পুরুষের যৌন নিরাপত্তাহীনতাকে পুঁজি করে যেভাবে গড়ে উঠেছে বিশাল ব্যবসা

ফিচার

30 September, 2022, 01:30 pm
Last modified: 30 September, 2022, 01:54 pm
যৌনতা নিয়ে নানা কুসংস্কার চালু বাংলাদেশে। এসব ভুলভাল বিশ্বাসকে পুঁজি করে গুলিস্তানসহ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে ‘গোপন সমস্যা’র ওষুধের ব্যবসা। নিবন্ধনবিহীন এসব ব্যবসার কলকব্জা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

ছবি: সাকলাইন রিজভী/ টিবিএস

ভরদুপুরের হঠাৎ বৃষ্টিতে গুলিস্তান মোড়ের চেহারা বদলে গেল। ফুটপাতে অস্থায়ী দোকান বসিয়েছিলেন মাহবুব কাকা। যৌন সমস্যার ওষুধ—জড়িবুটি আর ট্যাবলেট—বিক্রি করেন তিনি। ফুটপাতে আচমকা বৃষ্টিতে দোকানটি গুটিয়ে নিয়েছেন। এখন ফুটপাতের রেলিঙে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বৃষ্টি কমার অপেক্ষায়।

আমি গিয়ে সালাম দিতেই তিনি ধরে নিলেন, রোগী পেয়ে গেছেন। 'যৌন সমস্যা?' নিচু গলায় জিজ্ঞেস করলেন মাহবুব।

জবাব দিলাম, 'হ্যাঁ। আপনার কাছে কী ওষুধ আছে?'

মাহবুব বললেন, 'ত্রিফলা' আমার সমস্যার সমাধান করে দেবে। আমার কী সমস্যা, তা বিস্তারিত জিজ্ঞেস করারও প্রয়োজন বোধ করলেন না তিনি—কারণ, তার ভাষায়, 'সব যৌন সমস্যার দাওয়াই হলো ত্রিফলা।'

ত্রিফলা হলো আমলকি, হরিতকি, বহেরাসহ বিভিন্ন বীজের মিশ্রণ।

ত্রিফলা ছাড়াও 'দীর্ঘ সময় সহবাসের' জন্য বিভিন্ন ট্যাবলেট বিক্রি করেন মাহবুব। রাজধানীর গুলিস্তান মোড় ও অন্যান্য এলাকার বিক্রেতারা যৌন ট্যাবলেট বেশি বিক্রি করলেও তিনি বেশি আগ্রহী গাছের শেকড় ও ভেষজ গাছের প্রতি।

মাহবুব বললেন, 'এখানে আমি ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে এই ওষুধ বিক্রি করছি। অনেককে যৌন সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়েছে আমার ওষুধ। সরল বিশ্বাসে আমার ওষুধটা নেন, আপনার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।'

ক্লান্ত চেহারার এক যুবক, পরিবহনশ্রমিক বোধহয়, আমাদের আলাপ শুনছিলেন। মাহবুব তাকে জিজ্ঞেস করলেন, 'যৌন সমস্যা?' তার কথায় বিব্রত হয়ে যুবক চলে গেলেন।

এরইমধ্যে আমি মাহবুবের সঙ্গে ত্রিফলার দাম নিয়ে দরাদরি করছিলাম। তিনি দাম হাঁকালেন ১০০ টাকা। আমি মজা করে বললাম, ৭০ টাকায় দিলে নেব। মাহবুব রাজি হয়ে গেলেন। একটা ত্রিফলার প্যাকেট বেচে ফেললেন আমার কাছে।

ত্রিফলার প্যাকেট হাতে নিয়ে যখন গুলিস্তানের রাস্তা ধরে হাঁটছিলাম, আশেপাশের মানুষজন তখন বেশ সন্দিহান চোখেই দেখছিল আমাকে। অযাচিত মনোযোগ এড়াতে প্যাকেটটা ব্যাগে রেখে দিলাম।

সেদিন গুলিস্তান মোড়ে গিয়েছিলাম যৌন ট্যাবলেট বিক্রেতাদের সাক্ষাৎকার নিতে। এই বিক্রেতারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোলামেলা ব্যবসা করে।

বাংলাদেশে যৌন সমস্যা এখনও লজ্জা ও নিষিদ্ধতার আবরণে মোড়া। এ নিয়ে মানুষ খোলাখুলি লোচনা করে না, কারণ এদেশে এটা একটা 'গোপন সমস্যা'।

এর ফলে বাংলাদেশে যৌন সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের টার্গেট করে গড়ে উঠেছে উদ্ভট এক চিকিৎসাব্যবস্থার শৃঙ্খল। এই শৃঙ্খলে রয়েছে অনিবন্ধিত ট্যাবলেট বিক্রেতারা, যারা যৌন সংসর্গ নিয়ে পুরুষদের ভয়কে পুঁজি করে ব্যবসা করে।

