শেষ রক্ষা হলো না, ইনিংস ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ

খেলা

টিবিএস রিপোর্ট
08 December, 2021, 11:00 am
Last modified: 08 December, 2021, 06:45 pm
পাকিস্তান একবার ব্যাটিং করে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশকে দুইবার অল আউট করল, ইনিংস ব্যবধানে হারল মুমিনুল হকের দল।

বৃষ্টিতে আড়াই দিনেরও বেশি সময় খেলা হয়নি। প্রথম তিন দিনে খেলা হয় মাত্র ৬৩.২ ওভার। চতুর্থ দিন বেলা ১০টা ৫০ মিনিটে খেলা শুরুর হওয়ার পর আর বাধার তৈরি হয়নি। আর তাতেই কোণঠাসা বাংলাদেশ। পাকিস্তান একবার ব্যাটিং করে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশকে দুইবার অল আউট করল। দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৫ রানে অলআউট হয়ে ইনিংস ও ৮ রানের হার মেনে নিলো বাংলাদেশ। এই হারে দুই ম্যাচের সিরিজ হোয়াইটওয়াশ হলো স্বাগতিকরা। 

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেটিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জেতা পাকিস্তান ঠিক মতো ব্যাটিং করতে পারেনি। বৃষ্টির কারণে তিন দিন ধরে ব্যাটিং করতে হয় তাদের। ৪ উইকেটে ৩০০ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে সফরকারীরা। ফাওয়াদ ৫০ ও রিজওয়ান ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন।এর আগে আবিদ আলী ৩৯, আবদুল্লাহ শফিক ২৫, আজহার আলী ৫৬ ও বাবর আজম ৭৬ রান করেন। বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ২টি এবং খালেদ আহমেদ ও এবাদত হোসেন একটি করে উইকেট নেন।

পাকিস্তানের ডানহাতি অফ স্পিনার সাজিদ খানের স্পিন তোপে মাত্র ৮৭ রানেই প্রথম ইনিংস শেষ হয় বাংলাদেশের। সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাকিদের কেউ-ই দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। 

বাংলাদেশের পাঁচজন ব্যাটসম্যান রানের খাতাই খুলতে পারেননি। তারা হলেন অভিষিক্ত মাহমুদুল হাসান জয়, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ ও এবাদত হোসেন। এ ছাড়া সাদমান ইসলাম অনিক ৩, মুমিনুল হক ১, মুশফিকুর রহিম ৫ ও লিটন কুমার দাস ৬ রান করেন। ম্যাচসেরা সাজিদ খানের শিকার ৮ উইকেট, এটাই তার টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং। শাহিন আফ্রিদি নেন একটি উইকেট।

৮৭ রানে অলআউট হয়ে ফলো অনে পড়ে বাংলাদেশ। ইনিংস হার এড়াতে দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৩ রান করতে হতো মুমিনুল হকের দলকে। কিন্তু ২০৫ রানে থামে বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন সাকিব। এ ছাড়া মুশফিক ৪৮, লিটন ৪৫ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ১৪ রান করেন। বাকিদের কেউ দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেননি। এই ইনিংসে সাজিদ ৪টি উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পান শাহিন আফ্রিদি ও হাসান আলী।  

 

সাকিবের বিদায়ে হারের মুখে বাংলাদেশ

সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে মিরপুর টেস্ট বাঁচানোর স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমকে ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেট উপহার দেওয়া মিরাজের বিদায়ে সেই স্বপ্নে ধাক্কা লাগে। এরপর সাকিব আল হাসানের স্টাম্প উপড়ে নিলেন সাজিদ খান। ৬৩ রান করে সাকিব ফেরার পর হারের শঙ্কা বাড়ল বাংলাদেশের। 

দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৮ ওভারে ২০৪ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ইনিংস হার এড়াতে ৯ রান দরকার বাংলাদেশের, হাতে দুই উইকেট। দিনের খেলা ১২ ওভার থাকায় দুই উইকেট নিয়ে এই পথ পাড়ি দেওয়াটা কঠিনসাধ্যই ঘরের মাঠের দলটির জন্য।   

সাকিবের হাফ সেঞ্চুরি

পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে দলের দুঃসময়ে ব্যাট হাতে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ বাঁচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি। এ পথে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৬তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৩ ওভার শেষে ৬ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৮৩ রান। সাকিব ৫১ ও মিরাজ ৯ রানে ব্যাটিং করছেন।  

থামলেন মুশফিক, ম্যাচ বাঁচাতে পারবে বাংলাদেশ?

