জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা অর্পণ
সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সরাসরি হেলিকপ্টারে করে সকাল ১১টা ৪৫ এর দিকে স্মৃতিসৌধ স্থলে আসেন তিনি।
এ সময় তিন বাহিনীর একটি দল তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করে।
স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে নরেন্দ্র মোদি একটি অর্জুন গাছের চারা রোপণ করেন এবং পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন।
এরপর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন তিনি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দু'দিনের সফরে আজ শুক্রবার (২৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা এসে পৌঁছেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভ্যর্থনা জানান। ১৯ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
সকালে বিমানে ওঠার ঠিক আগমুহূর্তে মোদির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে একটি ছবি শেয়ার করে লেখা হয়, "এই সফর ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বকে আরও গভীর করবে"।
এছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় এই সফরের আগে এক টুইটে নরেন্দ্র মোদি লেখেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ভারত সব সময় সমর্থন দিয়ে যাবে।
তিনি লেখেন, "আমাদের প্রতিবেশী নীতির গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হলো; বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক। এই সম্পর্ক আমরা আরও গভীর ও বৈচিত্রপূর্ণ করতে চাই। লক্ষ্যটি অর্জনে আমরা শেখ হাসিনার অনন্য নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়নের এই যাত্রায় সমর্থন দিয়ে যাব"।
কোভিড-১৯ মহামারির পর এই প্রথম বিদেশ সফরে বাংলাদেশ আসতে পেরে আনন্দ ও উদ্দীপনা প্রকাশ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
"মহামারির পর প্রথম বিদেশ সফরে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশে যাওয়া নিয়ে আমি আনন্দিত। দুই দেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক, ভাষাগত এবং জনগণ পর্যায়ের সম্পর্কের দৃঢ় বন্ধন রয়েছে।"
আজ বিকালে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত অনুষ্ঠানে 'গেস্ট অব অনার' হিসাবে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেবেন। সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথভাবে তিনি 'বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনী' পরিদর্শন করবেন।
সফরের দ্বিতীয় দিন, শনিবার (২৭ মার্চ) সকালে তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ পরিদর্শন করে শ্রদ্ধা জানাবেন। তাছাড়া, সাতক্ষীরা এবং গোপালগঞ্জে দুটি মন্দির পরিদর্শন করে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত পরিসরে মতবিনিময়ের কথা রয়েছে নরেন্দ্র মোদির। ওইদিন বিকেলে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একান্ত বৈঠক ছাড়াও প্রতিনিধি পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় আলোচিত হবে।
দুই প্রধানমন্ত্রী একইসঙ্গে নিজ নিজ দেশের পক্ষে বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে পৃথক দুটি স্মারক ডাকটিকিট উন্মোচন করবেন। এ ছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সফরশেষে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামীকাল রাতে দিল্লির উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদির সফরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পাঁচটিরও অধিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।