ঈদের সিনেমা: শাবানা-ববিতা-রাজ্জাক, সালমান-শাবনূরময় সেই দিনগুলো!
মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ঈদ উল ফিতর। বহুকাল ধরে গোটা ভারতবর্ষ জুড়েই উৎসবটি গুরুত্ব বহন করে চলেছে। এ উৎসবে নতুন পোশাক পরার চল আছে, আছে আত্মীয় স্বজনদের উপহার দেওয়া, আনুষ্ঠানিক ভোজ, প্রতিবেশীর সঙ্গে বিবাদ মেটানো, গরীব-দুঃখীদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করার রীতিসহ আরো অনেক কিছু। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এমন উৎসবে চাঁদ দেখা কমিটিও গঠিত হয়। পত্র-পত্রিকাগুলো বিশেষ ঈদ সংখ্যা প্রকাশ করে। ১৯০২ সালে প্রথম ঈদ সংখ্যা প্রকাশ হওয়ার নজির খুঁজে পেয়েছেন অনুপম হায়াৎ। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখে মাসিক মোহাম্মদী (প্রথম প্রকাশ ১৯০৩ সাল), সওগাত (১৯১৮ সালে প্রথম প্রকাশ) এবং অন্য পত্র-পত্রিকা।
১৯৩৪ সাল থেকে রেডিওতে ঈদ উপলক্ষ্যে নাটিকা প্রকাশ হতে থাকে। ১৯৩১ সালে নজরুল লেখেন 'ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে'। সেটি যখন আব্বাসউদ্দিনের কণ্ঠে রেকর্ড হয়ে প্রকাশিত হয় এবং লাখো কপি বিক্রির রেকর্ড হয়, তখন ধরতেই হয় যে উৎসবটি মানুষের আবেগের অনেক গভীরকে ছুঁয়ে গেছে। তখনো চলচ্চিত্র নতুন মাধ্যম। ১৯৩১ সালে ভারতে প্রথম সবাক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু নতুন এই মাধ্যম এত দ্রুত মানুষের মন-প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল যে মানুষ ছায়াছবির জন্য ঘর-বাড়ি ছাড়তেও রাজি হয়ে যাচ্ছিল।
ঈদের সময় সিনেমা মুক্তি দেওয়ার সংস্কৃতি চালু হয়েছিল দেশ ভাগেরও আগে থেকেই। উৎসবের সময় বলে ঈদে সিনেমা মুক্তি দিলে আর্থিক দিক থেকেও লাভবান হওয়ার সুযোগ ছিল। দেশভাগের পর পর এ সংস্কৃতি আরো ব্যপকতা লাভ করে। পূর্ব পাকিস্তান মানে বাংলাদেশে তখন প্রায় একশ প্রেক্ষাগৃহ ছিল। অবশ্য চলচ্চিত্র উন্নয়ন কেন্দ্র গড়ে উঠেছিল আরো প্রায় ১০ বছর পর (১৯৫৭ সাল) আর প্রথম সবাক চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছিল তার ঠিক আগের বছর ১৯৫৬ সালে।
দেশভাগের পর পর উর্দু ছবি আনা হতো করাচি আর লাহোর থেকে, চেষ্টা করা হচ্ছিল উর্দুভিত্তিক জাতীয়তাবাদ প্রচলনের। কিন্তু ভিতরে ভিতরে উর্দু বনাম বাংলা কিংবা বাঙালি বনাম পাকিস্তানী দ্বন্দ্বের স্রোত বেগবান হচ্ছিল চলচ্চিত্রেও। জহির রায়হানের 'সংগম' সিনেমার বিভিন্ন ঘটনায়ও এর প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়।
হঠাৎ ৭ নং রিল ফ্যাকাশে দেখাল
সংগম দুই পাকিস্তানেরই প্রথম রঙিন সিনেমা। ব্যাপারটি সহজ ছিল না মোটেই। তখন চলছিল প্রযুক্তিকে বাগে আনার লড়াই।
