চট্টগ্রামে মিলাদুন্নবীর মিছিলে জেনারেটর বিস্ফোরণ, শিশুসহ ৬ জন দগ্ধ

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
10 November, 2019, 05:55 pm
Last modified: 10 November, 2019, 07:49 pm
দগ্ধদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে

চট্টগ্রামের লালখানবাজার এলাকায় ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত জশনে জুলুসে একটি পিকআপ ভ্যানে থাকা জেনারেটর বিস্ফোরণে ৬ জন দগ্ধ হয়েছেন। 

রোববার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- নুর নবী (৬), মো. কাউছার (২০), রফিকুল ইসলাম (১৩), রিফাত (১০), ইয়ামিন (৯), হৃদয় (১৬)। তারা নগরের বাকলিয়া এলাকার বাসিন্দা। ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত জশনে জুলুসে তারা যোগ দিতে এসেছেন। 

দগ্ধদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক হামিদুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, লালখানবাজারে একটি পিকআপ ভ্যানে থানা জেনারেটর বিস্ফোরণে ৬ জন দগ্ধ হয়েছে। দুপুর দুইটার দিকে দগ্ধদের হাসপাতালে আনা হয়। তাদেরকে হাসপাতালের ৩৬ নম্বর বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

দুর্ঘটনায় আহত শিশুটিকে নেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ছবি: মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন/ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সহকারী রেজিস্ট্রার নাফিজ আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, আহতদের মধ্যে রিফাতের ৪০ শতাংশ, রফিকুল ইসলামের ১৫ শতাংশ ও হৃদয়ের ১১ শতাংশ শরীর পুড়েছে। এ ছাড়া বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।

বাসায় না জানিয়ে মিছিলে যোগ দিয়েছে তারা

দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দগ্ধদের কারও পা, কারও হাত ব্যান্ডেজে মোড়ানো। যন্ত্রণায় তারা ছটফট করছিল। কিন্তু কেউই কথা বলতে পারছে না। স্বজনরা পাশে বসে বিলাপ করছিলেন।

দগ্ধ রিফাত হোসেন চর চাক্তাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। সে বাসায় না জানিয়ে মিছিলে যোগ দিয়েছে। তার শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া চিকিৎসকরা রিফাতের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন।

দুর্ঘটনায় আহত শিশুটিকে নেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ছবি: মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন/ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

রিফাতের বাবা সালাহউদ্দিন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “সে কোথায় গেছে আমরা জানতাম না। পরে খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে দেখি তার শরীরে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। আমার ছেলের শরীর পুড়ে গেছে।”

আরেক দগ্ধ রফিকুল ইসলাম কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। তার পরিবার নগরের কালামিয়া বাজার এলাকার বসবাস করে। সে স্থানীয় ইউসেপ বিদ্যালয় থেকে এবার জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। সোমবার ও মঙ্গলবার তার পরীক্ষা আছে। কিন্তু বাসায় না জানিয়ে সেও বন্ধুদের সঙ্গে মিছিলে যোগ দেয়।

আহত শিশুটিকে নেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ছবি: মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন/ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

রফিকের বাবা জাহাঙ্গীর আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “কাল তার পরীক্ষা। এজন্য পড়তে বলা হয়েছে। সে সবার অগোচরে জুলুসে চলে আসে। জানার পর ভাবছি জুলুস শেষে বাসায় ফিরবে। কিন্তু দুর্ঘটনার কথা শুনে হাসপাতালে পৌঁছে দেখলাম তার শরীর পুড়ে গেছে। এখন ছেলেটা পরীক্ষা দিতে পারবে কিনা সেই চিন্তায় আাছি।”

দুর্ঘটনায় আহত শিশুটিকে নেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ছবি: মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন/ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

উল্লেখ্য, প্রতিবছর আঞ্জুমান-ই-রাহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের উদ্যোগ এ জশনে জুলুস আয়োজন করা হয়। সেখানে ট্রাক-মিনি ট্রাক যোগে লাখ লাখ মানুষ যোগ দেন। এসব গাড়িতে সাউন্ড সিস্টেমের জন্য জেনারেটর ব্যবহার করা হয়।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.