শুরুর দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে লিটন কুমার দাসের সঙ্গে ৭৩ রানের জুটি গড়ে তোলেন মুশফিকুর রহিম। এরপর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে জুটি গড়ে তোলেন অবিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। কিন্ত রান আউটে কাটা পড়ে বিদায় নিতে হলো মুশফিককে। ফেরার আগে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৪৮ রান করেন। 

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে উইকেটে যোগ দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই জুটিই বাংলাদেশের শেষ ভরসা। ম্যাচ বাঁচাতে হলে সাকিব-মিরাজকেই যা করতে হবে। ৫৪ ওভার শেষে ৬ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৫০ রান। সাকিব ২৬ ও মিরাজ ২ রানে ব্যাটিং করছেন। ইনিংস হার এড়াড়ে আরও ৫১ রান করতে হবে বাংলাদেশকে।    

লিটনের বিদায়, ম্যাচ বাঁচানোর চেষ্টায় মুশফিক-সাকিব

চরম হতাশার শুরুর পর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাস। ২৫ রানে ৪ উইকেট হারানো দলকে তারা ৯৮ রান পর্যন্ত পৌঁছে দেন। লিটনের বিদায়ে ভেঙেছে এই জুটি। ফেরার আগে ৪৫ রান করেন তিনি। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে উইকেটে যোগ দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। তাদের ব্যাটে ম্যাচ বাঁচানোর চেষ্টায় বাংলাদেশ। 

৪৭ ওভার শেষে ৫ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৩৬ রান। মুশফিক ৪০ ও সাকিব ২২ রানে ব্যাটিং করছেন। ইনিংস হার এড়াতে আরও ৭৭ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। আর ম্যাচ বাঁচাতে চাইলে ৫ উইকেটে শেষ দিনের বাকিটা সময় পার করতে হবে মুমিনুল হকের দলকে।     

মুশফিক-লিটনে প্রতিরোধের চেষ্টা

মিরপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৮৭ রানেই অলআউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও দুঃস্বপ্নের শুরু হয় বাংলাদেশের। ফলো অনে পড়ে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ ২৫ রানের মধ্যেই চার উইকেট হারিয়ে ফেলে। দিক হারা দলকে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও স্বস্তিতে রেখেছেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাস। 

মুশফিক-লিটনের ব্যাটে ২৩ ওভারে ৭২ রান তুলে লাঞ্চে গেছে বাংলাদেশ। ৪৭ রানের জুটি হয়েছে তাদের। মুশফিক ১৬ ও লিটন ২৭ রানে অপরাজিত আছেন। পাকিস্তানের দুই পেসার শাহিন আফ্রিদি ও হাসান আলী ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। ইনিংস হার এড়াতে বাংলাদেশকে আরও ১৪১ রান করতে হবে, কিংবা ড্র করতে কাটিয়ে দিতে হবে পঞ্চম দিনের বাকিটা সময়। 

দ্বিতীয় ইনিংসেও উইকেট বৃষ্টি, ২৫ রানেই নেই চার উইকেট

পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে ধুঁকে ধুঁকে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ ৮৭ রানেই অলআউট হয়ে যায়। ফলো অনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছে ঘরের মাঠের দলটি। এই ইনিংসেও ভাগ্য বদলায়নি তাদের, শুরু হয়ে গেছে উইকেট বৃষ্টি।

মাত্র ২৫ রান তুলতেই চার উইকেট হারিয়ে বসেছে বাংলাদেশ। জাতীয় দলের হয়ে প্রথম টেস্ট খেলতে নামা মাহমুদুল হাসান জয় প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ রান করেই ফিরে গেছেন। আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিকও ব্যর্থ হয়েছেন, ২ রান করে থেমেছেন তিনি।

অধিনায়ক মুমিনুল হকও পারেননি দলের বিপদের সময়ে ব্যাট চালাতে। ৭ রান করে পাকিস্তান পেসার হাসান আলীর শিকারে পরিণত হয়েছেন তিনি। ৬ রান করে বিদায় নিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্তও। প্রথম ইনিংসে সাজিদ খানের স্পিন ঘূর্ণিতে অসহায় আত্মসমর্পণ করা বাংলাদেশ এবার পাকিস্তানের পেস আক্রমণের বিপক্ষে ধুঁকছে। হাসান আলী ও শাহিন আফ্রিদি ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। 

নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে উইকেটে যোগ দিয়েছেন লিটন কুমার দাস। ৮.১ ওভারে ৪ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৫ রান। ইনিংস হারের হাত থেকে বাঁচতে এই ইনিংসে অন্তত ২১৩ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। তবে এই রান তোলা যে অনেক দূরের পথ, সেটা বলাই বাহুল্য। তাই বাংলাদেশ যে হারের পথে হাঁটছে, সেটা বলাই যায়। 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.