১৯৬৪ সাল মানে যখন সংগম মুক্তি পেয়েছিল ততদিনে গোটা পাকিস্তানে লাহোর আর করাচির সঙ্গে ঢাকাও একটি চলচ্চিত্র কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ওই তিনটির মধ্যে তুলনামূলক নবীন হওয়া সত্ত্বেও ঢাকা ছিল রঙিন চলচ্চিত্র নির্মাণে অগ্রগামী। পরিচালক জহির রায়হানের সঙ্গে এর কৃতিত্ব দিতে হয় চিত্রগ্রাহক আফজাল চৌধুরী এবং রসায়নাগার কুশলী খালেদ সালাউদ্দিন আহমেদকে। তাদের মিলিত প্রচেষ্টায় পশ্চিম পাকিস্তানের প্রথম আংশিক রঙিন সিনেমা ঈদ মোবারক (১৯৬৫) মুক্তির এক বছর আগেই ঢাকায় মুক্তি পেয়েছিল সম্পূর্ণ রঙিন সিনেমা সংগম।
খালেদ সালাউদ্দিনের স্মৃতিকথায় পাওয়া যাচ্ছে (মীর শামসুল আলম বাবু সংকলিত), জহির রায়হান এসে বললেন তিনি ঈদে সিনেমা রিলিজ করবেন। হাতে মাত্র ১০ দিন। মেশিনের একটা লিমিটেশন আছে। তারপর ১০ দিন ১০ রাত একনাগাড়ে কাজ করে প্রিন্ট দেওয়ার পরিকল্পনা করলাম। তখন বাঙালিরা যেন কোনোকিছুতেই সফল না হয়, সবকিছুতে তাদের হারিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকত এফডিসির অবাঙালি কর্মচারী-কর্মকর্তারা।
সংগমের ৭ নং রিলের ক্ষেত্রে হঠাৎ দেখা গেল প্রিন্ট ফ্যাকাশে আসছে। একই ঘটনা পর পর দুইবার ঘটার পর কেমিক্যাল বাথের ট্রে খুলে হতবাক হয়ে গেলাম। ভাবলাম, মানুষ এতো পাষণ্ড হয়! শেষে টেকনিশিয়ান বিদায় করে নিজেই কেমিক্যাল বাথ তৈরি করলাম। অবশেষে দিন-রাত খাটুনির পর কোরবানীর ঈদের দিন (২০ মার্চ, ১৯৬৪) দুই পাকিস্তানেই মুক্তি পায় সংগম আর ব্যাপক ব্যবসা সফলও হয়।
আন্দোলন সংগ্রামের দিনেও থেমে ছিল না সিনেমা মুক্তি
ষাটের দশকের শেষটায় বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রাম ছিল তুঙ্গে। মুক্তিকামী বাঙালি রাজপথ দখলে বিরতি নেয়নি সেই সময়। তবে ঈদ এলে যেন একটু হাঁফ ছাড়তে চেয়েছে।
চিত্রালী, সিনেমা ইত্যাদি পত্রিকায় 'মহাসমারোহে ঈদে আসছে' বলে কয়েকটি সিনেমার নাম প্রচারিত হয়। সঙ্গে সেসব সিনেমার নায়ক-নায়িকার ছবি আর তাদের সাক্ষাৎকার। ১৯৬৮ সালের ঈদের তেমনি একটি সিনেমা যেমন দুই ভাই।
অনুপম হায়াৎ বলছিলেন, "আশির দশকের আগ পর্যন্ত বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম ছিল চলচ্চিত্রই। মানুষজন দুই তিনদিনের খাবার সঙ্গে করে গরুর গাড়িতে করে গ্রাম থেকে মফস্বল শহরের সিনেমা হল-সংলগ্ন মাঠে তাঁবু ফেলে থাকত। একই সিনেমা দুই, তিন বা চারবার দেখত আর চোখের জল ফেলতে ফেলতে বাড়ি ফিরত। মনে আছে সুতরাং (১৯৬৪) দেখতে আমি নিজেই বহু পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছেছিলাম হলে।
