বাঙালি খাবারে গভীর প্রভাব ফেলেছিলেন ঠাকুরবাড়ির একজন, তবে তিনি রবীন্দ্রনাথ নন

ফিচার

প্রিয়দর্শিনী চ্যাটার্জি, স্ক্রল
13 September, 2022, 10:15 pm
Last modified: 13 September, 2022, 11:18 pm
বিলেতি অতিথিরা যেন মাছের কাঁটার ঝঞ্ঝাট ছাড়াই মসলাদার খাবার উপভোগ করতে পারেন সেজন্যই শুরু হয় কাঁটা ছাড়া ইলিশ রান্নার ব্যবস্থার। জোড়াসাঁকোর প্রভাবশালী এ রান্নাঘরে দ্বারকানাথ আরেকটি সংযোজন এনেছিলেন, সেটি হলো মুসলিম খানসামা এবং ফরাসী পাচক নিয়োগ।

বাঙালি সংস্কৃতিতে এমন খুব কম বস্তুই আছে যার ওপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ছাপ পড়েনি। একাধারে কবি, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, দার্শনিক আমাদের এ বিশ্বকবি এমনকি খাবারেও তার স্বাক্ষর রেখে গেছেন।

ঠাকুরের ছিল উৎসাহী এক বিশ্বনাগরিক মন যা তাকে পৃথিবী ঘুরে দেখতে তাড়িত করেছিল। ছিল রন্ধনশিল্পের প্রতি তার বিশেষ আগ্রহও। রসুইঘরের প্রতি তার এ টানের সুবাদে তিনি বাঙালির খাদ্যাভ্যাসে যে প্রভাব ফেলেছিলেন তা ছিল সুদূরপ্রসারী। নতুন পদ যুক্ত করা কিংবা পুরোনো পদের নিত্যনতুন চর্চা ছিল তার পছন্দের কাজ।

ঠাকুরবাড়িতে এসে বাঙালি খাবারের বহু পদ নতুন রূপ পেয়েছে। এ বাড়ির নতুন নতুন মসলা আর সৃজনী রন্ধনকৌশলের ছাপ বসে গেছে বাঙালির খাদ্য তালিকায়।

তবে ভোজনরসিক রবিঠাকুর যতই রান্নার ফরমায়েশের বদল ঘটান না কেন, ঠাকুরবাড়ির রসুইঘরকে খ্যাতির এত উঁচুতে নিয়ে যাবার কৃতিত্ব রবীন্দ্রনাথের নয়, বরং তার ঠাকুরদা দ্বারকানাথ ঠাকুরের।

বাঙালি নবজাগরণের অন্যতম দূত দ্বারকানাথ ঠাকুর ছিলেন একজন পরিশ্রমী শিল্পোদ্যোক্তা। দেশ-বিদেশ ঘুরে শুধু ব্যবসায়িক ধ্যানজ্ঞান অর্জন করেননি, পশ্চিমা রান্নার ধরনও রপ্ত করে এসেছিলেন। সেটাকে তিনি কাজে লাগিয়েছিলেন ঠাকুরবাড়ির রান্নাঘরে। এর সুবাদে ঊনিশ শতকে তার রান্নাঘর এমন এক সমৃদ্ধ ভোজনশালায় পরিণত হয় যা পশ্চিমাদেরও মন জয় করে নিয়েছিল।

দ্বারকানাথ ১৮৪২ সালে বিলেত ভ্রমণের সময় সঙ্গে নিয়েছিলেন তিন হিন্দু ভৃত্য এবং একজন 'মুসলমান খানসামা'। তাদের হাতের রান্না খেয়ে লন্ডনের ভোজনরসিকদের একটি দল প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিল। ঠাকুরের খানসামা এতটাই খ্যাতি অর্জন করে বসেছিলেন যে তিনি বিলেতের বেশ কয়েক গৃহস্থে 'রন্ধন শিল্পবিদ্যা'র পাঠও দিয়েছিলেন। ঠাকুরবাড়ির রান্নার জনপ্রিয়তা দেশ ছাপিয়ে বিলেতেও এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে তা 'দ্বারকানাথ ব্যঞ্জন' (দ্বারকানাথ ডিশেস) নামে পরিচিতি লাভ করে।

