যে লেখা মেসিকে কাঁদিয়েছে

ফিচার

টিবিএস ডেস্ক
23 December, 2022, 08:50 pm
Last modified: 23 December, 2022, 09:09 pm
"পাষাণ হৃদয়। খালি টাকা নিয়ে চিন্তা করো। ওখানেই থাকো। তুমি কখনোই আর্জেন্টিনার জার্সিকে অনুভব করো না। তুমি গ্যালিসিয়ান, আর্জেন্টাইন নও। মার্সেনারি (ভাড়াটে সৈন্য)।" আমি আর্জেন্টিনার বাইরে পনের বছর কাটিয়েছি। এবং তুমি পৃথিবীর যেই জায়গাটা সবচেয়ে বেশি ভালোবাসো, সেখান থেকে এ ধরনের বাক্য শোনার চেয়ে ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন আর হতে পারে না।

মেসি একজন 'সাধারণ মানুষ' যিনি 'পুরো বিশ্বের কেন্দ্রবিন্দু' ছিলেন। গত সপ্তাহে, ৩৫ বছর বয়সে, তিনি অবশেষে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি ছুঁয়েছেন। এবং যখন আর্জেন্টিনায় ফিরেছেন তখন চল্লিশ লক্ষ মানুষ রাজশানী বুয়েনোস এইরেসে জড়ো হয়েছেন তার নামে স্লোগান দেওয়ার জন্য। মানব ইতিহাসে এরকম সম্মিলিত অভিজ্ঞতা বেশ বিরলই বলা চলে। 

ঐ একই দিনে, ডিসেম্বরের ১৯ তারিখ, প্রতিবারের মতো এবারও তিনি নিজের জন্মস্থান রোজারিওতে যান।  কয়েকদিন নিজ বাড়িতে কাটানোর পর তিনি অ্যান্ডি কুজনেটজফ নামের এক রেডিও সাংবাদিক এবং হার্নান ক্যাসিয়ারি নামের এক লেখকের কাছে তার একটি বার্তা রেকর্ড করে পাঠান। রেকর্ডে মেসি আর তার স্ত্রী আন্তোনেলা রোকুজ্জো জানান কুজনেটজফের রেডিও প্রোগ্রামে ক্যাসিয়ারি ৯ মিনিট ধরে যে লেখাটি পড়েছেন, সেটি শুনে তারা দুজনেই কেঁদেছেন। আর স্বাভাবিকভাবেই সেই লেখার নায়ক, লিওনেল মেসি; গল্পের নাম 'লিওনেল'স স্যুটকেস'। 

ক্যাসিয়ারি তার জীবনের ১৫টি বছর স্পেনে কাটিয়েছেন। সেখানে তিনি মেসিকে দেখেছেন একজন তরুণ আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় থেকে একজন 'সাধারণ মানুষে' পরিণত হতে, যিনি সারা বিশ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে রূপান্তরিত হয়েছেন। 

ক্যাসিয়ারি হাসতে হাসতে জানান, 'দুই ধরনের অভিবাসী রয়েছে। প্রথম ধরন, যারা স্পেনে এসেই ক্লোজেটে স্যুটকেস রাখে; আর যারা সেটা রাখে না।' মনে করিয়ে দেন যে তিনি কখনোই স্পেনের স্প্যানিশ ভাষার স্পেনীয় সংস্করণ ব্যবহার করেন না, বরং আর্জেন্টাইন বুলিই আওড়ান। 

কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে আর্জেন্টিনায় থাকা তার সকল নিন্দুকের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছেন মেসি। ক্যাসিয়ারি নিশ্চিত করেছেন, তার মোটা অঙ্কের বেতন এবং তার চেয়েও বড় অর্জনের তালিকা থাকা সত্ত্বেও মেসি তার আর্জেন্টাইন অ্যাকসেন্ট অক্ষত রেখেছেন।

কোপা আমেরিকা ট্রফি হাতে মেসি; ছবি: লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস

