ইশরাকের চেয়ে সম্পদ বেশি তাপসের, আতিকুলের চেয়ে আয় বেশি তাবিথের 

বাংলাদেশ

টিবিএস রিপোর্ট
02 January, 2020, 02:25 pm
Last modified: 02 January, 2020, 06:44 pm
ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলাম এবং উত্তর ও দক্ষিণে বিএনপি প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন।

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলাম এবং উত্তর ও দক্ষিণে বিএনপি প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন। বড় দুই দলের প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা গেছে ইশরাকের চেয়ে সম্পদ বেশি তাপসের। এছাড়া আতিকুলের চেয়ে তাবিথের বার্ষিক আয় বেশি।

তাপসের আয় ৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা

দক্ষিণে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সম্পদ অন্য প্রার্থীদের চেয়ে বেশি। তিনি আইন পেশায় নিয়োজিত। 

হলফনামার তথ্য অনুসারে, তার বার্ষিক আয় ৯ কোটি ৮১ লাখ ৩৮ হাজার ৪৬ টাকা। এর মধ্যে আইন পেশা থেকে আয় এক কোটি ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বাকি আয় এসেছে কৃষি, ঘর ভাড়া, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতসহ অন্যান্য খাত থেকে। 

২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী তাপসের বার্ষিক আয় ছিল ১০ কোটি ৪ লাখ ৭৮ হাজার ৬২১ টাকা। সাবেক এই এমপির হাতে নগদ আছে ২৬ কোটি ৩ লাখ ৩ হাজার ৫৫৭ টাকা। নিজের তিনটি ও স্ত্রীর একটি গাড়ি রয়েছে। সব মিলিয়ে ১০৮ কোটি ৯৩ লাখ ৭৮ হাজার ৪৪৩ টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক তিনি। 

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে বন্ড, ঋণপত্র ও শেয়ার আছে ৪৩ কোটি ২৭ লাখ ৫৫ হাজার ৪০৪ টাকার। বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানত আছে ৩৫ কোটি ২২ লাখ টাকার। স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ আছে ৯ কোটি ৮২ লাখ ৫১ হাজার ৭২৭ টাকার।

২০১৮ সালে তাপসের ১০৪ কোটি ৭১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ ছিল। এ ছাড়া নিজের নামে ১২ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে। তার স্ত্রীর নামে আছে প্রায় ১৩ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ। অতীতে তার নামে দুটি মামলা থাকলেও খারিজ হয়ে গেছে।

ইশরাকের আয় ৯১ লাখ টাকা

বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএসসি, ইঞ্জিনিয়ারিং। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা একটি মামলা বিচারাধীন।  তার বাবা প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকা ছিলেন অবিভক্ত ঢাকার মেয়র।

ইশরাকের হলফনামা অনুসারে, বিভিন্ন উৎস থেকে তার বার্ষিক আয় ৯১ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৯ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে তার বার্ষিক আয় ৪৫ লাখ ৮৫ হাজার ৪২২ টাকা বেড়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দাখিল করা হলফনামায় তার বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল ৪৫ লাখ ৭৩ হাজার ৮৭ টাকা।

সব মিলে ইশরাকের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ আছে ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৭১ হাজার ৫৯৬ টাকার। তার হাতে নগদ টাকা আছে মাত্র ৩৩ হাজার ১০৯ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে এক কোটি ৩৭ লাখ ১৮ হাজার ৬৩ টাকা। দুই কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার রয়েছে তার। 

সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানত আছে ৪২ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকার। একটি অ্যাপার্টমেন্ট, জোয়ার সাহারায় নির্মাণাধীন ভবন এবং কৃষি ও অকৃষি জমি রয়েছে খোকা পুত্রের।

আতিকুলের আয় এক কোটি ২৯ লাখ

ঢাকা উত্তরের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম বিকম পাস। ১৬টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক সাবেক এই ব্যবসায়ী নেতা। তার হাতে নগদ আছে ৮ লাখ ৭৫ হাজার ৭৫৩ টাকা।

গত এক বছরে আতিকের বার্ষিক আয় বেড়েছে ২০ লাখ টাকা। কৃষি, বাড়ি বা দোকান ভাড়া, ব্যবসার পারিতোষিক, ব্যাংক সুদ ও মৎস্য খাত থেকে তার বার্ষিক আয় ১ কোটি ২৯ লাখ ৬৮ হাজার ৭৩৫ টাকা। স্ত্রীর বার্ষিক আয় ২২ লাখ ৫২ হাজার ৩৪১ টাকা।

উত্তরের সাবেক মেয়রের সব মিলিয়ে ৪ কোটি ৮৬ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯৮ টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক। আর ৬ কোটি ৯৮ লাখ ৬৬ হাজার ২৪ টাকার স্থাবর সম্পদ আছে। তার স্ত্রীর ২ কোটি ৯৯ লাখ ১৫ হাজার ৬৫৭ টাকার অস্থাবর সম্পদ, ৩০ ভরি সোনা এবং ৮২ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ আছে।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মেয়র পদে যখন উপনির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, তখন আতিকুলের অস্থাবর সম্পদ ছিল ৪ কোটি ৯৯ লাখ ৯১ হাজার ৩০২ টাকার। স্ত্রীর নামে ছিল ২ কোটি ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার ৬৬৯ টাকা ও ৩০ ভরি সোনা। গত এক বছরে এ দম্পতির স্থাবর সম্পদ বাড়েনি বা কমেনি।

আতিকুল ইসলাম বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা পরিচালক হওয়ার সুবাদে তিনটি বেসরকারি ব্যাংকে ৫৯১ কোটি ৬ লাখ ৬২ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন। তার নামে কোনো মামলা নেই।

তাবিথের আয় চার কোটি ১২ লাখ টাকা

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর জ্যেষ্ঠ ছেলে ব্যবসায়ী তাবিথ আউয়াল বিএনপির উত্তরের প্রার্থী। তিনি ইনফরমেশন সিস্টেমস টেকনোলজির ওপর এমএসসি ডিগ্রি নিয়েছেন।

বিভিন্ন খাত থেকে তাবিথের বার্ষিক আয় ৪ কোটি ১২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৯১ টাকা। তাবিথের ৪৫ কোটি ৬০ লাখ ৮ হাজার ৩১৭ টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে। স্ত্রীর নামে আছে ৪ কোটি ৬০ লাখ ৯১ হাজার ৩৭৬ টাকার অস্থাবর সম্পদ। 

তাবিথের হাতে নগদ আছে এক কোটি ৪৮ লাখ ৫১ হাজার ৫৮ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৪১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৯৫ টাকা। বন্ড ও শেয়ার আছে ১৮ কোটি ৭৩ লাখ লাখ টাকার। বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র, স্থায়ী আমানত আছে ৮ কোটি ৯২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আছে একটি লেক্সাস জিপ।

তাবিথের স্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ৪ একর কৃষিজমি, ১৬ একর অকৃষি জমি, দুটি অ্যাপার্টমেন্ট এবং ১৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি খামার। আয় ও সম্পদের মতো তাবিথের ঋণও বেড়েছে।

নিজের ঋণ আছে ২ কোটি ৮৮ লাখ টাকার। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালক হওয়ার সুবাদে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার ঋণ আছে ৩০২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। তার নামে কোনো মামলা নেই।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.