"তারপর আশির দশকে ভিডিও ক্যাসেট প্লেয়ার এলো, নব্বইয়ের দশকে পাওয়া গেল ডিশ অ্যান্টেনা আর তার পরের দশকে তো বিনোদন মোবাইল ফোন মারফত ঢুকে পড়ল পকেটে। প্রযুক্তির এই অতিরিক্ত সহজলভ্যতা চলচ্চিত্রকে আর মহার্ঘ্য থাকতে দিচ্ছে না। মানুষ অনেক রকম বিনোদনে যুক্ত হয়ে যেতে পারছে বলে আগের মতো মন দিয়ে কিছু দেখছেও না।
"সেকালে একটা ছবি দেখার আগে ও পরে অনেক কিছুর চর্চা হতো যেমন- রেডিওতে ছবির বিজ্ঞাপন প্রচার, ছবির গান মুখে মুখে ফিরত, ছবির সংলাপ ও সংগীতের ক্যাসেট পাওয়া যেত-সবমিলিয়ে একটা বেশ জমজমাট সংস্কৃতি। আর ঈদে এই সংস্কৃতির চর্চা বৃদ্ধি পেত কয়েক গুণ। সেমাই না খেলে বা খালার বাড়ি বেড়াতে না গেলে যেমন ঈদ ঈদ মনে হয় না, তেমন অনেকের কাছে হলে গিয়ে ছবি না দেখলে ঈদ শেষ হয় না। এখন অবশ্য এটা অতীত। হলে যাওয়ার কথা মধ্যবিত্ত আর ভাবতেও পারে না।"
ঈদের ছবি সুপারহিট
১৯৯৫ সালের ঈদুল ফিতরের সুপারহিট সিনেমা ছিল স্বপ্নের ঠিকানা। রোমান্টিক এই ছবিটি সে ঈদের ছয় নম্বর সিনেমা ছিল। সালমান শাহ ও শাবনূর ছিলেন ছবির নাম ভূমিকায়। ধনীর পুত্র সালমান গরীবের কন্যা শাবনূরের সঙ্গে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু এক দুর্ঘটনায় সালমান স্মৃতি হারিয়ে ফেলে। এরমধ্যে বিদেশ থেকে আরেক ধনীর দুলালী সোনিয়ার আগমনে পুরো কাহিনী জটিল হয়ে ওঠে। ছবিটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন শিল্পী চক্রবর্তী।
তিনি বলছিলেন, "আমার প্রায় সব ছবি ঈদেই মুক্তি পেয়েছে। যেমন মীমাংসা, তোমার জন্য পাগল ইত্যাদি। সালমান শাহের স্টাইল তখনকার হিসাবে একেবারেই নতুন কিছু। ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর মতো কেউ ছিল না। শাবনূরের সঙ্গে তাঁর কেমিস্ট্রিও ছিল ভালো। বিশেষ করে স্বপ্নের ঠিকানা করার পর এই জুটি টপে উঠে যায়। তাঁরা এরপর তাঁদের পারিশ্রমিকও বাড়িয়ে নেয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে বেদের মেয়ে জ্যোৎস্নার পর স্বপ্নের ঠিকানা সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবি। এই ছবি করতে খরচ হয়েছিল ৬৫ লাখ টাকা আর এটি ১৯ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে।"
"ঈদে তখন ছবি মুক্তি দেওয়ার দৌড় শুরু হতো। কারণ সারা বছরের মধ্যে ওই সময়টাতেই দর্শক হলমুখী থাকে বেশি। ঘোড়ার গাড়ি ব্যানার-পোস্টারে ঘেরাও করে তখন সারা শহর ঘোরানো হতো। রেডিওতে ১০ মিনিটের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হতো। সবমিলিয়ে একটা হৈ হৈ রৈ রৈ ব্যাপার তৈরি হতো। এখন হলে গিয়ে ছবি দেখার সংস্কৃতিটা উঠে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে একটা ঐতিহ্য। ব্যাপারটা দুঃখজনক। আসলে এখন যারা ইন্ডাস্ট্রিতে আছে তারা সবকিছু দ্রুত পেতে চাইছে ফলে কষ্ট করে একটা ভালো কিছু উপহার দেওয়ার ব্যাপারটি আর নেই," বলেন তিনি।