"মেসি তার স্যুটকেসে করে বিশ্বকাপটি নিয়ে এসেছে, তাতে আমরা সবাই খুশি। এই অসাধারণ গল্পের জন্মই হতো না, যদি মেসি তার স্যুটকেস ক্লোজেটে ঢুকিয়ে রাখতেন, যদি তিনি স্পেনে আবাস গাড়তেন। কিন্তু তিনি কখনোই নিজের ভাষা ভোলেননি, কিংবা নিজের মাতৃভূমিকে ভোলেননি," ক্যাসিয়ারি লিখেছেন। 

আন্তোনেলার সাথে রেডিওতে ক্যাসিয়ারির লেখা শোনার পর মেসি সিদ্ধান্ত নেন অ্যান্ডি কুজনেটজফের কাছে তিনি একটি রেকর্ডেড বার্তা পাঠাবেন: "আমি আপনাকে এই অডিওটি পাঠাতে চাচ্ছি, কারণ আমি এখন এখানে [রোজারিওতে] আন্তোনেলার সাথে একসাথে বসে আছি। আমি টিকটকে এর সামান্য কিছু অংশ দেখছিলাম," মেসি হেসে জানালেন। তারপর মেসি জানালেন কুজনেটজফ কিছুদিন আগে স্বাস্থ্যসমস্যায় ভুগছিলেন, সেখান থেকে সেরে ওঠার সংবাদে তিনি [মেসি] খুব খুশি। তারপর ক্যাসিয়ারির লেখা সম্পর্কে মেসি বলতে শুরু করলেন: 

"হার্নান যা লিখেছেন, যখন তিনি সেটি পড়া শুরু করলেন... আমরা দুজনেই কাঁদা শুরু করেছি, কারণ ওখানে যা বলা হয়েছে তার সবকিছুই সত্যি। যা-ই হোক, আমি দুজনের কাছেই আমার শুভেচ্ছা পাঠাচ্ছি। দয়া করে তাকে [ক্যাসিয়ারিকে] ধন্যবাদ জানাবেন এবং বলবেন যে আমরা দুজনেই এটা শুনেছি, আমরা দুজনকেই লেখাটি নাড়িয়ে দিয়েছে, উনি আমাদেরকে কাঁদিয়েছেন। আমি তাকে এটা জানাতে চাই। আমার পক্ষ থেকে তোমাদের সবার জন্য ভালোবাসা। ধন্যবাদ আবারো।"

বিশ্বকাপ জয়ের পর পরিবারের সাথে মেসি; ছবি: দ্য ভ্যানগার্ডিয়ান

রেডিও স্টেশনের সবাই মেসির এই বার্তায় আপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন, যার মধ্যে ক্যাসিয়ারিও রয়েছেন। তিনি জানান, "সকালে লিওনেলের বার্তা পেয়ে আমি প্রচণ্ড খুশি হয়েছি। আমাকে যদি ছোটবেলায় জিজ্ঞাসা করা হতো, তুমি কী জিততে চাও: সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার, সারভান্তেস পুরস্কার নাকি গল্পের মাধ্যমে মেসিকে নাড়িয়ে দেওয়া, আমি আজকে যা ঘটেছে সেটিই বেছে নিতাম।"

মেসি'র স্যুটকেস

[হার্নান ক্যাসিয়ারির লেখা বই 'লা ভালিহা ডি লিওনেল'-এর স্প্য্যানিশ সংস্করণ থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন আন্তোনেলা পেরাজ্জোনি। প্রকাশিত হয়েছে এল পাইসে। সেখান থেকে বাংলায় রূপান্তর করা হলো।]

২০০৩ সালের শনিবারের সকালে কাতালোনিয়ার টিভিথ্রিতে বার্সেলোনার বয়সভিত্তিক দলের খেলা সরাসরি সম্প্রচার করা হতো। তখন স্পেনে আসা আর্জেন্টাইন অভিবাসীদের মুখে দুটো প্রশ্ন ঘুরছে: ঘনীভূত দুধ দিয়ে কীভাবে ডুলসে ডু লেচে বানানো হয় আর প্রতি ম্যাচেই গোল করা রোজারিওর সেই পনের পছর বয়সী বালকের খেলা টিভিতে কখন দেখানো হয়? 

