জেব্রা দম্পতির ঘরে এলো ‘চমক’

বাংলাদেশ

ইউএনবি
21 December, 2020, 02:55 pm
Last modified: 21 December, 2020, 03:00 pm
১৯ ডিসেম্বর জেব্রা পরিবারে নতুন এই শাবকের জন্ম হয়। সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া এই শাবকটি সারাক্ষণ দুষ্টুমিতে মাতিয়ে রাখছে পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রাণ ফিরিয়ে এনেছে জেব্রা দম্পতি সুমন-সুমনা। তাদের ঘরে সদ্য জন্ম নিয়েছে নতুন এক শাবক (পুরুষ)। ইতোমধ্যে পার্ক কর্তৃপক্ষ তার নাম দিয়েছে 'চমক'। 

১৯ ডিসেম্বর জেব্রা পরিবারে নতুন এই শাবকের জন্ম হয়। আর নতুন শাবক পেয়ে আনন্দে ভাসছে জেব্রা ও সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ। সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া এই শাবকটি সারাক্ষণ দুষ্টুমিতে মাতিয়ে রাখছে পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জেব্রার সদ্যজাত এই শাবকটির ওজন প্রায় ৩০ কেজি। শাবকটি সুস্থ রয়েছে। সে তার মা-বাবার সাথে সময় কাটাচ্ছে।

তিনি বলেন, পার্কে আরেকটি জেব্রা রয়েছে 'চম্পা'। তার ঘরে এখনো কোনো শাবক জন্ম নেয়নি। এই নিয়ে পার্কে মোট জেব্রার সংখ্যা হলো চারটি।

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় কর্মকর্তা আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াছিন নেওয়াজ বলেন, জেব্রা মূলত অশ্ব পরিবারের আফ্রিকান স্তন্যপায়ী প্রাণী। তাদের গায়ে সাদা-কালো ডোরা দাগের জন্য পরিচিত। এরা সামাজিক প্রাণী। ছোট ছোট দল বেঁধে তারা ঘুরে বেড়ায়। জেব্রা সাধারণত ৮ ফুট পর্যন্ত লম্বা ও ৩০০ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়।

তিনি আরও বলেন, 'সংরক্ষিত বেষ্টনী নির্মাণ করার ফলে জেব্রাগুলো আফ্রিকান পরিবেশ ফিরে পেয়েছে। জেব্রা খুব স্পর্শকাতর প্রাণী। পরিবেশ পছন্দ না হলে তারা বাচ্চা দেয় না। এই পার্কে জেব্রা প্রথমবারের মতো শাবকের জন্ম দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের সংবাদ।'

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সাফারি পার্কের পূর্ব-দক্ষিণ অংশে ৩৫০ একর জায়গা জুড়ে জেব্রার জন্য আলাদা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। যে কারণে তাদের চলাফেরা বা শাবক জন্ম দেয়ার মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সদ্যজাত শাবকটি তার মা-বাবার সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। খিদে পেলেই মায়ের কাছে যাচ্ছে দুগ্ধ পানের জন্য। মাও পরম মমতায় তার সদ্যজাত শাবককে বুকের দুগ্ধ পান করাচ্ছে।

সাফারি পার্ক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৮ মে যশোরের শার্শা উপজেলার সাতমাইল গরুর হাট থেকে ৯টি জেব্রা উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের পরই একটি জেব্রা মারা যায়। অন্য আটটি জেব্রা গাজীপুরের শ্রীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে নেওয়া হয়। তখন ওই পার্কে আগে থেকে ১৪টি জেব্রা ছিল।

পরে চকরিয়াস্থ ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে কোনো জেব্রা না থাকায় কর্তৃপক্ষ পাঁচটি জেব্রা এই পার্কে হস্তান্তর করে। তবে পাঁচটি জেব্রার মধ্যে একটি জেব্রা মারা যায়। পরবর্তী সময়ে আরও একটি জেব্রা অসুস্থতাজনিত কারণে মারা যায়।

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সহকারী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জেব্রাগুলো নিয়ে আসার পর ২৫০ একর জায়গার ওপর বেষ্টনী নির্মাণ করে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর ২০১৯-২০ অর্থবছরে জেব্রার জন্য চারণভূমি সৃজন করা হয়।

তিনি বলেন, 'এরা মূলত স্তন্যপায়ী প্রাণী। তাদের খাবারের জন্য বাঁশ, শাপলা, কলমিলতা, মেলনি পাতা, বিডরী পাতা, পিটালী পাতা, ঝাড়ফুল, সান ঘাস, প্যারাঘাস লাগানো হয়। জেব্রার জন্য এসব খাবারের বাইরে ভুসি, গাজর, শসা, ভুট্টা ভাঙা ও ছোলার ব্যবস্থা করা হয়।'

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.