আগে জীবন, পরে জীবিকা: প্রধান বিচারপতি
জীবন ও জীবিকা দুই-ই গুরুত্বপূর্ণ। তবে করোনা মহামারীর এই দুঃসময়ে সবার আগে জীবন, তা আবার স্মরণ করিয়ে দিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
রবিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে চলা ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল আরো বেশি ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ চালুর আহবান জানালে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।
আদালতে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রধান বিচারপতিকে বলেন, 'মাই লর্ড, বর্তমানে ৪টি ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ পরিচালিত হচ্ছে। তার মধ্যে আজ আছে কেবল দুটি বেঞ্চ। রমজান চলছে, সামনে ঈদ। এই অবস্থায় আরো কিছু ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বাড়ালে আইনজীবীরা উপকৃত হতো। আপিল বিভাগ ও চেম্বার আদালত মিলে সপ্তাহে ৫ দিনই সর্বোচ্চ আদালত চলছে। তাই আরো কয়েকটি হাইকোর্ট বেঞ্চ চালু করা যেতে পারে। আর গত এক বছরে আইনজীবীরা ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার সাথে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন। তাই প্রয়োজনে আর ১০টি ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ চালু করলে আইনজীবীরা উপকৃত হতো। আমি আইনজীবী সমিতির সম্পাদক, তাই প্রতিনিয়ত আইনজীবীরা কোর্ট বাড়ানের বিষয়ে আমাকেই বলে। এজন্যই বারবার আপনাদের সামনে একথা বলা।'
একপর্যায়ে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, 'শুনেন, আমরাও বারের (আইনজীবী সমিতি) থেকে এসেছি। আমরাও আইনজীবীদের সমস্যাগুলো বুঝি। জীবন ও জীবিকা দুটিই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এক্ষেত্রে আগে জীবন, পরে জীবিকা।'
প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় এখন মাত্র মাত্র ৪০ জন স্টাফ নিয়ে আপিল বিভাগ চলছে। হাইকোর্টের ৪ টি ভার্চুয়াল বেঞ্চ অনেক স্টাফ লাগছে। এই অবস্থায় আবার ১০ টা হাইকোর্ট বেঞ্চ চালাতে গেলে হাজার স্টাফ লাগবে। তখন তাদের সংক্রমণ ঝুঁকি তৈরি হবে। আমরা সব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সেসময় আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, 'মিস্টার রুহুল কুদ্দুস, আপনি আইনজীবী সমিতির সম্পাদক। তাই আপনি আইনজীবীদের কথা ভেবে একথা বলছেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতিসহ আমাদেরকে তো পুরো সুপ্রিম কোর্টের কথা ভাবতে হয়। এমনকি দেশের কথাও ভাবতে হয়। সেসব ভেবেই প্রধান বিচারপতি সিদ্ধান্ত দেন।'
সবশেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া বার্তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধান বিচারপতি আদালতে যুক্ত সবার উদ্দেশে বলেন 'স্টে হোম, স্টে সেফ।'