ধর্ষণ ও খুনের মামলার আসামিকে নৌকার মনোনয়ন, হলেন ধরাশায়ী, হারাতে পারেন জামানত

বাংলাদেশ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
12 November, 2021, 04:50 pm
Last modified: 12 November, 2021, 09:47 pm
২০২০ সালের ৯মে শাহ মাহবুব মুর্শেদ কাঞ্চনের বাসায় মারুফা নামে এক কিশোরী গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা, নেত্রকোনা সদর ও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তখন মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।

গৃহকর্মীকে ধর্ষণ ও খুন করার মতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগ থাকার পরও নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন শাহ মাহবুব মুর্শেদ কাঞ্চন। কিন্তু ভোটাররা এ বিতর্কিত চেয়ারম্যান প্রার্থীকে রীতিমতো প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ কারণে পুরো ধরাশায়ী হতে হয়েছে তাকে। প্রতিদ্বন্দ্বী ৭ প্রার্থীর মধ্যে তিনি হয়েছেন চতুর্থ। বাজেয়াপ্ত হতে পারে তার জামানত।

জানা গেছে, সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহ মাহবুব মুর্শেদ কাঞ্চনকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়ার পরপরই দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিও ওঠে ওই সময়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার মনোনয়নই বহাল থাকে।

কাঞ্চনের কম জনপ্রিয়তার সুযোগে ওই ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে মোট ৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এরমধ্যেই ৪ হাজার ৭৪৫ ভোট পেয়ে জয়ী হন বিএনপি সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ নাসিম উদ্দিন তালুকদার। আর নৌকার প্রার্থী শাহ মাহবুব মুর্শেদ কাঞ্চন পান মাত্র ১ হাজার ৫৭৮ ভোট। ফলাফলের দিক দিয়ে তার অবস্থান চতুর্থ।

নির্বাচনবিধি অনুযায়ী, প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের অন্তত এক ভাগ না পেলে প্রার্থীকে জামানত হারাতে হয়। এ হিসেবে কাঞ্চনেরও জামানত হারানো লাগতে পারে। কারণ ইউনিয়নটিতে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১৪ হাজার ৯২৯। তবে সে ঘোষণা এখনও আসেনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েক নেতাকর্মী বলেছেন, বিতর্কিত এবং জনবিচ্ছিন্ন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার কারণেই সিংধা ইউনিয়নে দলের পরাজয় ঘটেছে। সেখানে নৌকায় মনোনয়ন দেওয়ার মতো আরও অনেক প্রার্থী ছিল। জনগণ এ সিদ্ধান্ত রীতিমতো প্রত্যাখান করেছেন। এ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চতুর্থ হওয়া মানে, শোচনীয় পরাজয়।

২০২০ সালের ৯মে শাহ মাহবুব মুর্শেদ কাঞ্চনের বাসায় মারুফা নামে এক কিশোরী গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ঘটনাটি তখন ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। মারুফাকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করেন তার মা আকলিমা বেগম। মামলার প্রেক্ষিতে কাঞ্চন গ্রেফতারও হন। কিছুদিন পর আদালত থেকে জামিন পান তিনি। সেসময় কাঞ্চনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মোহনগঞ্জ, বারহাট্টা, নেত্রকোনা সদর ও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তখন মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.