জাস্টিন বিবার যে ভাইরাসে আক্রান্ত, সেই র‍্যামজি হান্ট সিনড্রোম আসলে কী? 

ফিচার

টিবিএস ডেস্ক
13 June, 2022, 03:20 pm
Last modified: 13 June, 2022, 09:26 pm
বাল্যকালে চিকেনপক্স বা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে দাদে আক্রান্ত হলে, ভেরিসেলা-জোস্টার নামক এই ভাইরাসটি দেহে সুপ্ত অবস্থায় থেকে যেতে পারে। তবে কেন এই ভাইরাসটি পুনরায় সক্রিয় হয় এবং র‍্যামজি হান্টের উপসর্গ তৈরি করে, তা এখনো জানা যায়নি।
পপ সংগীতশিল্পী জাস্টিন বিবার। ছবি: সংগৃহীত

'র‍্যামজি হান্ট সিনড্রোম' নামক একটি ভাইরাল রোগে আক্রান্ত হয়ে মুখের একাংশ প্যারালাইজড হয়ে গেছে পপ সঙ্গীতশিল্পী জাস্টিন বিবারের। ভেরিসেলা-জোস্টার নামক যে ভাইরাসের কারণে  মানুষ চিকেনপক্স এবং দাদে আক্রান্ত হয়, সেই একই ভাইরাসের কারণে র‍্যামজি হান্ট সিনড্রোম দেখা দেয়।  

গেল শুক্রবার এক ইউটিউব ভিডিওতে ভক্তদেরকে নিজের অসুস্থতার কথা জানান জাস্টিন বিবার।  ভিডিওতে তিনি বলেন, "কান ও মুখের স্নায়ুতে সংক্রমণের ফলে আমার মুখের এক পাশ (ডান পাশ) প্যারালাইজড হয়ে গেছে। আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে আমি চোখের পলক ফেলতে পারছি না। আমি আমার মুখে এই পাশ দিয়ে হাসতেও পারছি না, আর এপাশের নাসারন্ধ্রও কাজ করছে না।"

ভেরিসেলা-জোস্টার ভাইরাস যখন কানের অভ্যন্তরভাগের কাছাকাছি মস্তিষ্কের একটি স্নায়ুকে সংক্রামিত করে তখন র‍্যামজি হান্ট সিনড্রোম নামক এই বিরল স্নায়বিক ব্যাধি দ্বারা মানুষ আক্রান্ত হয়। বাল্যকালে চিকেনপক্স বা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে দাদে আক্রান্ত হলে, এই ভাইরাসটি দেহে সুপ্ত অবস্থায় থেকে যেতে পারে। তবে কেন এই ভাইরাসটি পুনরায় সক্রিয় হয় এবং র‍্যামজি হান্টের উপসর্গ তৈরি করে, তা এখনো জানা যায়নি।

মাউন্ট সিনাইয়ের আইকান স্কুল অব মেডিসিন বলছে, এ রোগের উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে কানের ভেতরে ও বাইরে ব্যথাসহ ফুসকুড়ি, কখনো কখনো জিহ্বা ও মুখের তালুতে আক্রমণ। কানের অভ্যন্তরভাগ যুক্ত থাকায়, এ রোগে আক্রান্ত মানুষ কখনো কখনো 'ভার্টিগো' অবস্থার শিকার হতে পারে। আবার কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ বা কিছু একটা বাজছে কানের ভেতর, এরকম অনুভূতিও হতে পারে।

তাছাড়া র‍্যামজি হান্ট সিনড্রোমের কারণে মুখের যে পাশ আক্রান্ত হয়, সেই পাশের কানের শ্রবণশক্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আবার বিবারের মতো শারীরিক দুর্বলতা, মুখের পেশি ঠিকঠাক কাজ না করা কিংবা মুখের আক্রান্ত পাশ প্যারালাইজড হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।

শারীরিক দুর্বলতার কারণে এক চোখ বন্ধ করা, মুখের অভিব্যক্তি প্রকাশে সমস্যা এবং খাওয়ার সময় মুখের আক্রান্ত পাশ দিয়ে খাবার গড়িয়ে পড়ে যেতে পারে।

র‍্যামজি হান্ট সিনড্রোমের চিকিৎসা হিসেবে প্রদাহ কমাতে প্রিডনিসোনের মতো স্টেরয়েড এবং ব্যথা কমানোর ওষুধ দেওয়া হয়। যদিও বিবার তার ভক্তদের নিশ্চিত করেছেন যে তিনি 'সুস্থ হয়ে যাবেন' এবং তিনি চেহারাকে আগের অবস্থায় নিয়ে আসতে মুখের ব্যায়াম করছেন।

ভিডিওতে বিবার বলেন, "আমার মুখ আবারও আগের অবস্থায় ফিরে যাবে… এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। আমি জানিনা কতদিন সময় লাগবে, কিন্তু আমি ঠিক হয়ে যাবো। আমার শরীর বলছে আমাকে বিশ্রাম নিতে হবে। আমি আশা করি, সবাই বুঝতে পারছেন আমার পরিস্থিতিটা। এখন আমি এই সময়টা শুধু বিশ্রাম নিতে কাজে লাগাবো এবং শতভাগ আগের অবস্থায় ফিরে আসবো।"

তবে মাউন্ট সিনাইয়ের আইকান স্কুল অব মেডিসিন মনে করে, এ রোগ থেকে পুরোপুরি সুস্থ হবেই, তার নিশ্চয়তা নেই। কেউ কেউ কয়েক মাসেই সুস্থ হয়ে যান, আবার কেউ কেউ হন না। তবে যত দ্রুত রোগ ধরা পরবে, সেরে ওঠার সম্ভাবনা তত বেশি থাকবে।  

সূত্র: সিএনএন 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.