১৯৩ দিন পর দলীয় অনুশীলনে বাংলাদেশ

খেলা

টিবিএস রিপোর্ট
20 September, 2020, 07:55 pm
Last modified: 21 September, 2020, 12:26 am
সর্বশেষ কবে দলীয় অনুশীলন করেছেন, মনে পড়ে? এমন প্রশ্নে রীতিমতো ধন্ধেই পড়ে গেলেন রোববার জাতীয় দলের অনুশীলনে অংশ নেওয়া এক ক্রিকেটার। নির্দিষ্ট করে বলতে পারলেন না। উল্টো প্রশ্ন করে বসলেন, ‘কবে? মার্চের দিকে না?’

সর্বশেষ কবে দলীয় অনুশীলন করেছেন, মনে পড়ে? এমন প্রশ্নে রীতিমতো ধন্ধেই পড়ে গেলেন রোববার জাতীয় দলের অনুশীলনে অংশ নেওয়া এক ক্রিকেটার। নির্দিষ্ট করে বলতে পারলেন না। উল্টো প্রশ্ন করে বসলেন, 'কবে? মার্চের দিকে না?' একটু মনে করিয়ে দিতেই এই ক্রিকেটার বলে উঠলেন, 'ওহ, হ্যাঁ, হ্যাঁ, মনে পড়েছে। আসলে মাঝে তো অনেক সময় গেছে, তাই মনে নেই।'

মাঝে কতটা সময় গেছে? এই হিসাবটা সবারই জানা। করোনাভাইরাসের প্রকোপে দুই-এক মাস নয়, দীর্ঘ ছয় মাস বাংলাদেশের দলীয় অনুশীলন হয়নি। দিনের হিসেবে ১৯৩। এতোটা দীর্ঘ সময় কখনই বন্ধ থাকেনি জাতীয় দলের অনুশীলন। ক্রিকেটারদের তাই মনেও রাখতে হয়নি মাঝের বিরতির ব্যবধানের কথা।

অবশেষে অপেক্ষা ফুরিয়েছে। শ্রীলঙ্কা সফর সামনে রেখে স্কিল ট্রেনিংয়ের জন্য ঘোষণা করা স্কোয়াড নিয়ে রোববার থেকে মিরপুর স্টেডিয়ামে দলীয় অনুশীলন শুরু করেছে বাংলাদেশ। ১৯৩ দিন পর দলীয় অনুশীলনে নেমেছিলেন তামিম, মুশফিক, মুমিনুল, মাহমুদউল্লাহরা। গত ১১ মার্চ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। এরপর আর দলীয় অনুশীলন হয়নি। 

যদিও এই শুরুর পর্বও ব্যাহত হয়েছে করোনার প্রভাবের কারণে। ক্যাম্পে ডাক পাওয়া ২৭ ক্রিকেটারকে নিয়ে অনুশীলন শুরুর করা থাকলেও রোববার ১৬ জন ক্রিকেটার হাজির হয়েছিলেন। সাইফ হাসান করোনায় আক্রান্ত থাকায় আগে থেকেই আইসোলেশনে আছেন। নতুন করে আইসোলেশনে গেছেন ১০ ক্রিকেটার। 

দ্বিতীয় পরীক্ষার নমুনা দেওয়ার পর দুজনের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দিয়েছে। দুজন সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। তাদের সংস্পর্শে যাওয়ায় আরও ৮ ক্রিকেটারকে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে। এই ১০ ক্রিকেটার হলেন মোহাম্মদ মিঠুন, হাসান মাহমুদ, নাঈম হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, খালেদ আহমেদ, এবাদত হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, শফিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

বাকি ১৬ ক্রিকেটারকে বলা হয়েছিল পৌনে তিনটা থেকে অনুশীলনে যোগ দিতে। এতোদিন পর দলীয় অনুশীলন, উত্তেজনায় ছিলেন ক্রিকেটাররা। অনেক আগেই তারা চলে আসেন মিরপুর স্টেডিয়ামে। শুরুতে মাঠেই প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, বোলিং কোচ ওটিস গিবসন, ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক, ট্রেনার নিকোলাস লি, ফিজিও জুলিয়ান ক্যালেফাতের সঙ্গে কয়েক মিনিট বৈঠক হয় ক্রিকেটারদের। এরপর শুরু হয় অনুশীলন। 

রোববার অনুশীলনে অংশ নেওয়া ১৬ ক্রিকেটার হলেন মুশফিকুর রহিম, আল আমিন হোসেন, সাদমান ইসলাম অনিক, তামিম ইকবাল, তাসকিন আহমেদ, ইয়াসির আলী রাব্বি, রুবেল হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, নুরুল হাসান সোহান, তাইজুল ইসলাম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুস্তাফিজুর রহমান, মুমিনুল হক, ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার ও লিটন কুমার দাস। একক অনুশীলন শুরু হয়েছিল গত ১৯ জুলাই। এর দুই মাস পর শুরু হলো দলীয় অনুশীলন। 

স্ট্রেচিং দিয়ে শুরু হয় অনুশীলন পর্ব। এরপর দুই দলে ভাগ হয়ে কিছুক্ষণ ফুটবল খেলেন ক্রিকেটাররা। গা গরমের পর ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলনে মন দেন তারা। এর মধ্যে নেটে লিটন কুমার দাসের রীতিমতো পরীক্ষা নিয়েছেন দুই পেসার আল আমিন হোসেন ও তাসকিন আহমেদ। শুরুর দিকে এই দুই পেসারের বল সাবলীলভাবে খেলতে পারছিলেন না লিটন। পরে অবশ্য মানিয়ে নেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

লিটন ছাড়াও ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক, ইমরুল কায়েস, ইয়াসির আলী রাব্বি, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। নেটে বোলিং করেছেন তাসকিন আহমেদ, আল আমিন হোসেন, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, সৌম্য সরকার, তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ।   

প্রথম দিন অনুশীলন চলেছে আড়াই ঘণ্টা। পৌনে তিনটায় শুরু হয়ে অনুশীলন শেষ হয় সোয়া পাঁচটায়। এরপর টিম বাসে করে সোনাওগাঁও হোটেলে যান অনুশীলনে অংশ নেওয়া ১৬ ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফরা। রোববার সকালেই চেক ইন করেন তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। 

বাকিরা অনুশীলন শেষে হোটেলে ওঠেন। হোটেল ও মাঠে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্য থেকেই আগামী কয়েক দিন অনুশীলন চালিয়ে যাবেন ক্রিকেটাররা। বাকি ১০ ক্রিকেটার ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইসোলেশনে থাকবেন। ২১ সেপ্টেম্বর তৃতীয় দফায় নমুনা সংগ্রহ করা হবে সবার। এই পরীক্ষায় নেগেটিভ হলে এই ১০ ক্রিকেটার অনুশীলনে যোগ দিতে পারবেন। 

কোয়ারেন্টিন জটিলতায় শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হলেও বিসিবি পরিকল্পনামাফিক প্রস্তুতির কাজ চালিয়ে নিচ্ছে। সফর চুড়ান্ত হলে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে রওনা দিতে পারে বাংলাদেশ। এই সফরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। প্রথম টেস্ট আগামী ২৪ অক্টোবর ক্যান্ডিতে শুরু হওয়ার কথা। 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.