প্রিয়জনকে শেষ বিদায় জানানোর পথে অন্তরায় করোনাভাইরাস

ফিচার

06 April, 2020, 10:35 am
Last modified: 06 April, 2020, 10:47 am
ভাইরাস থেকে সকলকে সুরক্ষিত থাকতে হবে, এটাই এখনকার বাস্তবতা। ফলে খুব অসুস্থ এবং মৃত্যু পথযাত্রী ব্যক্তিরাও তাদের স্বজনদের পাশে পাচ্ছেন না।

প্রিয়জনকে হারানো সকলের জন্যেই কঠিন সময়ের সূচনা করে। কিন্তু চিরতরে বিদায় নেওয়া বন্ধু-স্বজনকে শেষ বিদায় জানানোর দায়িত্বকে আরও কঠিন আর বেদনাদায়ক করছে করোনাভাইরাস।

ভাইরাস থেকে সকলকে সুরক্ষিত থাকতে হবে, এটাই এখনকার বাস্তবতা। ফলে খুব অসুস্থ এবং মৃত্যু পথযাত্রী ব্যক্তিরাও তাদের স্বজনদের পাশে পাচ্ছেন না।

আবার নিকটজনের মৃত্যুর পর সাধারণত যেভাবে তার শেষকৃত্যানুষ্ঠান করা হয়ে হতো, সেভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্ত্যষ্টিক্রিয়া একটি সামাজিক অঙ্গিকার, মৃতের প্রতি জীবিতের এক প্রকার দায়বদ্ধতা, আবার এটি সামাজিক সৌহার্দ্য প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম। খবর বিবিসির। 

করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে বাধ্য হচ্ছে পুরো পৃথিবীর মানুষ। এই অবস্থায় শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানেও লোকে একত্রিত হতে পারছেনা। 

তারপরেও প্রিয়জনকে স্মরণ করতে, তার জন্য শোক করার জন্য অর্থবহ কিছু উপায় রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের নর্থফোক এন্ড নরউইচ ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ আইক স্কিনডারের ৯৯ বছর বয়সী দাদাকে যখন বক্ষব্যাধির সমস্যা নিয়ে গত সপ্তাহে হাসপাতালে ভর্তি করা হলো, তখন তিনি জানতেন যে, তার দাদা হয়তো আর বাড়িতে ফিরে আসবেন না। কারণ তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। 

'সাধারণ সময় হলে হয়তো আমাদের কেউ তাঁর সঙ্গে যেতাম। সেখানে হয়তো আমরা তার ব্যাপারে আলোচনা করতাম এবং পরিবারের সদস্যদের জানাতাম। কিন্তু এখন তার বদলে তার সঙ্গে এখন আমাদের রিমোট যোগাযোগ করতে হয়েছে' বলে জানান তিনি।

তিনি বলছিলেন, লন্ডন রয়েল ফ্রি হাসপাতাল খুব ভালো একটি হাসপাতাল, কিন্তু টেলিফোনে কথা বলার জন্য সেখানে খুব কম সময় পাওয়া যায়।

সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, হাসপাতালে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি দেখা করতে পারবেন।

কিন্তু তাকেও মাস্কসহ সুরক্ষা সরঞ্জাম পরতে হবে।

এরপর পরবর্তী ১৪দিন তাকে আইসোলেশনে থাকতে হবে। তিন ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট, স্কিনডারের খালা তাকে দেখতে গিয়েছিলেন।

'একপর্যায়ে আমরা বুঝতে জানতে পারলাম, সেখানে একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু সেটা জানার পরেও আমার ওই খালা সেখানে অংশ নিতে পারেননি, কারণ তখন দাদাকে দেখে আসার কারণে তিনি আইসোলেশনে রয়েছেন।'

স্কিনডার বলেন, 'যখন দাদার মৃত্যু হয়, তখন পরিবারের সবাই বুঝতে পারছিলেন যে, এখানে নতুন করে আর কিছু করার নেই।'

তবে সবচেয়ে দুঃখের বিষয়টি ছিল এরকম একটি সময়েও পরিবারের সদস্যদের একত্রিত হতে না পারা।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.