হানিফ ফ্লাইওভারের কাছে পারভেজ নামের এক যুবকের সঙ্গে দেখা। ইরেক্স প্লাস, এল্ডেরিন, এসকেডি-জিনসেং, এসপি-নিশাত, সবুজ ফুর্তি ও কিউ-রেক্সের মতো বিভিন্ন ট্যাবলেট বিক্রি করছিলেন তিনি।

এই তথাকথিত ইউনানি ওষুধগুলোর নাম ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত ইউনানি পণ্যের তালিকায় পাওয়া যাবে না। তার মানে, ঢাকার রাস্তায় প্রকাশ্যে এসব অনিবন্ধিত ওষুধ বিক্রি করছে বিক্রেতারা। আর তাদের কাছে নিবন্ধন করা যে কটি ইউনানি ওষুধ আছে, সেগুলোও তারা কোনো ধরনের ডাক্তারি প্রেসক্রিপশন ছাড়াই বিক্রি করছে।

গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা, ফকিরাপুল ও কারওয়ান বাজারে একটু ঘোরাঘুরি করলেই দেখতে পাবেন, পারভেজ ও মাহবুবের মতো অনেক বিক্রেতা যৌনরোগীদের কাছে এসব ট্যাবলেট ও জড়িবুটি বিক্রি করছে।

তবে শুধু তারাই পুরুষদের নিরাপত্তাহীনতা ও ভয়কে পুঁজি করে ব্যবসা করছে না।

ছবি: টিবিএস

আমরা অনলাইনে কিছু 'জনপ্রিয়' কবিরাজের খোঁজও পেয়েছি। এরা যৌনরোগীদের সমস্যা সারাতে ফেসবুক ও ইউটিউবে 'কবিরাজি' ওষুধ বিক্রি করে। 

তাদের একজন সাইফুল হক। নিজেকে তিনি একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে পরিচয় দেন। সাইফুলের দাবি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ৩০ লাখের বেশি ফলোয়ার আছে। তার ইউটিউব চ্যানেল সাইফুল টিভির সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ১.৪ মিলিয়নেরও বেশি। আর তার ভিডিওগুলো ১০৭ মিলিয়নেরও বেশি ভিউ পেয়েছে। সাইফুলের আরও কয়েকটি ইউটিউব চ্যানেল আর ফেসবুক পেজও আছে।

ফেসবুকে সাইফুলের ভিডিওগুলো উদ্ভট ক্যাপশন দিয়ে পোস্ট করা হয়। যেমন, 'এই ভিডিওটি তাদের জন্য, যাদের এক মিনিটেরও কম সময়ে বীর্যপাত হয়ে যায়।' সাইফুলের দাবি, যে ওষুধটিকে তিনি 'হালুয়া' বলেন, সেটি তার বংশের একজন বিখ্যাত পীরের বানানো একটি রেসিপি অনুসারে তৈরি।

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, রোগের 'জটিলতার ভিত্তিতে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা বা তারও বেশি' খরচ হতে পারে হালুয়া কিনতে।

নিজের ওষুধের সত্যতা প্রমাণ করতে সাম্প্রতিক এক ভিডিওতে সাইফুল তার কোম্পানির নিবন্ধনের 'প্রমাণ' দেখিয়েছেন। সাইফুল হেলদি ফুড লিমিটেড নামে নিবন্ধন নিয়েছে তার কোম্পানি। ড্রাগ লাইসেন্স আছে কি না জানতে চাইলে সাইফুল জবাব দেন, তার কোনো ড্রাগ লাইসেন্স লাগে না। কারণ তিনি যৌন সমস্যা নিরাময়ের জন্য যে 'হালুয়া' তৈরি করেন তা ওষুধ নয়, এক ধরনের 'খাদ্য'।

তবে সাইফুল তার 'হালুয়া' বাজারজাত করার জন্য 'নিবন্ধন' নিলেও অনলাইনে আরও অনেক কবিরাজ আছে যারা এরকম নিবন্ধনের জটিলতায় যায় না।

তাদেরই একজন নূপুর কবিরাজ। নূপুরের দাবি, তিনি আসাম থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। তার পুরো বংশ কবিরাজ। রোগী সুস্থ হলেই কেবল তিনি টাকা নেন।

নুপুরের চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আমরা তাকে ফোন করি। তখন তিনি জানান, তাকে দুটি রাজহাঁস পাঠাতে হবে। সেই রাজহাঁসের রক্ত দিয়ে তিনি ওষুধ বানাবেন। রাজহাঁস পাঠাতে না পারলে তার দামের সমপরিমাণ টাকা পাঠাতে হবে।