২০০৩-০৪ মৌসুমে লিওনেল মেসি ৩৭ ম্যাচ খেলে গোল করেছিলেন ৩৫টি। আর সেই সময়েই কাতালোনিয়ার টিভি চ্যানেলটির সকালের রেটিং রাতের রেটিংয়ের তুলনায় বেড়ে যায়। কাতালোনিয়ার বার থেকে শুরু করে সেলুন, এমনকি ক্যাম্প ন্যুয়ের স্ট্যান্ড পর্যন্ত সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে যায় তার কথা। 

একমাত্র যে তাকে নিয়ে কথা বলতো না তা হচ্ছে মেসি স্বয়ং। ম্যাচ-পরবর্তী সাক্ষাৎকারে তার মুখ থেকে বের হতো তিনটি শব্দ: হ্যাঁ, না এবং ধন্যবাদ। অথবা তাকে দেখা যেত নিচের দিকে মুখ ফিরিয়ে তাকিয়ে থাকতে। আমরা আর্জেন্টাইন অভিবাসীরা একজন বাচালকেই আরও বেশি পছন্দ করতাম, তবে একটা ভালো ব্যাপারও ছিল, যখন সে পুরো বাক্য বলতো, সে 'এস'গুলো গিলে ফেলতো। আমরা আবিষ্কার করলাম সে আমাদেরই একজন, যে এখনো স্যুটকেস খোলেনি।

বার্সেলোনায় তরুণ মেসি; সূত্র: ইনসাইডার

দু ধরনের অভিবাসী রয়েছে, যারা স্পেনে পৌঁছানোর সাথে সাথে ক্লোজেটে তাদের স্যুটকেসে আনা কাপড়-চোপড় গুছিয়ে রাখে, যারা ভালে, তিও আর হোস্তিয়াসের মতো শব্দ উচ্চারণ করে। আর রয়েছে আমাদের মতো অভিবাসীরা যারা স্যুটকেস খোলে না, নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখে। ইউভিয়া, কায়ের মতো শব্দ ব্যবহার করে। 

সময় গড়াতে থাকলো। মেসি হয়ে উঠলো বার্সার ১০ নম্বর জার্সির হর্তাকর্তা। লিগ, কাপ আর চ্যাম্পিয়ন্স লীগ আসলো। এবং ওসহ আমরা সবাই, অভিবাসীরা জানতাম, ওই অ্যাকসেন্ট ধরে রাখাটাই সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার। 

রেগাতের বদলে গাম্বেতা বলা আমাদের জন্য খুবই কঠিন ছিল, কিন্তু আমরা জানতাম এটাই আমাদের শেষ পরিখা। আর মেসি ছিল সেই যুদ্ধে আমাদের নেতা। সেই বালক যে আমাদের অকৃত্রিম ভাষায় কথা বলার ব্যাপারটি টিকিয়ে রেখেছিল। 

বার্সার জার্সি গায়ে মেসির অভিষেক; সূত্র: ইএসপিএন

তো, হঠাৎ করেই আমরা কেবল আমাদের দেখা সেরা খেলোয়াড়কে উপভোগই করছিলাম না, আমরা এটাও খেয়াল রাখছিলাম ও ম্যাচ-পরবর্তী সাক্ষাৎকারেও ভুল করে যেন কোনো স্প্যানিশ বুলি না আউড়ে বসে। 

গোলের পাশাপাশি আমরা সেগুলোও উদযাপন করছিলাম। লকার রুমে ও ওর নিজস্ব শব্দই ব্যবহার করতো। তারপর হঠাৎ করেই ও হয়ে উঠলো বার্সেলোনার সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি। এবং আমাদের মতোই, ও ভিন্ন এক দেশে নিজেকে আর্জেন্টাইন ছাড়া অন্য কিছু ভাবেনি। 

