মঙ্গলের বাতাস থেকে অক্সিজেন তৈরি করেছে নাসা  

ফিচার

টিবিএস ডেস্ক
23 April, 2021, 02:30 pm
Last modified: 23 April, 2021, 02:37 pm
ডিভাইসটি মঙ্গলের বায়ু থেকে ৫ গ্রাম অক্সিজেন উৎপাদন করে, যা একজন নভোচারীর প্রায় ১০ মিনিটের শ্বাসের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের সমপরিমাণ।

মঙ্গলগ্রহের আকাশে প্রথমবারের মতো হেলিকপ্টার উড্ডয়নের পর আরো একটি বিপ্লবসম ক্ষমতা অর্জন করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। বুধবার সংস্থাটি জানিয়েছে: চলতি মিশনে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই অক্সাইডকে বিশুদ্ধ, শ্বাসযোগ্য অক্সিজেনে রূপান্তরিত করেছে তারা।

মঙ্গলগ্রহের অতি-পাতলা বাতাস থেকে অভূতপূর্ব ভাবে অক্সিজেন নিষ্কাশন করেছে ছয় চাকার পরীক্ষামূলক সাইন্স-রোভার পারসেভারেন্সের সাথে থাকা এক ডিভাইস। পৃথিবী থেকে সাত মাসের যাত্রার পর ১৮ ফেব্রুয়ারি লাল গ্রহে অবতরণ করেছিল এই সাইন্স-রোভার। 

ডিভাইসটি মঙ্গলের বায়ু থেকে ৫ গ্রাম অক্সিজেন উৎপাদন করে, যা একজন নভোচারীর প্রায় ১০ মিনিটের শ্বাসের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের সমপরিমাণ।

নাসা জানিয়েছে, পারসেভারেন্সের যে যন্ত্রাংশটি কার্বন ডাই-অক্সাইডকে অক্সিজেনে রূপান্তরিত করেছে, তার নাম মক্সি, এটি 'মার্স অক্সিজেন ইন-সিটু রিসোর্স ইউটিলাইজেশন এক্সপেরিমেন্ট' এর সংক্ষিপ্তরূপ ।

ডিভাইসটির প্রাথমিক উৎপাদন সামান্য হলেও এটা মানুষের জন্য অনেক বড় কৃতিত্বের বিষয়।

এই প্রথম অন্য গ্রহের পরিবেশ থেকে কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ পরীক্ষামূলকভাবে নিষ্কাশন করা হয়েছে, যা মানুষের সরাসরি ব্যবহারযোগ্য ।

তবে নাসার স্পেস টেকনোলজি মিশন ডিরেক্টরেটের টেকনোলজি ডেমোনস্ট্রেশনের পরিচালক ট্রুডি কর্টেস এক বিবৃতিতে বলেন, "মক্সিই কেবলমাত্র অন্য গ্রহে অক্সিজেন উৎপাদনের প্রথম যন্ত্র নয়।"  

মক্সিকে ভবিষ্যতের মিশনগুলিতে অন্য গ্রহের ভূমিতে বেঁচে থাকতে সহায়তা করার প্রথম প্রযুক্তি বলে অভিহিত করেছেন তিনি।

মঙ্গলের বাতাসের প্রায় সবটাই কার্বন ডাই অক্সাইড, প্রায় ৯৬ শতাংশ। অন্যদিকে মঙ্গলের বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ মাত্র শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ। পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ ২১ শতাংশ।

নাসা জানিয়েছে, মক্সিকে প্রতি ঘন্টায় ১০ গ্রাম পর্যন্ত অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

বিভিন্ন অবস্থা ও গতিতে আগামী দুই বছরে কমপক্ষে আরও নয়বার রোভারটি চালানোর পরিকল্পনা করেছেন বিজ্ঞানীরা ।

মঙ্গলগ্রহে নাসার একটি ক্ষুদ্র রোবট হেলিকপ্টারের সফল উড্ডয়ন এবং অবতরণের মধ্য দিয়ে অন্য গ্রহে ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা অর্জনের ঠিক একদিন পরেই প্রথমবারের মতো ভিনগ্রহের বাতাস থেকে অক্সিজেন রূপান্তর করার সফলতা যোগ হলো মানব ইতিহাসে।   

পারসেভারেন্সের সাথে মক্সির মতো টুইন-রোটার চপার মঙ্গলগ্রহে যাত্রা শুরু করে, যার প্রাথমিক লক্ষ্য প্রাচীন জীবাণুগুলির জীবাশ্মচিহ্নের অনুসন্ধান করা, কোটি কোটি বছর আগে থেকে যা হয়তো মঙ্গলগ্রহের বুকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
 

  • সূত্র- রয়টার্স 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.