তার মৃত্যুর পরেও 'দ্বারকানাথ ডিশেস'-এর সুনাম মুছে যায়নি। ভিক্টোরিয়ান সাহিত্যের লেখক জন প্লটজ তার বই 'পোর্টেবল প্রপার্টি: ভিক্টোরিয়ান কালচার অন দ্য ম্যুভ'-এ লিখেছেন, ঊনিশ শতকের মেমসাহেবরা ঔপনিবেশিক ভারতের সবকিছু পরিত্যাগ করলেও এ দেশীয় খাবার, মসলা আর কাশ্মীরি শাল ছাড়তে পারেননি। বহু ব্যঞ্জনের মাঝে যে উপকরণটি তারা বিলেতে ফেরত নিয়েছিলেন সেটি হলো 'প্রয়াত বাবু স্যার দ্বারকানাথের বিখ্যাত মসলাগুড়া'।

বিভিন্ন রান্না সম্পর্কে দ্বারকানাথ তার অভিজ্ঞতা ডায়েরিতে লিখে গেছেন। এক এন্ট্রিতে সিলনের (বর্তমান শ্রীলংকা) কিছু লাল মাছকে তুলনা করেছিলেন বাংলার কাতলা মাছের সাথে। আর ইংল্যান্ডের ফলমূলের প্রশংসা করতেন। পিচ (জামজাতীয় ফলবিশেষ), বরই, স্ট্রবেরি ছিল তার পছন্দের তালিকায়।

এসব ফল যে চিনি আর ক্রিম দিয়ে খেতে আরও বেশ লাগে তা-ও লিখতে ভুলেননি। আর বেশি টক লাগত বলে গুজবেরি আর কিশমিশ এ তালিকায় যুক্ত করেননি। তার ডায়েরিতে পাওয়া যায় গ্রীনিচে খাওয়া খাবারের বর্ণনা। সেবার তালিকায় ছিল ইল মাছের কাটলেট, ফ্রাইড ফ্লাউন্ডার, আরেকটা তরকারি যেটা 'খেতে ভালো ছিল না', চেরি টার্টস আর ছিল সিড পুডিং।

কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরির সামনে দ্বারকানাথ ঠাকুরের আবক্ষ মূর্তি। ছবি: অর্জুন স্বরূপ/উইকিমিডিয়া কমন্স ভায়া স্ক্রল ডটইন

প্রথাকে ভেঙে

তবে দ্বারকানাথের স্বতন্ত্র হওয়ার কারণ ছিল তার বেখেয়ালিপনা। জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির সবাই ছিল ধর্মপ্রাণ বৈষ্ণব। শুধু ব্রাহ্মণদের এ ঘরে প্রবেশের অনুমতি ছিল। আর তারা সবাই ছিল নিরামিষভোজী। এমনকি পেঁয়াজ এবং আদাও ছিল নিষিদ্ধ। তাদের পাঠুরিয়াঘাটার তুতো ভাই-বোনেরা 'মেছুয়াবাজারের গোঁড়া' বলে ব্যঙ্গ করত।

শুধু ঠাকুরবাড়ি এ গোঁড়ামির অংশ ছিল না। সে সময়টাতে খাবারের বেলায় গোত্রের ভেদাভেদ ছিল প্রখর, 'বিশুদ্ধতা' রক্ষার ধারণাটিও ছিল বেশ পাকাপোক্ত। ব্রাহ্মণ বাদে অন্য কারোর হাতের রান্না খাওয়াকে বিশাল পাপ বলে জ্ঞান করা হতো।

কিন্তু এসব প্রচলিত নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছিলেন আধুনিকচেতা দ্বারকানাথ। পরিবর্তনস্বরূপ তার রান্নাঘরে আসে মুসলিম খানসামা যাদের বাছাই করে দিয়েছিলেন তারই বন্ধু আরেক সমাজ সংস্কারক রাজা রামমোহন রায়। সময়ের চেয়ে আরেকটু এগিয়ে গিয়ে, দ্বারকানাথ মাংস খাওয়া শুরু করলেন।

তবে এ পথ মসৃণ ছিল না অবশ্যই। কৃষ্ণ কৃপালনীর 'দ্বারকানাথ ট্যাগোর: আ ফরগটেন পায়োনিয়ার' বইয়ে রামনাথের স্ত্রী বলেছেন 'যেবার প্রথম মাংস খেলেন, সেবার তারা (দ্বারকানাথ ও রামনাথ) বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলে। তবে জোর প্রচেষ্টার পরে অভ্যস্ত হতে পেরেছিলেন।'

অ্যালকোহল নিয়ে যে ট্যাবু ছিল সেটাও দ্বারকানাথই ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। তিনি খাবারের পরে ছোট্ট একটা গ্লাসে অল্প পরিমাণ ওয়াইন নিতেন। ওয়াইন যে তিনি খুব উপভোগ করতেন তা নয়, সমাজে বিরাজমান কুপ্রথা ভাঙাই ছিল তার লক্ষ্য।

