ওসমানী হাসপাতালে জোড়া লাগানো কন্যা শিশুর জন্ম

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
01 February, 2020, 06:35 pm
Last modified: 01 February, 2020, 06:50 pm
মেয়ে দুটি এখন সুস্থ আছে। লিভার ছাড়া তাদের বাকি সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আলাদা ও কার্যকর আছে।

সিলেটে জোড়া লাগানো দুই মেয়ের জন্ম দিয়েছেন এক দরিদ্র কৃষক দম্পতি। জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর গ্রামের হাফেজ মামুনুর রশিদের স্ত্রী ফাতেমা বেগম গত ২৫ জানুয়ারি ওসমানী হাসপাতালে দুই কন্যাশিশুর জন্ম নেন। দুই শিশুর পেট জোড়া লাগানো। দু'জনের লিভার একটি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে দুই মেয়েই সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন তারা।

ওসমানী হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, গত ২৫ জানুয়ারি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ফাতেমা বেগমকে নিয়ে আসেন তার স্বামী। ওইদিন দুপুরেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ভূমিষ্ট হয় পেটের অংশ জোড়া লাগানো দুটি কন্যা শিশু।

হাসপাতালের গিয়ে দেখা যায়, ওসমানী হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বিশেষ ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে শিশু দুটিকে। দুই শিশুর শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা ওঠানামা করছে। বাকি সবকিছু ঠিকঠাক আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। শিশুদের মা ফাতেমা বেগমও শুয়ে আছেন পাশের সিটে। নিজে সুস্থ আছেন এবং এবার তিনি প্রথম সন্তান প্রসব করেছেন বলে জানান ফাতেমা।

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. নুরুল আলম বলেন, মেয়ে দুটি এখন সুস্থ আছে। লিভার ছাড়া তাদের বাকি সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আলাদা ও কার্যকর আছে।

শিশু দুটিকে দেখতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার ইউনুস মিয়া। ছবি: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

তিনি বলেন, দেশেই শিশুদুটিকে আলাদা করে লিভার সংস্থাপনের মাধ্যমে সুস্থ ও স্বাভাবিক করে তোলা সম্ভব। ওসমানী হাসপাতালের চিকিৎসকরাই এটি করতে পারবেন তবে প্রযুক্তিগত কিছু সংকট থাকায় ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করার পরামর্শ দেন তিনি।

হাসপাতালে শিশু দুটির পাশের ছিলেন তাদের দাদা, শওকত আলী। তিনি বলেন, প্রথমে জোড়া লাগানো মেয়ে জন্ম নেওয়ায় আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তবে এখানকার চিকিৎসকরা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন ভয়ের কিছু নেই বলে। এখন পরিবারের সকলেই খুশি। দু'একদিনের মধ্যেই নাতনিদের নাম রাখা হবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমার ছেলে দরিদ্র কৃষক। তার পক্ষে ঢাকায় নিয়ে মেয়েদের অস্ত্রোপচার করানোর আর্থিক সামর্থ্য নেই। ফলে কিভাবে ঢাকায় নিয়ে যাবো এই নিয়ে চিন্তায় আছি।

ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার ইউনুস মিয়া জানিয়েছেন, এই দুটি শিশু ও তাদের মায়ের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। তাদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.