পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে ভারতের তিনে তিন

খেলা

টিবিএস রিপোর্ট
14 October, 2023, 08:40 pm
Last modified: 14 October, 2023, 08:48 pm
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ব্যাটে-বলে শাসন করে বড় জয় তুলে নিলো রোহিত শর্মার দল। বিশ্বকাপে ১৯৯২ সাল থেকে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা আট ম্যাচের সব কটিতেই জয়ের হাসি হাসলো ভারত।

বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই সেখানে ভারতের দাপট। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলটির বিপক্ষে আরও একবার তা জারি রাখলো এবারের বিশ্বকাপের আয়োজকরা। অস্ট্রেলিয়ার পর আফগানিস্তানদের গুঁড়িয়ে দেওয়া ভারত এবার পাকিস্তানকে ক্রিকেট দিক্ষা দিলো। ব্যাটে-বলে শাসন করে বড় জয় তুলে নিলো রোহিত শর্মার দল। 

শনিবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। বিশ্বকাপে উইকেটের হিসেবে এবং বেশি বল হাতে রেখে জেতার দিক থেকে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটাই তাদের সবচেয়ে বড় জয়। বিশ্ব আসরে ১৯৯২ সাল থেকে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা আট ম্যাচের সব কটিতেই জয়ের হাসি হাসলো ভারত। এই আট ম্যাচের মধ্যে ছয়বার আগে ব্যাটিং করে জিতেছে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা, এবার দ্বিতীয়বারের মতো রান তাড়া করে জিতলো। রান তাড়ায় ভারতের আগের জয়টি ছিল ৬ উইকেটের। 

আগে ব্যাটিং করতে নেমে ভারতের অসাধারণ বোলিংয়ের সামনে ৪২.৫ ওভারে ১৯১ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে এটা তাদের তৃতীয় সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। জবাবে অধিনায়ক রোহিতের সেঞ্চুরির সঙ্গে শ্রেয়াস আইয়ারের সময় উপযোগী ব্যাটিংয়ে এই লক্ষ্য পাড়ি দিতে কোনো বেগই পোহাতে হয়নি ভারতকে। ৩০.৩ ওভারে ৩ উইকেটেই জয় তুলে নেয় তারা, তখনও বাকি ছিল ১১৭ বল। টানা তৃতীয় জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছে ঘরের মাঠের দলটি। প্রথম দুই ম্যাচে জেতা পাকিস্তান এবারের আসরে প্রথম হারের স্বাদ পেল। 

যদিও ছোট লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমেও শুরুটা ভালো করতে পারেনি ভারত। দলীয় ২৩ রানে ফিরে যান শুভমান গিল। অসুসস্থতা কাটিয়ে একাদশে ফেরা ডানহাতি এই ওপেনার ১১ বলে ৪টি চারে ১৬ রান করেন। উইকেট হারানোর চাপ বুঝতে হয়নি ভারতকে। দ্বিতীয় উইকেটে ৪২ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়ে তোলেন রোহিত ও বিরাট কোহলি। এদিন অবশ্য কোহলি ইনিংস বড় করতে পারেননি, ১৮ বলে ৩টি চারে ১৬ রান করে বিদায় নেন তিনি। 

কোহলির বিদায়ের পর শ্রেয়াসের সঙ্গে জুটি বাধেন এক পাশ আগলে দাপুটে ব্যাটিং করে যাওয়া রোহিত। তৃতীয় উইকেটে এ দুজন ৭৭ রানের জুটি গড়েন। এর মাঝে ওয়ানডের ৫৩তম ও বিশ্বকাপের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন আগের ম্যাচে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির (৭টি) রেকর্ড গড়া রোহিত। ২২তম ওভারে পাকিস্তান পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে আউট হওয়ার আগে ৬৩টি বলে ৬টি করে চার ও ছক্কায় ৮৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন ভারত অধিনায়ক। 

তার বিদায়ের পর দলের জয় তুলে নেওয়ার কাজটি সারেন শ্রেয়াস ও লোকেশ রাহুল। চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৩৬ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তারা। শ্রেয়াস ৬২ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৩ ও রাহুল ২৯ বলে ২টি চারে ১৯ রান করেন।  ভারতের যাওয়া ৩টি উইকেট নেন পাকিস্তানের দুই পেসার। শাহিন আফ্রিদি ২টি ও হাসান আলী একটি উইকেট পান। 

এর আগে ব্যাটিং করতে নামা পাকিস্তানের শুরুটা একেবারে মন্দ ছিল না। উদ্বোধনী জুটিতে ৪১ রান যোগ করেন দুই ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক ও ইমাম-উল-হক। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা শফিককে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন সিরাজ। ডানহাতি এই পেসারের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে আউট হওয়ার আগে ২৪ বলে ২০ রান করেন শফিক। 

কিছুক্ষণ পর ইমামও থামেন, হার্দিক পান্ডিয়ার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়া বাঁহাতি এই ওপেনার ৩৮ বলে ৬টি চারে ৩৬ রান করেন। ৭৩ রানে ২ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন অধিনায়ক বাবর ও রিজওয়ান। তৃতীয় উইকেটে ১০৩ বলে ৮২ রান যোগ করেন তারা। কিন্তু দলীয় ১৫৫ রানে ভারতের পেসার সিরাজ স্টাম্প উপড়ে বাবরকে ফিরিয়ে দিলে এলোমেলো হয়ে পড়ে পাকিস্তানের ইনিংস। ৫৮ বলে ৭টি চারে ৫০ রান করে আউট হন বাবর। 

পরের দুটি আঘাত ভারতের চায়না ম্যান বোলার কুলদীপের। চার রানের ব্যবধানে তিনি ফিরিয়ে দেন সৌদ শাকিল ও ইফতিখার আহমেদকে। কোণঠাসা হয়ে পড়া পাকিস্তানকে আরও চেপে ধরেন বুমরাহ। বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা এই পেসার তিন রানের ব্যবধানে রিজওয়ান ও শাদাবের উইকেট তুলে নেন। অফ কাটারে রিজওয়ানকে পরাস্থ করা ম্যাচসেরা বুমরাহ অপ স্টাম্প ভেঙেই শাদাবকে ফেরান। ৬৯ বলে ৭টি চারে ৪৯ রান করেন রিজওয়ান। 

২০ রানের মধ্যে বাকি তিন উইকেট হারায় পাকিস্তান। শেষ দিকে কেবল হাসান আলী ১১ রান করেন। শাকিল, ইফতিখার, শাদাব, নওয়াজরা দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। ভারতের হয়ে বোলিং করা ছয় জনের মধ্যে পাঁচজন ২টি করে উইকেট পান। আগুনে বোলিং করা বুমরাহ ৭ ওভারে মাত্র ১৯ রান খরচায় ২টি উইকেট নেন। ৮ ওভারে ২ উইকেট নিতে সিরাজের খরচা ৫০ রান। পান্ডিয়া ৬ ওভারে ৩৪ রানে পান ২ উইকেট। ২ উইকেট করে শিকার করা কুলদীপ ও জাদেজা যথাক্রমে ৩৫ ও ৩৮ রান খরচা করেন। কেবল শার্দুল ঠাকুর কোনো উইকেট পাননি।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.