‘কেন হয়েছে, এটার উত্তর নেই’- চট্টগ্রাম টেস্ট শেষে শান্ত

খেলা

টিবিএস রিপোর্ট, চট্টগ্রাম থেকে
03 April, 2024, 03:20 pm
Last modified: 04 April, 2024, 04:05 am
স্লিপ ও বা ক্লোজ-ইন ফিল্ডিং সব সময়ই বাংলাদেশের জন্য চিন্তার কারণ। সেভাবে ফিল্ডার তৈরিতে নজরও দেওয়া হয় না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফেলা আট ক্যাচের ছয়টিই স্লিপের ফিল্ডাররা ফেলেছেন।

চট্টগ্রাম টেস্ট, বাংলাদেশে ক্রিকেট দলের আরও একটি হতাশার অধ্যায়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯২ রানের বড় হারে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। গড়পড়তা মানের বোলিং হয়েছে, এর বাইরে এই ম্যাচে কিছুই ঠিক যায়নি বাংলাদেশের। ব্যাটিং ব্যর্থতা তো ছিলই, এর আগে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হতাশার জায়গা ছিল ফিল্ডিং, বিশেষ করে ক্যাচ মিস। শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসেই সাতটি ক্যাচ ছাড়ে বাংলাদেশ, পরের ইনিংসে আরেকটি। 

আটটি ক্যাচ ফেললে ম্যাচ থেকে যেকোনো দলের ছিটকে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রথম ইনিংসে ছয় হাফ সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ গড়ে লঙ্কানরা। আর এই ইনিংসেই ম্যাচে তৈরি হয় ব্যবধান। কেন এতো ক্যাচ মিস? ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসা বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত জানালেন, এই পশ্নের উত্তর জানা নেই তার। 

স্লিপ ও বা ক্লোজ-ইন ফিল্ডিং সব সময়ই বাংলাদেশের জন্য চিন্তার কারণ। সেভাবে ফিল্ডার তৈরিতে নজরও দেওয়া হয় না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফেলা আট ক্যাচের ছয়টিই স্লিপের ফিল্ডাররা ফেলেছেন। ক্যাচ মিস নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে, ক্রিকেটার থেকে শুরু করে কোচ; সবাইকে উত্তর দিতে হয়েছে এ নিয়ে। শান্তকে প্রথম প্রশ্নটিই করা হলো ক্যাচ মিস নিয়ে। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান বললেন, 'ফিল্ডিংয়ের ব্যাপারে বলব, সবাই যথেষ্ট অনুশীলন করে। সবাই অনুশীলনে প্রত্যেকটা ক্যাচও ধরে। কেন হয়েছে, এটার উত্তর নেই।'

'কিন্তু প্রস্তুতির কথা যদি বলেন, ফিল্ডিংয়ে সবাই ভালোমতো প্রস্তুত ছিল। কিন্তু ক্যাচগুলো আমরা ধরতে পারিনি। ব্যাটিংয়ে পুরা সিরিজে আমরা ভালো ব্যাটিং করিনি। এখানে অজুহাত দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই যে, এই কারণে হয়েছে বা ওই কারণে হয়েছে। দল হিসেবে পুরা সিরিজে চারটা ইনিংসে আমরা ভালো ব্যাটিং করিনি।' যোগ করেন তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশের নেতৃত্বে থাকা শান্ত।   

টেস্টের প্রথম দিনে তিনটি ক্যাচ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ সুযোগ তৈরি করেন, কিন্তু মাদুসকার তোলা সহজ ক্যাচটি নিতে পারেননি দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো মাহমুদুল হাসান জয়। ২২তম ওভারে হাসানের বলে আবারও সম্ভাবনা তৈরি হয়। কিন্তু দিমুথ করুনারত্নের তোলা ক্যাচটি সাকিব আল হাসান নিতে পারেননি। এগিয়ে যাওয়ার কারণে ক্যাচটি কঠিন হয়ে ওঠে, শেষ মুহূর্তে কেবল ছক্কা বাঁচাতে পারতেন সাকিব। কিন্তু ক্যাচ নেওয়া বা ছক্কা বাঁচানোর কোনোটিই করতে পারেননি তিনি।  

৬৬.৪ ওভারে আবারও সুযোগ হাতছাড়া, মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ক্যাচ তোলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। কিন্তু উইকেটরক্ষক লিটন কুমার দাস ও প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো শাহাদাত হোসেন দিপুর মাঝ দিয়ে বল চলে যায়। দিপু চেষ্টা করলেও তার হাতে লেগে বল বেরিয়ে ৪ হয়ে যায়। পরের দিন হতাশা আরও বাড়ে, আরও চারটি ক্যাচ মিস হয়। দিনের শুরুতেই ধনঞ্জয়া ডি সিলভার ক্যাচ ফেলেন মিরাজ। খালেদ আহমেদের বলে লঙ্কান অধিনায়ক ক্যাচ তুললেও স্লিপে দাঁড়ানো মিরাজ নিতে পারেননি। 

খালেদের করা ১২১তম ওভারে তিনজন ফিল্ডার মিলেও একটি বল ধরতে ব্যর্থ হন। খালেদের বলে প্রবাথ জয়সুরিয়াও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো শান্ত সহজ ক্যাচটি ফেলে দেন। সেই বলটি ধরার চেষ্টার করেন শাহাদত হোসেন দিপু। বল হাতে নিলেও রাখতে পারেননি তিনি। পড়তে থাকা বলের দিকে হাত বাড়ান জাকির হাসান, কিন্তু তার হাঁত ছুয়ে বল মাটিতে পড়ে যায়। 

১৩৬তম ওভারে তাইজুলের বলে আবারও ক্যাচ তোলেন প্রবাথ, এবার ক্যাচ ছেড়ে হতাশ করেন লিটন কুমার দাস। তার গ্লাভস ফসকে বেরিয়ে যায় বল। ১৪৯তম ওভারে আবারও হাত ফসকে বেরোয় ক্যাচ। তাইজুলের বলে ক্যাচ তোলেন ব্যাটে-বলে আলো ছড়িয়ে সিরিজ সেরার পুরস্কার জেতা কামিন্দু মেন্ডিস। ডিপ-মিড উইকেটে ফিল্ডিং করা হাসানও বাকিদের মতো হতাশ করে ক্যাচটি মাটিতে ফেলেন। শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে একটি ক্যাচ ছাড়ে বাংলাদেশ। ম্যাথুসের তোলা ক্যাচ নিতে পারেননি স্লিপে দাঁড়ানো দিপু।  

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.