না ফেরার দেশে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডের পেসার সামিউর রহমান
খেলা
অনেক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। দেড় বছর ধরে কখনও হাসপাতাল, কখনও বাড়ি; এভাবেই কেটেছে দিন। গত কিছুদিন ধরে ছিল শঙ্কা, উৎকণ্ঠা। জীবন-মরনের সন্ধিক্ষণে কেটেছে সময়। অবশেষে জীবন যুদ্ধে হার মানতেই হলো। না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক পেসার ও বিসিবির ম্যাচ রেফারি সামিউর রহমান সামি।
মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে সামিউর রহমান শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। সাবেক এই ক্রিকেটারের মৃত্যুর খবর জানিয়ছেন তার ছেলে রিয়াজুর রহমান রোহান। তার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সামিউরের জানাজার নামাজ আজ বাদ যোহর ধানমন্ডির ঈদগাহ মসজিদ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
২০২০ সালের শুরু দিকে সামিউরের অসুস্থতার শুরু। এর অনেক আগে থেকেই ডায়াবেটিস ছিল তার। সেখান থেকেই তার শরীরে নানা জটিলতা দেখা দেয়। ২০২০ সাল থেকেই বিছানায় পড়ে ছিলেন তিনি। গত কয়েক মাসে অবস্থা আরও খারাপের দিকে যায়। সামিউরের মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ে এবং দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে প্রবলভাবে। এই বছরের শুরুর দিকে একবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় তার, দুই সপ্তাহের মধ্যে দুই দফায় হয় ব্রেন স্ট্রোকও।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের শুরুর এই সেনানী বেশ আগেই চলাচলের শক্তি হারান। পরে এক পর্যায়ে হারান বাকশক্তিও। পরিবার থেকে দেশে-বিদেশে অনেক চিকিৎসার চেষ্টা করা হলেও রোগের নিরাময় হবে না বলে জানান চিকিৎসকরা। গত ফেব্রুয়ারিতে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয় হয়। তবে পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আবার হাসাপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু এবার আর বাড়ি ফেরা হলো না তার, পাড়ি জমাতে হলো অনন্ত অসীমে।
সত্তুর, আশির দশকের খ্যাতিমান ক্রিকেটার ছিলেন সামিউর। নিয়ন্ত্রিত লাইন, লেংন্থের সঙ্গে প্রধান অস্ত্র হিসেবে করতেন আউট সুইঙ্গার। দারুণ সম্ভাবনাময় হওয়ার পরও অবশ্য তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার বড় হয়নি। বাংলাদেশের হয়ে ২টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। শ্রীলঙ্কায় ১৯৮৬ এশিয়া কাপ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের অভিষেক। প্রথম এই ওয়ানডেতে পেস বিভাগ সামলানোর দায়িত্বে গোলাম নওশের প্রিন্সের সঙ্গে ছিলেন সামিউর। পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও খেলেন তিনি, জাতীয় দলে যা ছিল তার দ্বিতীয় ও শেষ ওয়ানডে।
ঘরোয়া ক্রিকেটে দীর্ঘ সময় ধরে খেলেছেন সামিউর। আবাহনী, মোহামেডান, আজাদ বয়েজ, ব্রাদার্স ইউনিয়নসহ আরও কয়েকটি ক্লাবের হয়ে ২০ বছর ধরে খেলেছেন তিনি। খেলোয়াড়ী জীবন শেষে ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক আম্পায়ারিং করেন সামিউর। এরপর অসুস্থতার আগ পর্যন্ত বিসিবির ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব পালন করেন দেশের ক্রিকেটের শুরুর দিকের এই সেনানী।
Comments
While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.