এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণ মামলার সকল আসামি গ্রেপ্তার
সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় আরও তিন আসামিকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সিলেট মহানগর হাকিম ২য় আদালতে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি, মো. রাজন ও মো. আইনুলকে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর আদলতের বিচারক সাইফুর রহমান তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিন বেলা পৌনে ১২টায় আসামিদের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে আদালত চত্বরে হাজির করে শাহপরাণ (র.) থানা পুলিশ। এ সময় বিপুল সংখ্যক উৎসাহী জনতা জড়ো হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে থাকেন।
আদালতের এপিপি খোকন কুমার দত্ত আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের তথ্য নিশ্চিত করে জানান, আগের দিনের মতো মঙ্গলবারও আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেননি।
এর আগে সোমবার এই মামলার আরও তিন আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর ও রবিউল ইসলামকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
সোমবার রাতে মামলার আরেক আসামি মাহফুজুর রহমানকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তবে মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি। এ মামলায় এজাহারভূক্ত আসামিদের মধ্যে তারেকুল ইসলাম তারেক পলাতক ছিল । আজ সন্ধ্যায় তাকে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তবে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোর্তিময় সরকার ইতোপূর্বে, তারেককে ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনার কথা জানিয়েছিলেন।
এমসি কলেজে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি :
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত ৩ সদস্যদের তদন্ত কমিটি মঙ্গলবার থেকেই কলেজ ক্যাম্পাসে এসে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে।
এদিন বিকেল ৫টায় তদন্ত কমিটির সদস্যরা কলেজ ক্যাম্পাসে এসে প্রথমে অধ্যক্ষ সালেহ আহমদের সাথে বৈঠক করেন। এরপর তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- মাউশি পরিচালক (প্রশাসন) শহিদুল কবির চৌধুরী, মাউশি সহ-পরিচালক লোকমান হোসেন, মাউশি উপ-পরিচালক নুরে আলম।
কলেজ কর্তৃপক্ষ গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যদের সাথেও তারা বৈঠক করেন।
এদিকে, ধর্ষণকান্ডের পর এমসি কলেজ কর্তৃপক্ষ গঠিত তদন্ত কমিটিও কাজ শুরু করেছে বলে জানান- এ কমিটির এবং প্রধান কলেজের গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আনোয়ারুজ্জামান।
তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করছি। আশা করছি নির্ধারিত সাত দিনের মধ্যেই প্রতিবেদন দিতে পারবো।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। রাত সাড়ে ৮টার দিকে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এ ঘটনায় তরুণীর স্বামী শনিবার শাহপরান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামিরা হলো; সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৫), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৫) ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুমকে (২৫)। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।
এ ঘটনায় এজাহারভূক্ত ছয়জনসহ এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।