কর্পোরেটদের শখ: শিল্প-সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ততা এক ভিন্ন মানুষে পরিণত করেছে রাজীব সামদানিকে

ফিচার

সব্যসাচী কর্মকার
12 February, 2022, 03:50 pm
Last modified: 12 February, 2022, 03:52 pm
"আমার জগতটা এখন দুই ভাগে বিভক্ত: আমার প্যাশন এবং আমার কাজ। দুটি মিলিয়েই ভারসাম্যতা বজায় থাকে। যখন আমি কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসি তখন নিজেকে প্রাণশক্তিতে ভরপুর অনুভব হয়", বলেন রাজীব সামদানি।

কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদে থাকা মানেই মাথার উপরে গুরুদায়িত্ব ও কর্তব্যের চাপ। উচ্চপদে আসীন কর্পোরেট কার্যনির্বাহীরা যে সবসময়ই ব্যস্ত থাকেন, সেকথা আমাদের সবারই জানা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাদের ব্যক্তিগত জীবন বলে কিছু নেই এবং তাদের কোনো শখ বা ইচ্ছা নেই!

কর্মজীবনের বাইরেও যদি কোনো দারুণ শখ থাকে, তা আমাদের মধ্যে আরও দক্ষতা এবং প্যাশন তৈরি করে। বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের কার্যনির্বাহীদের মধ্যে যাদের বিশেষ কোনো শখ থাকে, তারা অন্যদের চাইতে বেশি হাসিখুশি থাকেন এবং কাজের ব্যস্ততাকে তখন আর চাপ মনে হয়না। শুধু তাই নয়, শখ পূরণের মাধ্যমে যে দক্ষতা অর্জন করা যায় তা পেশাদারি জীবনেও কাজে লাগে।    

গোল্ডেন হার্ভেস্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কর্পোরেট লীডার রাজীব সামদানির কাছে জানতে চেয়েছিলাম তার শখ বা অবসর কাটানোর উপায় সম্পর্কে। তিনি আমাদের জানিয়েছেন কর্মক্ষেত্রের বাইরে বিভিন্ন বিষয়ে নিজের আগ্রহের কথা; জানিয়েছেন কিভাবে এসব শখ তাকে আরও কার্যক্ষম করে তুলছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, তার মতে, এসব শখ তাকে সিনিয়র পদে দায়িত্ব পালনের চাপ থেকে প্রশান্তি দেয় এবং কর্মজীবনে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। রাজীব সামদানির নিজের ভাষায়ই জানা যাক তার শখের দুনিয়ার কথা। 

রাজীব সামদানি 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক, গোল্ডেন হার্ভেস্ট গ্রুপ 

কাজের বাইরে আমার সবচেয়ে বড় শখ হলো শিল্পকর্ম সংগ্রহ করা। সামদানি আর্ট ফাউন্ডেশন মূলত আমার একটা প্যাশনের জায়গা থেকে বানানো। আমরা এখনো পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি মডার্ন এবং কনটেম্পোরারি শিল্পকর্ম সংগ্রহ করেছি।

শিল্প-সংস্কৃতির সাথে এই সম্পৃক্ততা আমাকে আগের চাইতে এক ভিন্ন মানুষে পরিণত করেছে। সৃজনশীল মানুষদের সাথে মেলামেশা ও কাজ করাও একটা ইতিবাচক দিক। এটা আমাকে একটা অন্যরকম আনন্দ দেয়, প্রতিদিনই আমি এখান থেকে নতুন নতুন জিনিস শিখি।
আমার প্যাশনই আমাকে কাজের চাপ দূরে রেখে মুক্ত নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ করে দেয়। আমার স্ত্রীরও আমার মতো একই শখ। 

আমাদের জন্য এটা একটা শখের চাইতেও বেশি কিছু। আপনারা হয়তো ঢাকা আর্ট সামিটের কথা শুনেছেন। আমরা বাংলাদেশি শিল্প এবং শিল্পীদের কথা প্রচার করি। এটা একটা অন্যরকম অর্জন। আমাদের ইভেন্টের মাধ্যমে আমরা বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশকে তুলে ধরছি।
ঢাকা আর্ট সামিটের মূল উদ্দেশ্য ছিল নিজস্ব সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে প্রচার করা। এটা আমাদের জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা!

সারা বিশ্বের মানুষ এখন বাংলাদেশি শিল্প সম্পর্কে জানে। আন্তর্জাতিক জাদুঘরগুলোও এখন বাংলাদেশি শিল্পকর্ম সম্পর্কে জানতে পারছে।

এছাড়াও, আমাদের প্রতিভাবান শিল্পীরা এখন কদর পাচ্ছে। এটা আমাকে ব্যক্তিগতভাবে ভীষণ আনন্দ দেয় যে আমার সামান্য অবদানের কারণে পরিবর্তন আসছে।

শিল্পকর্ম সংগ্রহ ও আর্ট সামিটের সাথে যুক্ত থাকার কারণে আমার নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচয় হয় এবং তাদের কাছ থেকে অনেক মজার বিষয় জানতে পারি।

আমার জগতটা এখন দুই ভাগে বিভক্ত: আমার প্যাশন এবং আমার কাজ। দুটি মিলিয়েই ভারসাম্যতা বজায় থাকে। যখন আমি কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসি তখন নিজেকে প্রাণশক্তিতে ভরপুর অনুভব হয়।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.