কিন্তু আলাপ একটু এগোতেই আমরা প্রকৃত গ্রাহক নাকি ধাপ্পাবাজ, তা নিয়ে সন্দিহান হয়ে ওঠেন নূপুর। কেননা একজন গ্রাহকের মধ্যে সাধারণত যে ধরনের নিরাপত্তাহীনতা দেখেন, তা তিনি আমাদের মধ্যে দেখেননি। তাই তিনি কল কেটে দেন।

ঝিনাইদহের আরেক কবিরাজ ফয়সাল মাহমুদের ফেসবুক পেজের নাম যৌন রোগের শেষ চিকিৎসালয়। ফেসবুক পেজ দেখে বোঝা যায় তিনি বেশ জনপ্রিয়। পেজ থেকেই জানা গেল, গত ২৩ জুন তিনি ৭৪ জনের কাছে এবং ২৪ জুন ৫২ জনের কাছে ওষুধ বিক্রি করেছেন।

আমরা ফয়সালকে জিজ্ঞেসস করি তার ড্রাগ লাইসেন্স আছে কি না। ফয়সাল জানালেন, তার লাইসেন্স আছে। নিজের কোম্পানির নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বরও আমাদের দেন তিনি। কিন্তু ডিজিডিএর ওয়েবসাইটে তার দেওয়া নাম বা রেজিস্ট্রেশন নম্বর খুঁজে পাইনি আমরা। পরে যখন ওয়েবসাইটে তার কোম্পানির নাম না থাকার বিষয়ে জিজ্ঞেসস করার জন্য ফোন করি, তখন সাইফুল ফোন ধরেননি।

প্রিন্সিপাল সাইফুল জানান, যৌন সমস্যায় আক্রান্ত হাজারো মানুষের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। এর মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি পুরুষ। তার যে পরিমাণ অনুসারী আছে এবং অন্যান্য কবিরাজরা প্রতিদিন যে পরিমাণ ওষুধ বিক্রি করছেন, তা থেকে সহজেই অনুমান করা যায় যে বাংলাদেশে যৌন সমস্যা ও যৌন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা রোগীর সংখ্যা বিশাল।

যে ভিত্তির ওপর ভর করে এই ব্যবসা টিকে আছে

এই মানুষগুলো তাহলে কবিরাজদের বদলে চিকিৎসকদের কাছে যায় না কেন?

লাইফস্প্রিং লিমিটেডের চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ এবং সেক্সুয়াল মেডিসিন ইউনিটের প্রধান ডা. সুষমা রেজা বলেন, 'কেউ যখন ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের মতো সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে যায়, তখন একটা প্রি-চেকআপ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই ওষুধগুলো অনেক ক্ষেত্রেই সরাসরি তাদের রক্তনালী, [এবং] স্নায়ুতন্ত্রের ওপর কাজ করে; এবং লিভার, কিডনি, হাড় ইত্যাদির ওপর ডোজ-ভিত্তিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করে।

'একজন ডাক্তার প্রি-চেকআপের পর কম ডোজের ওষুধ এবং তিন মাস পর দ্বিতীয় চেকআপের রিকমেন্ড করতে পারেন। কম ডোজের ওষুধে যখন তেমন একটা কাজ হয় না, তখন অনেক রোগী তিন মাস পর এসে ফলোআপ করেন না। ওই সময়ই তারা কবিরাজদের লোভনীয় গালগপ্পের ফাঁদে পড়ে যান।'

ছবি: টিবিএস

ডা. সুষমা আরও বলেন, 'এখন যে পণ্যগুলো [কবিরাজ ও রাস্তার বিক্রেতারা] বাজারে বিক্রি করছে, সেগুলো কি নিরাপদ? এ প্রশ্নের সরাসরি উত্তর হলো—এসব পণ্য মোটেও নিরাপদ না।

'এগুলো বড় বিপদের কারণ হতে পারে। ড্রাগ আইন, নিরাপত্তা বা ডোজ নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। আর রোগীদের যখন কিছু হয়, তখনও তাদের নিয়ে মাথা ঘামায় না। [কবিরাজদের ভুল ওষুধের ভুক্তভোগী] এই রোগীদের গল্প সোশ্যাল মিডিয়ার পেজে পাবেন না।

 

'এদের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এরা সব ধরনের দায় থেকে মুক্ত। [কারণ] এর [যৌন চিকিৎসা] সঙ্গে কিছু লজ্জা আর অবমাননার ব্যাপার জড়িত। যারা সম্পূর্ণরূপে যৌনতা সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে, তারা অপমানিত হওয়ার ভয়ে এই বিষয়ে কথা বলে না। কবিরাজরা এই অসহায়ত্বকেই পুঁজি করছে।'

