করোনাভাইরাস: ফের বেড়েছে মৃত্যু, সংক্রমণ হার দেড় বছরে সর্বনিম্ন
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে আরও ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাণঘাতি এই ভাইরাসের কারণে জুলাই-আগস্ট দুইমাস টানা শতাধিক মৃত্যু হলেও সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকে তা কমেছে। একই সময়ে সংক্রমণ কমে ৫ শতাংশের নিচে আসায় এ পরিস্থিতিকে 'স্বল্প ঝুঁকিপূর্ণ' বলছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআর।
প্রখ্যাত ভাইরোলজিস্ট ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেছেন, পরপর দুই সপ্তাহ করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে করোনা পরিস্থিতি 'নিয়ন্ত্রণে' আছে বলে বিবেচনা করা যায়। তবে এই সময়েও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে সবাইকে।
গত ৩ সপ্তাহ থেকেই সংক্রমণ হার ৫ শতাংশের নিচে রয়েছে।
গত এক বছরেরও বেশি সময়জুড়ে মারাত্মক সংক্রামক এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ২৭ হাজার ছাড়িয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে ২৭ হাজার ৭৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে কোভিডজনিত কারণে।
গত এক বছরে দেশে যতো মানুষ করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ১ দশমিক ৭৭ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে এই রোগে।
মারাত্মক সংক্রামক এই ভাইরাসটি গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে দেশের আরও ৩১৪ জনের দেহে। এর আগে গত ২৮ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছিল।
মহামারি শুরুর পর থেকে সব মিলিয়ে এই শনাক্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ৪৮৮ জনে। গত বছর থেকে দুইটি আলাদা ওয়েভে দেশে করোনার উচ্চ সংক্রমণ দেখা গেলেও চলতি বছরের জুনের প্রথমার্ধ থেকেই করোনা শনাক্তের পরিমাণ ব্যাপকহারে বাড়তে শুরু করে। তবে বর্তমানে শনাক্তের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে।
বিগত কয়েক সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য হারে কমতে কমতে বর্তমানে করোনার সংক্রমণ ৩ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজার ৯৭টি কোভিড পরীক্ষার বিপরীতে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে শতকরা ১ দশমিক ৭৪ জনের মধ্যে। সংক্রমণের এই হার গত ৫৬১ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে কয়েক দফায় করোনার সংক্রমণ করলেও এতোটা কমেনি। সর্বশেষ ২০২০ সালের ৩১ মার্চ ১ হাজার ৬০২ জনের পরীক্ষার পর ৯ জনের করোনা ধরা পড়েছিল; সেদিন সংক্রমণ হার ছিল ২ দশমিক ০৭ শতাংশ।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআর এর মতে, কোনো এলাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হার ১০ শতাংশের বেশি হলে সেটিকে 'উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ', ৫-১০ শতাংশের মধ্যে হলে 'মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ' এবং ৫ শতাংশের নিচে হলে 'স্বল্প ঝুঁকিপূর্ণ' হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
রোববার (১৭ অক্টোবর) সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে করোনাভাইরাস বিষয়ে পাঠানো নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।