তবে কি উইকেটের চরিত্র পাল্টে গেল?

খেলা

টিবিএস রিপোর্ট, চট্টগ্রাম থেকে
01 April, 2024, 01:05 pm
Last modified: 01 April, 2024, 01:31 pm
যে উইকেটে প্রায় দুদিন ধরে ১৫৯ ওভার ব্যাটিং করে বড় সংগ্রহ গড়ে শ্রীলঙ্কা, সেই উইকেটেই রীতিমতো ধুঁকছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। চট্টগ্রামের পাটা উইকেটেও শাসন করছেন লঙ্কান পেসাররা, যা হতে পারে বাংলাদেশের পেসারদের জন্য অনুকরণীয়।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেট রাতের মধ্যেই বদলে গেল কিনা; এ নিয়ে সংশয় জাগতে পারে। কারণ, যে উইকেটে প্রায় দুদিন ধরে ১৫৯ ওভার ব্যাটিং করে বড় সংগ্রহ গড়ে শ্রীলঙ্কা, সেই উইকেটেই রীতিমতো ধুঁকছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ৪৭ ওভারের মধ্যেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে গেছে ঘরের মাঠের দলটি। ৪১ ওভার শেষে ৪ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১১৫ রান।

প্রথম দিনই ফিরে যান ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। আজ সাবলীল শুরুর পরও টিকতে পারেননি জাকির হাসান, হাফ সেঞ্চুরি করে বিদায় নেন তিনি। এরপর সাজঘরের পথ ধরতে হয়েছে নাইট ওয়াচম্যান তাইজুল ইসলাম ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে। তাই কপালে চিন্তার ভাঁজ নিয়েই তৃতীয় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতিতে যেতে হয়েছে বাংলাদেশকে। মুমিনুল হক ২ ও সাকিব আল হাসান ৬ রানে অপরাজিত আছেন। 

ইতোমধ্যেই দুই দলের শক্তি, মানসিকতার পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আর সেটাই বলে দেয়, চট্টগ্রামের উইকেট সেভাবে ভূমিকা রাখছে না। তৃতীয় দিন বলে উইকেট ভাঙতে পারে কিছুটা, তাতে সুবিধা পাবেন স্পিনাররা। কিন্তু দাপট দেখিয়ে যাচ্ছেন শ্রীলঙ্কার পেসাররা। বাংলাদেশের যাওয়া চার উইকেটে তিনটিই নিয়েছেন লঙ্কান পেসাররা, আর প্রতিটাই বোল্ড। 

জাকির হাফ সেঞ্চুরি করলেও ধুঁকেছেন, এজ হয়ে বল পেছনে গেছে। হাওয়ায় ভাসেনি বলে শ্রীলঙ্কার হাত পর্যন্ত যায়নি বল। এরপর তিনি যে বলে আউট হন, কিছুই করার ছিল না তার। বিশ্ব ফার্নান্দোর অপ্রতিরোধ্য এক ডেলিভারিতে ভাঙে ১০৪ বলে ৫৪ রান করা জাকিরের স্টাম্প। কিছুক্ষণ পর তাইজুলকেও অনেকটা একইরকম ডেলিভারিতে বোল্ড করেন বাঁহাতি এই পেসার। ২২ রান করে আউট হন তাইজুল। 

২১ রান করা মাহমুদুল হাসান জয়ও আগের দিন বোল্ড আউট হন। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে তার স্টাম্প উপড়ে নেন লাহিরু কুমারা। লঙ্কান এই দুই পেসার এমন কিছু ডেলিভারি করেছেন, যা খেলতে হিমশিম খেলতে হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। বিশেষ করে উইকেট মেলা তিনটি ডেলিভারি ছিল অসাধারণ। জয়, জাকির কিংবা তাইজুল; কেউ-ই বল বুঝতে পারেননি। দিশা হারিয়ে বোল্ড হন তারা। 

জহুর আহমেদের পাটা উইকেটে লঙ্কান পেসারদের এমন বোলিং তাদের সামর্থ্যের জানান দেয়। উইকেটে কিছু না থাকলেও কীভাবে ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নিতে হয়, সেটা জানেন লাহিরু-ফার্নান্দোরা। উইকেট পাওয়া তাদের তিনটি ডেলিভারি বাংলাদেশের পেসারদের জন্য হতে পারে উদাহরণ। খালেদ আহমেদ ও হাসান মাহমুদ মিলে ৪৪ ওভার বোলিং করেছেন, কিন্তু লঙ্কান পেসারদের মতো কোনো 'আনপ্লেইবল' ডেলিভারি তারা করতে পারেননি।   

অবশ্য অন্য তফাৎও আছে, বাংলাদেশের মতো সুযোগ হতাছাড়া করেনি শ্রীলঙ্কা। একটি ক্যাচ তুলেছে বাংলাদেশ, সেটাতেই খোয়াতে হয়েছে শান্তর উইকেট। কিন্তু বাংলাদেশ দুদিন ধরে সাতটি ক্যাচ ফেলে, একটি রান আউটও করে মিস। এ ছাড়া লঙ্কানদের সঙ্গে মানসিকতার পার্থক্য তো আছেই। এমনকি নিজ দলের মধ্যেও আছে উদাহরণ। 

সিলেট টেস্ট থেকে স্পিনার হয়েও ব্যাট হাতে যা করে আসছেন তাইজুল, সেটা রীতিমতো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার মতো। টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের কাজ যা থাকে, সেটাই করেছেন বাঁহাতি এই স্পিনার। যা করতে পারছেন না শান্ত, জয়, জাকিররাও। সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে নেমে সর্বোচ্চ বল খেলে সবচেয়ে বেশি ৪৭ রান করেন তাইজুল। চট্টগ্রামেও ধৈর্য দেখিয়ে ৬১ বলে ২২ রান করেন প্রায়ই ব্যাট হাতে দলের জন্য অবদান রাখা অভিজ্ঞ এই স্পিনার।  

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.