করোনার মধ্যেও চলছে মেট্রোরেলের কাজ
উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত দেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষের মতে, এ পর্যন্ত ৭২ দশমিক ১২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বৈশ্বিত মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যেও স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে চলছে নির্মাণ কাজ।
ঢাকা মাস ট্রান্সজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক বলেন, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের সার্বিক কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭২ দশমিক ১২ শতাংশ। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণের অগ্রগতি হয়েছে ৩৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রো রেলপথের মোট ২০ দশমিক ১ কিলোমিটারের মধ্যে ১০ দশমিক ২৬-এরও বেশি এখন দৃশ্যমান। কারণ সরকার ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে দেশের প্রথম মেট্রো উদ্বোধনের পরিকল্পনা নিয়েছে।
ডিএমটিসিএল-এর অগ্রগতি প্রতিবেদন অনুসারে, আগারগাঁও থেকে উত্তারার মধ্যে মেট্রোরেলের মূল ডেকের ৯৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বৈদ্যুতিক ও যান্ত্রিক সিস্টেম এবং রোলিং স্টক (রেল কোচ) এবং ডিপো সরঞ্জাম সহ সমন্বিত অগ্রগতি ২৯ দশমিক ৮০ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রী মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত এমআরটি লাইন-৬ বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়েছেন। ফলে বর্ধিত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটারের সামাজিক জরিপ চলছে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, 'যাত্রীবাহী প্রথম ট্রেনটির সেট শিপমেন্টের জন্য প্রস্তুত হওয়ায়, আমরা দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ সেট যাত্রীবাহী ট্রেনগুলো প্রস্তুত করার জন্য জাপানি মেট্রো ট্রেন সংস্থাকে অর্ডার দিয়েছি।'
তিনি বলেন, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ডিএমটিসিএল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন নির্ধারিত স্বাস্থ্য নির্দেশনা অনুসরণ করে নির্মাণ কাজ চলছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মেট্টোরেল উত্তরা থেকে মতিঝিলে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহনের ক্ষমতা রাখবে। ট্র্যাক্টগুলোর পাশাপাশি সাউন্ড প্রুফিং ওয়াল থাকবে।
ঢাকা শহরের যানজটের একটি বাস্তবসম্মত সমাধান আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার মেগা প্রকল্পটি শুরু করে।
প্রকল্পটি আটটি নির্মাণ প্যাকেজে বিভক্ত করা হয়েছে, যার জন্য ২১৯ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে জাপানের সহায়তা সংস্থা জাইকা ১৬৫ বিলিয়ন টাকা সরবরাহ করবে।
মেট্রোরেলের ১৬ টি স্টেশন থাকবে – উত্তরা উত্তর, মধ্য উত্তরা, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর -১১, মিরপুর -১০, কাজিপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয় ও মতিঝিল।
মেট্রোরেলটি উত্তরা থেকে মতিঝিলে যেতে ৩৫ মিনিট সময় নেবে। স্টেশনটি তিন তলা বিল্ডিংয়ের মতো উঁচুতে থাকবে এবং এসকেলেটর এবং লিফট ব্যবহার করা হবে। টিকিট কাউন্টার এবং অন্যান্য সুবিধা দ্বিতীয় তলায় পাওয়া যাবে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রুটে ১২টি ট্রেন চলাচল করবে।
ডিএমটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে বিদেশি এবং স্থানীয় বিশেষজ্ঞদেরকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে নেওয়ার ফলে কোভিড-১৯ মহামারিটি মেট্রোরেল প্রকল্পকে খুব বেশি প্রভাবিত করতে পারেনি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এর আগে বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্পটি মোট আটটি প্যাকেজে সম্পন্ন হচ্ছে। রাজধানী ঢাকায় দেশের প্রথম এলিভেটেড মেট্রোরেল সিস্টেম, এটি ২০২১ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যে পুরোদমে কাজ করছে এমআরটি লাইন-৬ ।
প্রকল্পের বিবরণ অনুসারে, পঞ্চম প্যাকেজের আওতায় আগারগাঁও থেকে কারওয়ানবাজার পর্যন্ত ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট এবং তিনটি মেট্রো স্টেশন নির্মিত হচ্ছে এবং কারওয়ানবাজার থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ৪ দশমিক ৯ কিলোমিটার মেট্রো রেল ষষ্ঠ প্যাকেজের আওতায় নির্মিত হচ্ছে।