১৩ হাজার কোটি টাকার ঋণে বার্সেলোনা, বার্তোমেউকে দুষলেন লাপোর্তা
বার্সেলোনার আর্থিক অবস্থাকে "অত্যন্ত উদ্বেগজনক" উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট হুয়ান লাপোর্তা জানিয়েছেন স্প্যানিশ ক্লাবটি বর্তমানে প্রায় ১৩ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকার ঋণের বোঝা বহন করছে।
ক্লাবের অর্থনীতির এই নাজুক অবস্থার জন্য গত সোমবার (১৬ই আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে পূর্বসূরি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউকে দোষারোপ করেছেন তিনি।
গত মার্চ মাসে দ্বিতীয়বারের মতো ক্লাব প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন লাপোর্তা। ২০১৯-২০ মৌসুমের শেষে পদত্যাগ করা বার্তোমেউয়ের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তিনি।
বার্সেলোনাকে ভয়ানক ঋণগ্রস্ত অবস্থায় রেখেই ক্লাব ছেড়েছিলেন বার্তোমেউ। এবছরের শুরুতেও কাতালান ক্লাবটি ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণের কথা স্বীকার করেছিল। গতকাল সেই ঋণের পূর্ণ হিসাব দিলেন লাপোর্তা।
মহামারি চলাকালীন অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়ায় লাপোর্তা প্রশাসনের সমালোচনা করে বার্তোমেউয়ের লেখা এক চিঠির জবাবেই মূলত এই সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন বার্সা প্রেসিডেন্ট।
সোমবারের সেই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'দায়িত্ব নেয়ার পর আমরা গোল্ডম্যান স্যাকসের কাছে আট কোটি ইউরোর (৮০০ কোটি টাকা) ঋণ চেয়েছিলাম। কারণ খেলোয়াড় এবং কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছিলাম না আমরা।'
তিনি আরও বলেন, 'আগের বোর্ড যে বেতন কমানোর কথা বলেছে, সেটা মিথ্যা। আমরা তাদের দেয়া চুক্তিগুলোয় কোটি কোটি ইউরোর অপ্রয়োজনীয় বোনাস এবং অন্যান্য খরচাদি পেয়েছি। বিভিন্ন দলবদলের মধ্যস্থতাকারীদের অসম পরিমাণ অর্থ-কড়ি দিয়েছে তারা। একটা ৪ কোটি ইউরোর দলবদলে ক্রয় প্রিমিয়াম হিসেবে ২০ লাখ ইউরো, বিক্রয় প্রিমিয়াম হিসেবে ২০ লাখ ইউরো দেয়া হয়েছে। এক লোককে শুধু দক্ষিণ আমেরিকায় খেলোয়াড় খোঁজার জন্য ৮০ লাখ ইউরো দেয়া হয়েছিল।
'বার্তোমেউয়ের চিঠি মিথ্যায় ভরা ছিল। অব্যবস্থাপনাকে ন্যায়সঙ্গত হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছে সে। আমাদের যে বেতন বিল তা ক্লাবের মোট আয়ের ১০৩ শতাংশ। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবগুলোর তুলনায় যা ২০-৩৫ শতাংশ বেশি। এই দায়ভার এড়াতে পারবে না কেউ। (আমাদের) অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক এবং আর্থিক অবস্থা নাটকীয়। বার্সেলোনার মোট মূল্যমান ৪৫ কোটি ইউরো, আর ঋণ ১৩৫ কোটি ইউরো।'
চিঠিতে বার্তোমেউ আরও দাবি করেছিলেন যে, লাপোর্তা সাবেক বার্সা সুপারস্টার নেইমারকে এই গ্রীষ্মে একটি অবৈধ বোনাস দিয়েছেন, যেটা আসলে নেইমারের পাওনা ছিল না। লাপোর্তা এই ব্যাপারেও বার্তোমেউয়ের ঘাড়েই দোষ চাপান। ক্লাবের বর্তমান অর্থনৈতিক অনটনের শুরুটা নেইমারের দলবদলের পরই শুরু হয়েছিল বলে জানান তিনি।
লাপোর্তা বলেন, 'সে নেইমারের কথা বলে। বলে আমরা নাকি নেইমারকে ১.৬৭ কোটি ইউরো বোনাস দিয়েছি। আরেকটা মিথ্যে। আপনারা বার্তোমেউকে মনে করিয়ে দিতে পারে, নেইমার-কাণ্ডের পর ক্লাবের ভাবমূর্তি কীভাবে নষ্ট হয়েছিল।
'তারা যখন নেইমারকে ২২ কোটি ইউরো দিয়ে বিক্রি করেছিল, তখনই ক্লাব বেশ অসমভাবে খরচ করে ফেলেছে। এর (নেইমারের দলবদল) কারণেই পরে বেতন-ভাতার পরিমাণ এতো বেড়ে গিয়েছে।'