ঈদের পর কারখানা দ্রুত খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে পোশাক রপ্তানিকারকদের চিঠি

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
15 July, 2021, 05:55 pm
Last modified: 15 July, 2021, 09:38 pm
চিঠিতে পোশাক রপ্তানিকারকরা বলেন, ঈদের ছুটিসহ প্রায় ১৮-২০ দিন কারখানা বন্ধ থাকলে এক অনিশ্চয়তার মাঝে লেইট সামার, ক্রিসমাস ও বড়দিন এবং আগামী শীতের কার্যাদেশসমূহ হাতছাড়া হয়ে যাবে।

সরকার ঘোষিত ঈদের ছুটি কমিয়ে রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানাগুলো যত দ্রুত সম্ভব খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি দিয়েছেন দেশের শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারকরা।

আজ (বৃহস্পতিবার) পাঠানো ওই যৌথ চিঠিতে নিজ নিজ সংগঠনের পক্ষে স্বাক্ষর করেন বিকেএমইএ সভাপতি এ.কে.এম. সেলিম ওসমান, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বিটিটিএলএমইএ সভাপতি শাহাদাত হোসেন সোহেল এবং বিজিএপিএমইএ সভাপতি আব্দুল কাদের খান।

আজ দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠকে তার হাতে এ চিঠি তুলে দেন পোশাক খাতের নেতারা।

বৈঠক শেষে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা শিল্প কারখানা খোলা রাখার দাবি জানিয়েছি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আমাদের জানিয়েছেন আগামী পরশু (শনিবার) তারা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করবেন। ওই বৈঠকের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।'

এ সময় বিকেএমইএ'র প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, 'সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করে কারখানা খোলার কোনো দাবি আমরা করিনি। শিল্পের সার্বিক অবস্থা ও শ্রমিকদের গ্রামে ফিরে যাওয়া ও ঢাকা আসার কারণে কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে তা তুলে ধরেছি মাত্র। আশা করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি তিনি তুলে ধরবেন।'

বৈঠকে বিজিএমইএ'র সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী ও সিদ্দিকুর রহমান, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বিটিটিএলএমইএ সভাপতি শাহাদাত হোসেন সোহেল এবং বিজিএপিএমইএ সভাপতি আব্দুল কাদের খান উপস্থিত ছিলেন।

চিঠিতে করোনাভাইরাস মহামারিকালে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসার পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়, 'রপ্তানি আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে বস্ত্রখাত (নিটওয়ার, ওভেন, টেরিটাওয়েল, হোম টেক্সটাইল) যাদের সম্মিলিত রপ্তানি আয় ৩২.৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪.১৭%। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১৪ দিনে এ খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ১৬১৭.৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা প্রতিদিন গড়ে ১১৯.৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। জুন ২০২০-এর (২.৩৩ বিলিয়ন) চেয়েও জুন ২০২১-এ (২.৯৯ বিলিয়িন) খাতের রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ২৮.২৫%। চলতি অর্থবছরেও এ খাতের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬.৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা মোট রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার ৮৪.২৮%, প্রবৃদ্ধি ১২.৩৯%।'

করোনাভাইরাস বাস্তবতায় ব্যবসার চিত্র তুলে ধরে চিঠিতে লেখা হয়, 'এমনিতেই সুতার মূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং কন্টেইনার ও জাহাজ সংকটে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত, আবার এ সময়ে ঈদের ছুটিসহ প্রায় ১৮-২০ দিন কারখানা বন্ধ থাকলে এক অনিশ্চয়তার মাঝে লেইট সামার, ক্রিসমাস ও বড়দিন এবং আগামী শীতের কার্যাদেশসমূহ হাতছাড়া হয়ে যাবে। কারণ এক মাসের রপ্তানি শিডিউল গড়বড় হলেই পরবর্তী ৬ মাসের রপ্তানি শিডিউলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।'

এ অবস্থায় 'আসন্ন ঈদের ছুটি সংক্ষিপ্ত করে দেশের রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানাসমূহ যত দ্রুত সম্ভব ঈদের পরে খুলে দিলে দেশের রপ্তানিখাত বহুমুখী বিপর্যয়ের আশংকা থেকে রক্ষা পাবে' বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে, গত ১৩ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপন জারি করে জানায়, আগামী ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সব ধরনের কারখানা বন্ধ থাকবে।

ঈদ উপলক্ষ্যে এক সপ্তাহের জন্য বিধিনিষেধ শিথিল করার পর সরকার ওই সময়ে আবারও কঠোর লকডাউন আরোপ করবে। এর অংশ হিসেবে বন্ধ রাখা হবে কারখানা।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.