প্রতিবার ইউরোপ জয়ের পর আর্জেন্টিনার পতাকা হাতে ওর উদযাপন। ক্লাবের অনুমতি না নিয়েই আর্জেন্টিনাকে নিয়ে অলিম্পিকে সোনা জেতানোর ব্যাপারে ওর মনোভাব। জানুয়ারিতে ক্যাম্প ন্যুতে কাটানো সত্ত্বেও বড়দিনের ছুটি সবসময়েই রোজারিওতে কাটানো। সে যা-ই করতো, তা আমাদের কাছে ওর চোখ টেপার মতো ছিল; আমাদের কাছে, যারা ওর সাথে ২০০০ সালে বার্সেলোনায় এসেছিলাম। 

নিজের দেশ, নিজের বাড়ি থেকে বহুদূরে থাকা এই আমাদের জীবনকে ও যে কতটা সুখী করে তুলেছিল, তা বোঝানো খুবই কঠিন। একঘেয়ে সমাজের বিরক্তিকর জীবনকে ও আমাদের জীবনের একটি উদ্দেশ্য ঠিক করে দিএয়ছিল। এত স্বাভাবিক আর সুন্দরভাবে ও আমাদের জীবনে আনন্দ নিয়ে এসেছিল, আর ও আমাদের এত কাছাকাছি ছিল যে, যখন আর্জেন্টিনা থেকে ওর নামে সমালোচনা আসতে শুরু করে, আমরা ওগুলোর কারণ বুঝতে পারতাম না। 

তৃতীয়বারের মতো মেসির ইউরোপজয়; সূত্র: উয়েফা

পাষাণ হৃদয়। খালি টাকা নিয়ে চিন্তা করো। ওখানেই থাকো। তুমি কখনোই আর্জেন্টিনার জার্সিকে অনুভব করো না। তুমি গ্যালিসিয়ান, আর্জেন্টাইন নও। মার্সেনারি (ভাড়াটে সৈন্য)। 

আমি আর্জেন্টিনার বাইরে পনের বছর কাটিয়েছি। এবং তুমি পৃথিবীর যেই জায়গাটা সবচেয়ে বেশি ভালোবাসো, সেখান থেকে এ ধরনের বাক্য শোনার চেয়ে ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন আর হতে পারে না। 

ওই কষ্ট কখনোই সহ্য করা সম্ভব না, যখন নিজের ছেলে থিয়াগোর মুখ থেকে মেসি শোনে, 'বাবা, এই আর্জেন্টিনায় ওরা কেন তোমাকে খুব করতে চাচ্ছে?'

আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় যখন আমি তার ছেলের মুখ থেকে তার বাবা এই বাক্য শুনতে পেয়েছে সেটা ভাবি। এবং আমি জানি একজন সাধারণ মানুষ ওই প্রচণ্ড অপমানে ভেঙে পড়তো। 

এবং এই কারণেই ২০১৬ সালে যখন আর্জেন্টিনা জাতীয় দল থেকে মেসি অবসর নিলেন তখন আমাদের মতো আর্জেন্টাইন অভিবাসীদের মধ্যে স্বস্তির পরশ বয়ে গিয়েছিল। আমরা ওর এভাবে কষ্ট পাওয়া সহ্য করতে পারছিলাম না। কারণ আমরা জানতাম ও নিজের দেশকে কতটা ভালোবাসে, আর এ নাড়িকে না কাটার জন্য ও কতটা চেষ্টা করেছে।

২০১৬-তে কোপা আমেরিকা ফাইনাল হেরে যাওয়ার পর অবসরের আগে ক্রন্দনরত মেসি; সূত্র: দ্য আমেরিকান বাজার

যখন ও অবসর ঘোষণা করলো, তখন মেসি আগুনের ওপর থেকে হাত সরিয়ে নিলো কিছুক্ষণের জন্য। কেবল ও-ই নয়, আমরাও সমালোচনার জোয়ারে হারিয়ে গিয়েছিলাম। 

