বাগানের দিকেও খুঁটিগুলো হেলে পড়েছে। কিন্তু পল্লী বিদ্যুতের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহা পাওয়া যায়নি।

জিয়া উদ্দিন ফাহাদ রিপন নামের একজন গ্রামবাসী জানান, ওখানে তার আবাদী জমি রয়েছে। কৃষকের কাছে আগে ওই জমি ইজারা দিতেন তিনি। কিন্তু পাঁচ বছর ধরে খুঁটির ভয়ে জমিতে চাষাবাদ করতে নামছেন না কেউই। ফলে তার জমি এখন অনাবাদী।

ওই এলাকার বর্গাচাষী রহিম মিয়া জানালেন, এক সময় এই জমিতে ধান, ভুট্টাসহ শাকসবজি চাষ করা হতো। গবাদী পশুর বিচরণও ছিল। এখন কেউ গরু নিয়ে ওই জমিতে নামে না। এত বিশাল জমি শুধুমাত্র বিশটি খুঁটির ভয়ে কেউই নামছেন না।

ফাতেমা নামের একজন ছাত্রী জানায়, বৃষ্টির সময় খুটিঁগুলোর নিকটবর্তী গাছে আগুন ধরে যায়। তখনই আমাদের ভয় তৈরি হয়।

মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমান মিলু বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। কিন্ত তিনি একা এর সমাধান করতে পারবেন না।
 
ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা আবদুস সহিদ জানান, গত ২ বছর আগে তিনি বিএডিসির মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুৎকে ঘটনাটি জানিয়েছেন, কিন্ত কোন প্রতিকার হয়নি। তিনি জানান, কৃষকরা ওইখানে ঠিক মতো চাষাবাদ করতে পারছে না হেলানো খুঁটির ভয়ে। 

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আবু তাহের জানান, এ প্রতিবেদের মাধ্যমেই প্রথমবারের মতো তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। খোঁজ নিয়ে সমস্যাটি দ্রুত সমাধান করা হবে হবে। 
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.