জিপ লাইফ বাংলাদেশ: বুনো শক্তি আর গতি, জিপ গাড়ি মালিকদের ক্লাব
ব্যতিক্রমী অফ রোডিং ক্ষমতার জন্য সারা বিশ্বের জিপগুলো তাদের ভক্ত এবং উৎসাহীদের কাছে প্রিয়। অনেকেই ভুলে যান, এটি যুদ্ধেও ব্যবহার হয়েছিল। ইস্পাতের ফ্রেম আর রিইনফোর্সড এক্সেলের মতো মজবুত আর টেকসই উপকরণ দিয়ে ডিজাইন করা গাড়িটি রুক্ষ ও অমসৃণ জায়গায় সহজেই চলতে পারে।
আনোয়ার গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠান জিপ বাংলাদেশ (টোলেডো মোটরস) গত সপ্তাহে একটি জিপ ট্রেইলিং অভিযানের উদ্যোগ নেয়। ছয়টি জিপ র্যাংলার এবং একটি ভিনটেজ এক্সজে জিপ চেরোকি নিয়ে এই অভিযানটি হয়েছিল সিলেটের লালাখালে। অংশগ্রহণকারীদের জীবনের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা ছিল এটি।
উৎসাহী অভিযাত্রীরা তাদের দুই দিনের অভিযানে আমাদেরকেও সাথে নেয়।
পূর্বাচলের ৩০০ ফিট থেকে সকাল সাড়ে ৬টায় আমরা সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। ভৈরব ব্রিজ পেরিয়ে যাওয়ার আগে জান্নাত রেস্টুরেন্ট এন্ড রিসোর্টে থামলাম সকালের নাস্তার জন্য। বিকেল ৪টা নাগাদ আমরা সিলেটে পৌঁছে গিয়েছিলাম আমাদের গন্তব্য এবং রাতের বাসস্থান নাজিমগড় ওয়াইল্ডারনেস রিসোর্টে।
মূল আকর্ষণের আগে আমরা আমাদের ঘরে সময় কাটালাম বিশ্রামের জন্য। সাড়ে আটটা নাগাদ সবগুলো জিপ রিসোর্টের পাশে থাকা রিভার কুইন গ্রাউন্ডে ক্যাম্পফায়ারের জন্য একত্রিত করা হয়। বারবিকিউ ডিনার পরিবেশনের পাশাপাশি ব্লুজ ব্রাদার্স তাদের গান পরিবেশন করে।
জিপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসেন খালেদ ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানটিতে যুক্ত হন। জিপ বাংলাদেশের ডিরেক্টর অপারেশনস ইউসুফ আমানসহ প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এরপর জিপ লাইফ বাংলাদেশ ক্লাবটির উন্মোচনের ঘোষণা দেন। জিপের যেসব মালিক তাদের গাড়ির সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেখতে চান, তাদের ক্লাব হবে এই জিপ বাংলাদেশ। ক্লাবটির মাধ্যমে এরকম ট্রেইলিং অভিযানই নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হবে।
আমরা পরদিনের জন্য শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে আগেভাগেই ঘুমাতে চলে গেলাম। গাড়ি চালিয়ে নতুন পথ খোঁজার জন্য সেটি ব্যবহার করা হবে। ঢাকার পরিচিত রাস্তার বাইরে ফোর-হুইল-ড্রাইভগুলো ব্যবহার করে জিপের মালিকরা তাদের গাড়িগুলোর প্রকৃত ক্ষমতা বুঝতে পারে।
হাই-গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এবং ফোর-হুইল ড্রাইভ পাওয়ারট্রেনগুলো জিপগুলোকে অফ-রোডের চ্যালেঞ্জিং বাধা সহজে মোকাবেলা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পর্যাপ্ত টর্ক এবং কম রেঞ্জের গিয়ার রুক্ষ এলাকার মধ্য দিয়ে চলার সময় ড্রাইভারকে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ এবং শক্তি প্রদান করে। লকিং ডিফারেনশিয়াল এবং স্কিড প্লেটগুলোও জিপের আন্ডারক্যারেজ এবং অন্যান্য অংশের জন্য অতিরিক্ত সুরক্ষা দেয়, যার ফলে এটি যেকোনো অফ-রোড ভ্রমণের জন্য আদর্শ।
সবমিলিয়ে, জিপগুলোকে অফ-রোডিং যানবাহনের সর্বোচ্চ পর্যায় বলা চলে, এবং এগুলোর কার্যকারিতা সত্যিই অতুলনীয়। বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে সর্বব্যাপী টয়োটা প্রাডোর আরও ভালো বিকল্প এটি। দুটো গাড়ির দামও প্রায় কাছাকাছি।
আমরা আবারো রাস্তায় নামলাম, তবে এবার সিলেট শহরের দিকে। আমরা গ্র্যান্ড প্যালেসে দুপুরের খাবারের জন্য আবার জড়ো হয়ে জিপ লাইফ বাংলাদেশের উদ্বোধন উদযাপন করলাম। এর একটু পরেই আমরা রওনা দিলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে।
সিলেটের ট্রেইলে আমাদের এই অভিযান জিপ লাইফ বাংলাদেশের মূল উদ্দেশ্য কী সেটি নিয়ে একটি প্রাথমিক ধারণা দিয়েছে। অভিযানটি থেকে পাওয়া অনুভূতি আমরা পরেরটি না হওয়া পর্যন্ত মনে রাখবো। সেটি বাংলাদেশের যেখানেই হোক না কেন।