‘আত্মবিশ্বাসী’ বাংলাদেশ মিরাকলের আশায়

খেলা

শান্ত মাহমুদ, অ্যাডিলেড থেকে
04 November, 2022, 03:05 pm
Last modified: 04 November, 2022, 04:20 pm
সমান পয়েন্ট নিয়েও রান রেটে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে পাকিস্তান। জয়ের ধারায় ফেরা দলটি সুপার লিগের শেষ ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিতে সেমি-ফাইনালের রেসে টিকে থাকতে চাইবে। ছন্দ ফিরে পাওয়া শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষেও কী কারণে আশাবাদী বাংলাদেশ?

চার ম্যাচে দুই জয়, চার পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চার নম্বর দল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার লিগে আর একটি ম্যাচ আছে বাংলাদেশের। খাতা কলমে সেমি-ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা টিকে থাকলেও সাকিব আল হাসানের দলকে সেভাবে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে লড়াই করে না না জিততে পারলেও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা বাংলাদেশ এখনও আশায়, মিরাকলের কথা তাসকিন আহমেদের মুখে। 

শেষ চারে ওঠার লড়াইয়ে পাকিস্তানের অবস্থান ভালো না হলেও দলটির সামর্থ্য নিয়ে সংশয় নেই। তাসকিনের ভাষায়, বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে বাবর আজমের দলই। কিন্তু আগামী ৬ নভেম্বর অ্যাডিলেড ওভালে পাকিস্তানের বিপক্ষে কেবল জয়ের জন্যই মাঠে নামতে চান তারা। 

টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের দুর্বলতার কথা অকপটেই মেনে নিয়েছেন বিশ্বকাপে বল হাতে দারুণ ছন্দে থাকা বাংলাদেশের ডানহাতি এই পেসার। তাসকিনের মতে এখনও 'গ্রেট' দল হয়নি বাংলাদেশ, উন্নতির ধারায় থাকলে সেটা হওয়া সম্ভব। তবে নানা সমীকরণে কঠিন হয়ে ওঠা যাত্রায় 'মিরাকল' ছাড়া যে উপায় নেই, তা ভালোভাবেই বুঝতে পারছে বাংলাদেশ। 

শুক্রবার অ্যাডিলেডের কারেন রোল্টন ওভাল গ্রাউন্ডে দীর্ঘ অনুশীলন চালিয়েছে বাংলাদেশ। অনুশীলন শেষে সেমি-ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা নিয়ে করা প্রশ্নের উত্তরে তাসকিন বলেন, 'এই গ্রুপে সব ম্যাচই ইন্টারেস্টিংলি গেছে। এখনও যেকোনো কিছু হতে পারে। মিরাকল হয়ে যেতে পারে। প্রধান লক্ষ্য থাকবে শেষ ম্যাচটায় একই স্পিরিট নিয়ে যাব। ভালো খেলে জিততে চাইবো। যদি ম্যাচ জিততে পারি, পরে কী হবে সমীকরণ, পরে দেখা যাবে। প্রধান লক্ষ্য পরবর্তী ম্যাচটা জেতা।'

তাসকিন জিততে চান, সেমি-ফাইনালের আশাও ছাড়তে চান না। বাংলাদেশ দলেও কী একই আলোচনা, সবারই কী একই বিশ্বাস? বাংলাদেশ পেসার বলেন, 'আসলে ওখানে দেখেন অনেক সমীকরণের বিষয় আছে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য জেতাটাই, তো সেমি-ফাইনাল হবে কি হবে না, সেটা তো বলতে পারছি না। কিন্তু লক্ষ্য ম্যাচটা জেতা।'

প্রথম দুই ম্যাচ হারের পর টানা দুই ম্যাচ জিতেছে পাকিস্তান। সমান পয়েন্ট নিয়েও রান রেটে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে তারা। জয়ের ধারায় ফেরা দলটি সুপার লিগের শেষ ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিতে সেমি-ফাইনালের রেসে টিকে থাকতে চাইবে। ছন্দ ফিরে পাওয়া শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষেও কী কারণে আশাবাদী বাংলাদেশ?

তাসকিন মনে করেন টি-টোয়েন্টিতে যেকোনো কিছুই হতে পারে, 'টি-টোয়েন্টিতে খেলায় অনুমান করা কঠিন। যেকোনো কিছু হতে পারে। একটা ওভারে মোমেন্টাম পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। আমরা বোলাররা যদি ভালো বোলিং করতে পারি এবং যদি আগে বোলিং করে ওদের যদি ১৫০-১৬০ এর মধ্যে আটকাতে পারি, তাহলে হয়তো তাড়া করা সম্ভব। আর আগে ব্যাটিং করে যদি ভালো স্কোর হয়, ডিফেন্ড করার সামর্ধ্য আছে আমাদের। ভালো ক্রিকেট খেললে জিততে পারব, এই আশাটা আছে।'

এতো আশার মাঝেও অবশ্য বাস্তবতা মাথায় রাখছেন তাসকিন। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ যে এখনও যে শক্তিশালী দল হয়ে উঠতে পারেনি, সেটা মেনে নিয়ে তিনি বলেন, 'ওরা আমাদের থেকে এগিয়ে আছে দল হিসেবে। এটা সবাই জানে পাকিস্তান ভালো দল আমাদের থেকে। আমাদের লক্ষ্য হলো উন্নতির। একটু আগেও বললাম আমরা গ্রেট টিম হয়ে যাইনি, কিন্তু হবো।'

শেষ ম্যাচের পাশাপাশি ওঠে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের বিষয়টিও। শেষ বলোয় গিয়ে হারলেও ম্যাচটি থেকে অনেক ইতিবাচক বিষয়ই নেওয়ার আছে বলে মনে করেন তাসকিন, '১৬ ওভারে কিন্তু দেড়'শ রান করেছি। এটাও কিন্তু মাথায় রাখতে হবে। লিটন খুব ভালো শুরু করেছে, বোলিংও ভালো হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে। তো অনেক ইতিবাচক ব্যাপার আছে। অনেক ক্লোজ ম্যাচ, প্রায় জিতেই গিয়েছিলাম। ভারতের মতো বিশ্বের টপ দলের সাথে এভাবে লড়াই করেছি, এটা বাড়তি শক্তি আমাদের।'

নিজেরা খেলছেন, পাশাপাশি অন্যান্য ম্যাচেও নজর রাখছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। তাসকিন বলছেন, 'সবার রুমেই তো টিভি আছে, স্কোরও দেখা যায়। দল বা ব্যক্তিগত হিসেবে আমাদের সবার লক্ষ্য, উন্নতি করা।  এটাই প্রধান লক্ষ্য আমাদের। আমরা আগেও বলেছি আমরা শিখছি, উন্নতি করার চেষ্টা করছি। আগের থেকে ভালো ক্রিকেট খেলছি আমরা। এখনও আমরা গ্রেট টিম হয়ে যাইনি, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। লক্ষ্য থাকবে উন্নতির ধারা বজায় রেখে সবাই সবার জায়গা থেকে উন্নতি করে যেন আরও ভালো দল হতে পারি আমরা।'

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.