ব্যাট হাতে এবাদতের দৃঢ়তা, শরিফুলের ঝড়; বাংলাদেশ ২৩৪
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে শেষ থেকে যেন বাংলাদেশের লড়াই শুরু হলো। তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস ছাড়া বাংলাদেশের সব ব্যাটসম্যান যখন ব্যর্থ, বোলাররা ভাবলেন চেষ্টা করে দেখা যাক। তাতে সফলও এবাদত হোসেন, শরিফুল ইসলামরা। শেষের অংশটা বড় করতে দৃঢ়তা দেখিয়ে ব্যাট চালিয়ে গেলেন এবাদত, আর তাকে উল্টো পাশে রেখে টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং করলেন তরুণ পেসার শরিফুল।
সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছে ২৩৪ রানে। এর মধ্যে দুই পেসার এবাদত ও শরিফুলের অবদান ৪৭ রান। শরিফুল ২৬ ও এবাদত ২১* রান করেন। যা দুজনেরই টেস্টের সেরা ইনিংস। তাদের জুটি থেকে আসে ইনিংসের তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ রান। আরেক পেসার খালেদ আহমেদ করেন ১ রান। এই ৪৮ রান বাদ দিলে বাংলাদেশের বাকি ৮ ব্যাটসম্যান মিলে করেছেন ১৮৬ রান।
এর মধ্যে লিটন কুমার দাস ও তামিম ইকবালের অবদান বেশি। বাকিদের কেউ-ই ৩০ এর বেশি করতে পারেননি। লিটন ৫৩ ও তামিম ৪৬ রান করেন। এ ছাড়া মাহমুদুল হাসান জয় ১০, নাজমুল হোসেন শান্ত ২৬, ৮ বছর পর টেস্ট খেলতে নামা এনামুল হক বিজয় ২৩, অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ৮, নুরুল হাসান সোহান ৭ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ৯ রান করেন। ১৪তম টেস্ট হাফ সেঞ্চুরির ৫৩ রানের ইনিংস দিয়ে চলতি বছরের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১ হাজার আন্তর্জাতিক পূর্ণ করেছেন লিটন।
এই ম্যাচেও বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন আলজারি জোসেফ। প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসেই ৩টি করে উইকেট নেওয়া ডানহাতি এই ক্যারিবীয় পেসার এবারও নেন ৩টি উইকেট। জেডেন সিলসের উইকেটও ৩টি। ২টি করে উইকেট পান অভিষিক্ত অ্যান্ডারসন ফিলিপ ও কাইল মেয়ার্স। কেমার রোচ কোনো উইকেট পাননি।
২৩৪ রানেই ইনিংস শেষ হলেও শুরুটা একেবারে মন্দ ছিল না টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশের। শুরু দেখে মনে হয়েছিল প্রথম টেস্টের ট্রমা থেকে বেরিয়ে এসেছে সফরকারীরা। উদ্বোধনী জুটিতে তামিমকে দারুণ সাবলীল দেখিয়েছে। জয় থিতু হতে না পারলেও মানিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু পারেননি জয়। দলীয় ৪১ রানে অ্যান্ডারসন ফিলিপের বলে উপড়ে যায় তার স্টাম্প।
দারুণ খেলতে থাকা তামিম অনেক বাইরের বল খেলতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় পাঁকান। আলজারি জোসেফের বাইরে করা বলে ব্যাট চালালে জার্মেইন ব্ল্যাকউডের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ফেরার আগে ৬৭ বলে ৯টি চারে ৪৬ রান করেন অভিজ্ঞ এই ওপেনার। ৬৮ রানে দুই নম্বর উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়েন শান্ত ও বিজয়। চাপ সামলে ভালোই খেলছিলেন তারা। বিজয়কে বিদায় করে তাদের ৩৯ রানের জুটি ভাঙেন ফিলিপ। ফুট ওয়ার্কের গড়বড়ে এলবিডব্লিউ হন বিজয়। পরের ওভারেই শান্ত বিদায় নেন। মেয়ার্সের দারুণ এক লেংন্থ বলে এলবিডব্লিউ হন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানও।
অধিনায়ক সাকিব দ্রুত রান তুলে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি। জেডেন সিলসের বলে এনসাইড এজে বোল্ড হন তিনি। আলজারি জোসেফের লেগ স্টাম্প বরাবর বাউন্সারে অহেতুক ব্যাট চালিয়ে নিজের উইকেটটি বিলিয়ে দিয়ে আসেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান সোহান। মিরাজ পয়েন্টে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন। লিটন পুল খেলতে গিয়ে মিড উইকেটে ধরা পড়েন। শেষ দিকে দৃঢ়তা দেখিয়ে ৩৫ বলে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন এবাদত। শরিফুল মারকুটে মেজাজে ১৭ বলে ৫টি চারে ২৬ রান করেন।