কাকরাইল আর গুলিস্তানে ছিল অফিস
১৯৮৯ সাল থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহী হয়ে ওঠেন মীর শামসুল আলম বাবু। তাঁদের বাড়িতে সাবলেট থাকতেন বাবার এক বন্ধু। দেওয়ান নজরুল নামে তিনি পরে বিখ্যাত হয়ে উঠেন। বাবু যে টেবিলে বসে পড়তেন তাঁর উল্টোদিকের টেবিলেই তৈরি হয়েছিলে বিখ্যাত সে গান, 'পাখির নীড়ের মতো দুটো চোখ তোমার' আর 'দোস্ত দুশমনের' মতো চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় দেওয়ান নজরুলের সহকারী হয়েই বাবু যান এফডিসিতে। তাঁর অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবেই এফডিসির খাতায় নাম তোলেন। তিনি বলছিলেন, "সেসময়ে এফডিসি যে একটা বিরাট কুরুক্ষেত্র ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে ঈদে ঘটত সব তুঘলকি কাণ্ড। সকলেই চাইত ঈদে ছবি মুক্তি দিতে আর সেজন্যই নানাজন নানা কৌশল অবলম্বন করত যার সবটা ভদ্রজনোচিত ছিল না।"
"যেমন একটা ছবি হতো সাধারণত ১৬ রিলের (এক রিল প্রায় ১০০০ ফুট, মানে ১১ মিনিট)। ঈদের ছবিগুলোর ২০টি করে প্রিন্ট হতো আর কাজের বেশিরভাগটাই ছিল ম্যানুয়াল। এখন যদি কোনো ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট কোনো ছবির কেবল ৩ নম্বর রিলটা বসিয়ে রাখে তবেই কিন্তু ছবিটা তালিকার পিছনে পড়ে যাবে। সেন্সরে যে ছবি আগে জমা হবে সেটির নামই রেজিস্ট্রি খাতায় প্রথম উঠবে। এমনও দেখেছি ঈদের নামাজের আগ পর্যন্ত ছবি প্রিন্ট হচ্ছে,
"তখন সিনেমার অফিস বেশি ছিল কাকরাইল আর গুলিস্তানে। দালাল, থার্ড পার্টি ব্রোকার আর ডিস্ট্রিবিউটরদের হল্লা চিল্লায় কান পাতা যেত না অফিসগুলোয়। ঈদে ছবি মুক্তির দৌড়ে প্রায় প্রতিবারই মাঠে থাকত নায়িকা শাবানার স্বামী ওয়াহিদ সাদিকের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসএস প্রোডাকশন্স এবং নায়ক রাজ্জাকের রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন্স। তবে সব সত্ত্বেও যে উৎসবমুখরতা তৈরি হতো তা ছিল উপভোগ করার মতো। কোন ছবি কয়টা হল পেল, সপ্তাহ শেষে রিটার্ন কত, কয়টা শো হাউজফুল হলো- অনেকের মতো আমিও এসব ব্যাপারে নিয়মিত খবর রাখতাম। ভিতরে ভিতরে উত্তেজনা কাজ করত, উৎকণ্ঠা আর উদ্বেগও তৈরি হতো," বলছিলেন তিনি।
কয়েকটি আলোচিত ঈদের ছবি
কেয়ামত থেকে কেয়ামত: সালমান শাহ ও মৌসুমী দুজনেই তখন নবাগত। তাঁরা প্রথম একসঙ্গে অভিনয় করেন 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' ছবিতে। ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত এ সিনেমা সে সময় বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছিল। মুম্বাইয়ের তখনকার ব্লক বাস্টার 'কেয়ামত সে কেয়ামত তাক' এর কপিরাইট এনে পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান নির্মাণ করেন 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' ছবিটি। ১৯৯৩ সালের অন্যতম সেরা ছবি তো বটেই, এখনো জনপ্রিয় এই ছবিটি।
