লা লিগায় গোল-লাইন প্রযুক্তি নেই যে কারণে

খেলা

মোস্তাফিজুর রহমান প্রান্ত
22 April, 2024, 08:30 pm
Last modified: 23 April, 2024, 05:53 pm
এই গোল-লাইন প্রযুক্তিটা আসলে কী? এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে খরচ হয় কত? ইউরোপের নামি-দামি সব লিগে যেখানে এই প্রযুক্তি আছে, সেখানে লা লিগায় কেন নেই?

এল-ক্লাসিকো মানেই রোমাঞ্চে ভরপুর, উত্তেজনায় ঠাঁসা এক ম্যাচ। এমন ম্যাচে রেফারির একটি বাজে সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারে গোটা চিত্র। রিয়াল মাদ্রিদের ৩-২ গোলে জেতার দিনে গোল-লাইন প্রযুক্তি না থাকার কারণে বার্সেলোনার একটি গোলের আবেদন নাকচ করেন রেফারি। আর তা নিয়ে এখন সরগম ফুটবল দুনিয়া।

কিন্তু এই গোল-লাইন প্রযুক্তিটা আসলে কী? এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে খরচ হয় কত? ইউরোপের নামি-দামি সব লিগে যেখানে এই প্রযুক্তি আছে, সেখানে লা লিগায় কেন নেই? 

ম্যাচের সময় বল পুরোপুরিভাবে গোল-লাইন অতিক্রম করেছে কি না তা তাৎক্ষণিকভাবে নির্ণয় করে এই গোল-লাইন প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে বলগুলোয় একটি চিপ ইন্সটল করা থাকে। আর স্টেডিয়ামের ছাদের নিচে ও সাইডলাইনের পাশে মোট ১৪টি হাই-স্পিড ক্যামেরা বসানো থাকে। সাতটি করে ক্যামেরা দুই পাশের দুই গোল-লাইন ফোকাস করে থাকে। 

এই ক্যামেরায় ধারণ করা ছবিগুলোকে কম্পিউটার মুহূর্তেই অ্যানালাইজ করে রেফারির হাতে থাকা ঘড়িতে এক সেকেন্ডের মধ্যে সিগনাল দিয়ে দেয় যে বল লাইন গোল-লাইন অতিক্রম করেছে কি না। পরবর্তীতে ক্যামেরার ডেটাগুলো দিয়ে থ্রিডি এনিমেশন করে সেই বলের অবস্থান দেখানো হয় মাঠের জায়ান্ট স্ক্রিন ও টিভির পর্দায়।

গোল-লাইন প্রযুক্তি মূলত ফিফা থেকে সরবরাহ করা হয়। এই প্রযুক্তিতে লিগ ভেদে প্রতি মৌসুমে সবমিলিয়ে খরচ হয় তিন থেকে পাঁচ মিলিয়ন ইউরো। বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৩৫-৬০ কোটি টাকা। তবে স্টেডিয়ামে ক্যামেরা সেটাপের খরচ আবার আলাদা। অর্থাৎ, এই গোল-লাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে প্রতি মৌসুমে একেকটি ক্লাবের খরচ হয় দুই থেকে তিন লাখ ইউরো। এর মধ্যে বলে চিপ ইন্সটল করতেই খরচ হয় সিংহভাগ। 

ইউরোপের টপ ফাইভ লিগের মধ্যে একমাত্র লা-লিগা ছাড়া বাকি চার লিগেই আছে এই গোল-লাইন প্রযুক্তি। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এই প্রযুক্তি সর্বপ্রথম ব্যবহার হয় ২০১৪ সালে। এরপরের বছরেই জার্মান লিগ, ইতালিয়ান লিগ, ফ্রেঞ্চ লিগ ও ডাচ লিগে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এটি। বাদ থাকে শুধুমাত্র স্প্যানিশ লিগ। লা-লিগায় এই গোল-লাইন প্রযুক্তি আনতে প্রয়োজনীয় অর্থ খরচ করতে নারাজ ছিলেন লিগ প্রেসিডেন্ট হ্যাভিয়ের তেবাস। স্প্যানিশ লিগে এই প্রযুক্তি আনতে খরচ হত তিন মিলিয়ন ইউরো বা ৩৫ কোটি টাকা। এই পরিমাণ অর্থকেই অনেক ব্যয়বহুল বলে তা আনতে মানা করে দেন তেবাস। 

লা-লিগায় এই গোল-লাইন প্রযুক্তি থাকলে রোববারের এল-ক্লাসিকোর ফলাফল ভিন্ন হলেও হতে পারতো। কারণ, খেলার ২৮ মিনিটে ১-১ গোলে সমতায় থাকা অবস্থায় বার্সার লামিন ইয়ামালের পা ছুঁয়ে যাওয়া বল মাদ্রিদ কিপার লুনিন ধরার পর, সেই বল গোল-লাইন অতিক্রম করেছে কি না তা নিয়ে তৈরি হয় দ্বিধাদ্বন্দ্ব।

ক্যামেরার এক অ্যাঙ্গেলে দেখা যায় সেটি লাইন অতিক্রম করেনি, আরেক অ্যাঙ্গেলে দেখা যায় তা স্পষ্ট ভাবে অতিক্রম করেছে। গোল-লাইন প্রযুক্তি থাকলে এক নিমিষেই হয়তো এই সব ধোঁয়াশা পরিস্কার হয়ে যেত। কিন্তু এই প্রযুক্তি না থাকায় ভাগ্যক্রমে সেই সিদ্ধান্ত আসে মাদ্রিদের পক্ষে। পরবর্তীতে ৩-২ গোলে এল-ক্লাসিকো জিতে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.