ডা. সুষমা রেজা বলেন, কবিরাজদের ভুল প্রেসক্রিপশনে আমাদের কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম, হাড়, লিভার, কিডনি ইত্যাদি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

'অনেক ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে সমস্যাটির সমাধান কিছুটা করা যায় হয়তো। কিন্তু এসব পণ্য অনেকেরই যৌন সক্ষমতা ও উর্বরতার ক্ষতি করতে পারে,' বলেন তিনি।

এছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই 'ইরেক্টাইল ডিসফাংশন, অকাল বীর্যপাত বা টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি'র জন্য ডাক্তাররা যেসব ওষুধকে ভেষজ ওষুধ হিসেবে প্রেসক্রাইব করেন, সেই একই অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ কবিরাজরাও বাজারজাত করে বলে জানান ডা. সুষমা। কবিরাজরা এসব ওষুধ 'বেশি ডোজে' বিক্রি করে। বিভিন্ন জিনিস [গাছড়া, গুল্ম] ভুল অনুপাতে মেশায় তারা। আর ভেষজ ব্যবহারের উপকারিতা থাকলেও এই কবিরাজরা প্রকৃত উপকারী ভেষজ সম্পর্কে কিছু জানে না বলে মন্তব্য করেন ডা. সুষমা।

তিনি বলেন, '[যেমন] একজন ডাক্তার ৫ মিলিগ্রাম লিখবেন, [কিন্তু একজন কবিরাজ] ১০ থেকে ১৫ মিলিগ্রামের ডোজ দিচ্ছেন। আমাদের রোগীদের পক্ষে এই দুটোর পার্থক্য ধরা কখনোই সম্ভব নয়।'

ডা. সুষমার মতে, চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যতম সস্তা ওষুধ হলো যৌন ওষুধ। যৌনতা সম্পর্কে অনেকের মনেই ভুল ধারণা রয়েছে, যা শুধু কথা বলে দূর করা সম্ভব।

অনেক রোগীরই যৌন সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ আছে। এক-দুটি ছোট ওষুধ দিয়ে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব ওষুধের দামও কম হয়। স্রেফ সচেতনতাই অনেক সমস্যার সমাধান দিতে পারে।

আমাদের সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতিও যে আমাদেরকে এই সমস্যাটিকে গোপন রাখতে উৎসাহিত করে, এ ব্যাপারে ডা. সুষমা একমত।

'কিন্তু রোগ নিয়ে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। আমি হয়তো গোপনীয়তা বজায় রাখার চেষ্টা করতে পারি, কিন্তু এই লজ্জা কাটিয়ে ওঠার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। আর আপনার গোপনীয়তা রক্ষা করা ডাক্তারির নৈতিকতার মধ্যেই পড়ে। যৌন বা হার্ট, সব ডাক্তারের জন্যই এটা সত্য,' বলেন তিনি।

মন্তব্যের জন্য আমরা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) মহাপরিচালক আইয়ুব হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি বলেন, 'ফুটপাতে ওষুধ বা অনিবন্ধিত ওষুধ বিক্রির অনুমতি নেই। এসব প্রতিরোধ করার জন্য আইন আছে। আমরা হকার ও অনিবন্ধিত ওষুধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই।'

নানা পদক্ষেপ নিলেও এটি সম্পূর্ণ বন্ধ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। আইয়ুব হোসেন আরও বলেন, পুলিশ [ও] ডিবির মতো অন্যান্য বাহিনীও ডিজিডিএকে সাহায্য করছে। বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় এ ধরনের ওষুধ বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করার ক্ষমতাও ডিজিডিএর আছে।

আইয়ুব হোসেন বলেন, 'কেউ যদি অনলাইনে ওষুধ বিক্রি করে, তাদের কাছে ড্রাগ লাইসেন্স আছে কি না জিজ্ঞেস করুন। ড্রাগ লাইসেন্স থাকলে তারা ওষুধ বিক্রি করতে পারবে। [হ্যাঁ] কিছু ভেষজ ফুড সাপ্লিমেন্ট আছে যেগুলো ওষধি গুণসম্পন্ন। আমরা একটা আইনের খসড়া তৈরি করছি। ওসব ওষুধকে আমরা আমাদের নিয়মনীতির আওতায় আনব। কেউ যদি ওষুধ বিক্রি করে—তা ভেষজ হোক বা ইউনানি—ড্রাগ লাইসেন্স না থাকলে তারা তা বিক্রি করতে পারবে না।'

ডা. সুষমা রেজার মতে, ওষুধ আইন দৃঢ়ভাবে প্রয়োগ করা হলেই এই কবিরাজ ও রাস্তার বিক্রেতারা যৌন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলার 'দুঃসাহস' করবে না।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.