দেনমোহর: সালমান-মৌসুমী জুটির শেষ ছবি ছিল শফি বিক্রমপুরী পরিচালিত দেনমোহর । সালমান ও মৌসুমী জুটির সব ছবিই জনপ্রিয় হয়েছিল। দেনমোহরও ব্যতিক্রম ছিল না। এটিও কপিরাইট নিয়ে বানানো হয়েছিল। দুই পরিবারের বিরোধের গল্প নিয়ে নির্মিত ছবিটি ১৯৯৫ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছিল।
স্বামী কেন আসামি: ১৯৯৭ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছিল সেই বছরের সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল ছবি 'স্বামী কেন আসামি'। মনোয়ার খোকন পরিচালিত এই ছবির শিল্পীতালিকায় রয়েছেন জসীম, শাবানা, ঋতুপর্ণা, চাঙ্কি পান্ডে ও আহমেদ শরীফ। শাবানা ও তাঁর স্বামী ওয়াহিদ সাদিকের প্রযোজনা সংস্থা এসএস প্রোডাকশন্স প্রতিবছরের ধারাবাহিকতায় এই সিনেমাটি নির্মাণ করে। তবে সেবার ভারতের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় নির্মাণ করা হয়েছিল সিনেমাটি।
হঠাৎ বৃষ্টি: ১৯৯৯ সালের ঈদুল ফিতরে বিটিভিতে প্রিমিয়ার করা হয় অভিনেতা ফেরদৌস ও কলকাতার প্রিয়াংকা ত্রিবেদী অভিনীত সিনেমা 'হঠাৎ বৃষ্টি'। টেলিভিশনে মুক্তির পরই ব্যাপক সাড়া পায় সিনেমাটি। সিনেমাটির এত জনপ্রিয়তা দেখে পরে সিনেমা হলে মুক্তি দেওয়া হয় 'হঠাৎ বৃষ্টি'। সিনেমা হলে মুক্তি পাওয়ার পরও ছবিটি ব্যাপক ব্যবসাসফল হয়।
বিয়ের ফুল: ১৯৯৯ সালের ঈদুল ফিতরের আরেকটি হিট ছবি রিয়াজ-শাবনূর-শাকিল খান অভিনীত 'বিয়ের ফুল'। বলিউডের 'দিওয়ানা' ছবির গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এ সিনেমা পরিচালনা করেন মতিন রহমান। ছবিটি সে সময়ের ঈদে সুপারহিট ব্যবসা করে।
শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ: শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ সিনেমার মধ্য দিয়ে দেবাশীষ বিশ্বাস পরিচালনায় আসেন ২০০১ সালে। ঈদে ব্যাপক ব্যবসা সফলতা পায় রিয়াজ ও শাবনূর অভিনীত এ সিনেমা। সে বছরের আরও অনেক বিগ বাজেট সিনেমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এ সিনেমাটি সুপার হিট হয়।
এবারের ঈদে রেকর্ড সংখ্যক ৭টি ছবি মুক্তি পাচ্ছে। ছবিগুলো হচ্ছে জ্বীন, পাপ, আদম, প্রেম প্রীতির বন্ধন, কিল হিম, টোকাই এবং লোকাল।
দেশে সচল সিনেমা হল ৫০টির আশপাশে। ঈদে ঝাড়পোছ দিয়ে আরো কিছু হল কার্যকর করা হয়। তবে খোদ ঈদের দিনেও এখন হল খালি পড়ে থাকায় হতাশা দেখা যায় প্রযোজক, পরিবেশকসহ চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সকলেরই।