তার এই পরিবর্তনের পেছন ছিল দুটি কারণ। প্রথমত ছিল তার উদীয়মান ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য। কয়লা খনির ব্যবসা থেকে ব্যাংকিং খাত, তার ব্যবসায়িক স্বার্থই তাকে মদ ও মাংসভোজী ইংরেজ সমাজে মিশে যেতে বাধ্য করেছিল। আর দ্বিতীয় কারণ ছিলেন তার বন্ধু রাজা রামমোহন রায়। আধুনিকীকরণ নিয়ে এই উভয় সমাজ সংস্কারকের মত ছিল একই। আধুনিকীকরণ হবে 'কলোনাইজার' এবং 'কলোনাইজড'র সংস্কৃতির সংমিশ্রণে।

সীমার চৌহদ্দিতে

দ্বারকানাথের প্রথা ভাঙার নিয়ম শুরু হয় রান্নাঘর থেকে। কিন্তু এ নিয়ম বেশিদূর আগাতে পারেনি। একটা গল্প ছিল এমন যে পিরালি ব্রাহ্মণ গোমাংস শোঁকার কারণে সামাজিক মর্যাদাচ্যুত হয়। সমাজচ্যুত হবার এ ঝুঁকি নেননি দ্বারকানাথ। তার অতিথিদের খাওয়ালেও নিজে কখনও খাননি। আর ওয়াইন আর মাংস যে জনসম্মুখে খেতেন তাও নয়। শুধু ইউরোপীয় অতিথি এবং বনেদি ভারতীয়দের বিনোদনের জন্য ১৮২৩ সালে কোলকাতার বেলগাছিয়ায় একটি আলাদা বাড়ি কিনেছিলেন।

বেলগাছিয়ায় তার এ ভিলাটি এতই চমৎকার ছিল যে কিশোরীচাঁদ মিত্র এটিকে কোলকাতার কেনিংস্টন নামে আখ্যা দেন। এ বাড়িতেই মিস ইডেনের জন্য একবার বল নাচ ও নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন দ্বারকানাথ। মিত্র তার বইয়ে লিখে গেছেন যে আলো, আয়না, মির্জাপুরি কার্পেট, রক্তিম ও সবুজ বর্ণের সিল্ক পর্দা, বিরল অর্কিডফুলে সাজানো কক্ষ- সবকিছু মিলিয়ে এক রূপকথার কোনো স্থানে পরিণত হয়েছিল সে বাড়িটি। আর খাবারগুলো ছিল অদ্বিতীয় এবং অতুলনীয়। তালিকায় অফুরন্ত ফরাসী এবং প্রাচ্যের খাবারের পাশাপাশি ছিল ইউরোপীয় ওয়াইন।

পোলাও আর কাবাব, খাবারের পদের যা-ই বদল ঘটুক, একটা জিনিস ছিল অপরিবর্তনীয়। তা হলো দ্বারকানাথের আতিথেয়তা। ঠাকুরবাড়ির তরুণ বংশধর শিক্ষাবিদ সুদৃপ্ত ঠাকুরের অনুমান, এ বাড়ির বিখ্যাত কাঁটা ছাড়া ইলিশের রান্না দ্বারকানাথের আমলেই তৈরি হয়।

বিলেতি অতিথিরা যেন মাছের কাঁটার ঝঞ্ঝাট ছাড়াই মসলাদার খাবার উপভোগ করতে পারেন সেজন্যই শুরু হয় এ ব্যবস্থার। জোড়াসাঁকোর প্রভাবশালী এ রান্নাঘরে দ্বারকানাথ আরেকটি সংযোজন এনেছিলেন; সেটি হলো মুসলিম খানসামা এবং ফরাসী পাচক নিয়োগ। ঠাকুরবাড়ির অনেক সদস্যের লেখাতে তাদের উল্লেখ পাওয়া যায়।

ব্যক্তিগত আক্রমণ

প্রচলিত নিয়মের চৌকাঠ পেরিয়ে যে দ্বারকানাথের কোনো সমালোচনার শিকার হতে হয়নি তা কী করে হয়! বেলগাছিয়া ভিলায় তার জাঁকজমকপূর্ণ 'বেখেয়ালি' জীবনধারন বেশ ব্যঙ্গ-কটাক্ষের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। একজন এমনও লিখেছেন যে 'বেলগাছিয়া তথা ছুরি-কাঁটা চামচের খনখন শব্দ কিংবা খাবারের আনন্দ সম্পর্কে আমরা কী জানব! এসব তো শুধু ঠাকুর আর তার কোম্পানি জানবে!' আরেকজনের লেখা ছিল আরও শ্লেষাত্মক। লেখাটা ছিল এরকম: 'বেশ্যাবাড়িতে হেম্প পুড়িয়ে মেছুয়াবাজারে মহোৎসব চলে।'

