ই-সিগারেটে হাজারো রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতি পেলেন গবেষকরা

ফিচার

টিবিএস ডেস্ক
10 October, 2021, 02:25 pm
Last modified: 10 October, 2021, 02:33 pm
গবেষক দল ই-সিগারেটে প্রায় দুই হাজার রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতি পান। এরমধ্যে শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত রাসায়নিকসহ কীটনাশক এবং বিষক্রিয়া ও শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে এমন সব উপাদান পাওয়া গেছে।

ই-সিগারেটে থাকে হাজারো অজানা রাসায়নিক উপাদান যা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকাশ করে না। ক্যাফেইনের মতো উপাদান ছাড়াও এ ধরনের সিগারেটে  শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি পেয়েছেন জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।

খাবার ও তরল বর্জ্যে কেমিক্যাল শনাক্তকরণের অত্যাধুনিক ফিংগারপ্রিন্টিং পদ্ধতি এই প্রথমবার ই-সিগারেটের মতো ভেপিং তরল পরীক্ষায় ব্যবহার করেছেন গবেষকরা। সম্প্রতি 'কেমিক্যাল রিসার্চ ইন টক্সিকোলজি' সাময়িকীতে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণায় বলা হয়, ই-সিগারেটের ক্ষতি সম্পর্কে এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গভাবে জানা সম্ভব হয়নি। সুতরাং, যারা এসব ব্যবহার করছেন তারা মারাত্মক ক্ষতিকর সব কেমিক্যাল গ্রহণের মাধ্যমে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন।

"বিভিন্ন গবেষণায় সাধারণ সিগারেটের তুলনায় ই-সিগারেটে ক্ষতিকর উপাদান কম পাওয়া গেছে। সমস্যা হলো ই-সিগারেটে শনাক্ত করা যায় না এমন বহু বাড়তি উপাদান থাকে। এসব উপাদান গ্রহণে সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে, যা আমরা এখন পর্যন্ত জানি না," বলেন ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথ এবং হুইটিং স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এনভায়রনমেন্টার হেলথ অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সহকারী অধ্যাপক কারসটেন প্রাসে।

পূর্ববর্তী গবেষণাগুলো সিগারেটে যেসব ক্ষতিকর পদার্থ থাকে, ই-সিগারেটে কেবল সেসব উপাদানের অনুসন্ধান করেছে। কিন্তু এই গবেষণায় গবেষকরা কোন উপাদান শনাক্ত করতে হবে তা আগে থেকে নির্ধারণ করেননি। ফলে ভেপিং তরল এবং অ্যারাসল দুক্ষেত্রেই বিভিন্ন স্তরের কেমিক্যালের উপস্থিতি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। 

গবেষক দল ই-সিগারেটে প্রায় দুই হাজার রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতি পান। তবে, এর অধিকাংশই পৃথকভাবে শনাক্ত করা যায়নি। এর মধ্যে ছয়টি উপাদান ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে বলে গবেষকদের ধারণা, যার তিনটি আগে কখনো ই-সিগারেটে পাওয়া যায়নি। 

প্রধান গবেষক মিনা তেহরানি চারটি পণ্যের মধ্যে দুটোতে উল্লেখযোগ্য মাত্রার ক্যাফেইন পাওয়ায় অবাক হয়েছেন। এর আগে শুধু কফি বা চকলেট ফ্লেভারের সিগারেটগুলোতেই ক্যাফেইন পাওয়া গিয়েছিল।

ক্যাফেইন ছাড়াও তার দল শিল-কারখানায় ব্যবহৃত তিনটি রাসায়নিক উপাদান ও একটি কীটনাশকের উপস্থিতি পান। সিগারেটের দুটো ফ্লেভার থেকে বিষক্রিয়া ও শ্বসনতন্ত্রের জটিলতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনাও পাওয়া যায়।

"মানুষের জানা উচিত যে ভেপিংয়ের মাধ্যমে তারা জটিল সব রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণ গ্রহণ করছে। এর মধ্যে অনেক উপাদান সম্পর্কেই আমাদের কোনো ধারণা নেই," বলেন প্রাসে।

"ভেপিংকে যেভাবে সিগারেটের মাধ্যমে ধূমপানের চেয়ে স্বাস্থ্যকর হিসেবে প্রচার করা হয়, তা নিয়ে আমার আপত্তি আছে। আমার মতে, এখনও এই দাবি করার মতো যথেষ্ট তথ্য আমাদের হাতে নেই," বলেন তিনি।

  • সূত্র: জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটি ওয়েবসাইট

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.