এবং তখনই আমার মনে হয়, সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবলের সবচেয়ে অদ্ভুত ঘটনাটি ঘটেছিল: ২০১৬-এর যে বিকেলে মেসি অপমানে ক্লান্ত হয়ে সিদ্ধান্ত নিল সব ছেড়ে দেওয়ার, তখনই ফেসবুকে এক ১৫ বছর বয়সী কিশোর তাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছিল: "থেকে যাওয়ার কথা ভাবো। কিন্তু মজা করার জন্য থেকে যাও, যেটা তোমার কাছ থেকে এই লোকেরা কেড়ে নিতে চাচ্ছে।" সাত বছর পর, তরুণে পরিণত হওয়া চিঠি লেখা সেই কিশোর, এনজো ফার্নান্দেজ, মেসির সাথে একই মাঠে সোনালী বিশ্বকাপ ছোঁয়ার স্বাদ নিলো।

মেসি জাতীয় দলে ফিরলো যাতে করে তাকে চিঠি লেখা ওই ছেলেগুলো না ভেবে বসে জীবনের সবকিছু ছেড়ে দেওয়া কোন অপশন না হতে পারে। 

এনজো ফার্নান্দেজের ফেসবুক পোস্ট; সূত্র: স্পোর্টবাইবেল

এবং যখন ও ফিরে এলো, ও বাকি থাকা সবকিছু জিতে নিলো এবং ওর সব অপমানকারী, সব নিন্দুকের মুখ সারাজীবনের জন্য বন্ধ করে দিলো। যদিও অনেকের কাছে ও প্রথম মাইক্রোফোনের সামনে 'অশ্লীল' শব্দ ব্যবহার করলো। কিন্তু ও যখন উচ্চারণ করলো: 'কে মিরা, বোবো, আন্দা পায়া', আমরা যারা ওর অ্যাকসেন্টের দিকে পনের বছর ধরে খেয়াল রেখেছি, ওটা ছিল একদম নিখুঁত। কারন ও সব 'এস' গিলে ফেলেছিল, আর ওর ইয়েজমো এখনো ঠিক আছে। 

আমরা নিশ্চিন্ত হলাম যে ও এখনো ওই আগের মতোই আছে, আমাদের খুশি রাখতে সাহায্য করছে, যখন আমরা দেশ থেকে বহুদূরে ছিলাম। 

এখন আমাদের মতো বেশ কিছু অভিবাসী আর্জেন্টিনায় ফেরত এসেছে, অনেকেই থেকে গিয়েছে। তবে আমরা সবাই খুশি মেসি ওর ঐ স্যুটকেসে করে বিশ্বকাপ নিয়ে ফিরে এসেছে। এঈ অসাধারণ গল্পের জন্মই হতো না, যদি পনের বছর বয়সী মেসি তার স্যুটকেসে স্পেনের ক্লোজেটে গুছিয়ে রাখতো। ভালে আর হোস্তিয়ার সামনে ও যদি কখনো আত্মসমর্পণ করেও থাকে, ও কখনো নিজের ভাষা আর নিজের জন্মভূমিকে ভোলেনি। 

আর এ কারণেই পুরো মানবজাতি ওর জন্য একসাথে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। কারণ কেউ কখনো দেখেনি একজন 'সাধারণ মানুষ'কে পুরো বিশ্বের কেন্দ্রবিন্দু হতে। 

এবং গতকাল, প্রতি বছরের মতো, মেসি ইউরোপ থেকে রোজারিওতে ফিরে এসেছে তার পরিবারের সাথে বড়দিনের ছুটি কাটানোর জন্য, তার প্রতিবেশিদেরকে 'হ্যালো' বলার জন্য। ওর এই আচরণ পরিবর্তন হবে না। যে জিনিসটি কেবল পরিবর্তন হয়েছে, ও স্যুটকেসে করে কী নিয়ে এসেছে সেটি। 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.