দ্বারকানাথ উইলিয়াম কারকে পার্টনার করে গড়েছিলেন প্রথম অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান মার্সেন্টাইল কোম্পানি 'কার, ঠাকুর এন্ড কোম্পানি'। শুধু ঠাকুর নিজে নন, অ্যালকোহল আমদানির উদ্দ্যেশ্যে গড়া তার এ কোম্পানিও ছিল বিদ্রুপের লক্ষ্যবস্তু।

বেলগাছিয়ার দিকে প্রতিনিয়ত আসতে থাকা ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ নিয়ে ব্লেয়ার বি কিং তার ১৯৭৬ সালে লেখা 'পার্টনার ইন এম্পায়ার: দ্বারকানাথ ট্যাগোর অ্যান্ড দ্য এইজ অভ এন্টারপ্রাইজ ইন ইস্টার্ন ইন্ডিয়া' বইয়ে লিখছেন, তীর্যক মন্তব্যগুলো স্বয়ং দ্বারকানাথের দিকে না আসলেও আসত তার কোম্পানির দিকে। এক সমালোচক লিখেছিলেন, 'আমরা কি আর ওয়াইনের গুনাগুণ নিয়ে জানি! জানে তো ঠাকুর কোম্পানি!' আরেকজন লিখেছেন, 'ধন্য কোলকাতা, ধন্য শনিবার! ওই বোতল ধরাতে যে কী সৌন্দর্য!'

কৃপালনীর মতে উনিশ শতকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মকর্তাদের সাথে কোলকাতার বাবুদের বন্ধুত্ব ছিল স্বাভাবিক। এমনকি দুর্গা পূজার মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তাদের মাংস ও অ্যালকোহল পরিবেশন করাও বেশ সাধারণ ব্যাপার ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও দ্বারকনাথের মতো আর কেউ সমালোচনার তোপের মুখে পড়েননি। এ থেকে ধরে নেওয়া যায় প্রকাশ্যে ধর্মান্ধতাকে উপহাস এবং উদারবাদের নীতি অবলম্বনের জন্যই তিনি বেশি বিদ্রুপের লক্ষ্যবস্তু ছিলেন।

সমালোচনার তীরগুলো এতই তীব্র ছিল যে সেগুলো তার ব্যক্তিগত জীবনকেও ছাড় দেয়নি। দ্বারকানাথের বিলাসী, অধার্মিক জীবনযাপন তার ধার্মিক হিন্দু স্ত্রী দিগম্বরী মেনে নিতে পারেননি বলে তার সাহচর্য ত্যাগ করেছিলেন।

সমসাময়িক হিন্দুরা তার সান্ধ্য ভোজোৎসবকে যেমন মেনে নিতে পারেনি, তার ইউরোপ ভ্রমণকেও তেমনি মেনে নিতে পারেনি। এসব প্রতিকূলতাই তাকে বিলেতিদের সাথে মিশতে বাধ্য করেছিল। কোলকাতা সমাজের বাবু, পণ্ডিত, এমনকি পিরালি ব্রাহ্মণ ও তার নিজের গোত্রের লোকের তীব্র সমালোচনার মুখেও দ্বারকানাথ তার অবস্থানে অটুট ছিলেন।

শেষ ভ্রমণ

১৮৪৫ সালে আবার ইংল্যান্ড যান দ্বারকানাথ। অংশ নেন তারই সম্মানে সেখানকার উচ্চবিত্তদের আয়োজনে অসংখ্য নৈশভোজে। পরের বছরের জুন মাসের ৩০ তারিখে ডাচেস অভ ইনভার্নেস এক নৈশভোজের আয়োজন করেন। তার পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে এক সপ্তাহের মাথায় মাত্র একান্ন বছর বয়সে মৃত্যবরণ করেন।

তারই নাতনীর কন্যা প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবী 'আমিষ ও নিরামিষ আহার' নামে একটি বই লেখেন। প্রজ্ঞাদেবী তার ভোজনরসিক প্রপিতামহের সম্মানে একটি খাবারের নাম রাখেন 'দ্বারকনাথ ফিরনি পোলাও'।


সূত্র: স্ক্রল ডট ইন

ইংরেজি থেকে অনুবাদ: নীতি চাকমা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.