স্যামসন ঝড়ের রাতে মুস্তাফিজের তেতো অভিজ্ঞতা
খেলা
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দর্শক থাকলে উল্লাসে গ্যালারি ফেটে পড়তো। রাজস্থান রয়্যালসের প্রায় পুরো ইনিংসজুড়ে গগন বিদারী চিৎকারে একটাই নাম শোনা যেত; সানজু স্যামসন। কিন্তু শেষ বলে যে ট্র্যাজেডি লেখা হতো, তা কীভাবে সামলাতো রাজস্থানের ভক্তরা! ক্রিকেট ঈশ্বর যেন তাই আগে থেকেই গ্যালারি ফাঁকা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলেন!
পুরো ইনিংসজুড়ে আশার আলো জ্বালিয়ে রেখে ছুটলেন জয়ের পথে, খেললেন মহাকাব্যিক ইনিংস। তার ব্যাট গলে ঝরবে আলোর ফুয়ারা, শেষটা হবে ঝলমলে রঙিন; এমন দৃশ্যই তো মনে মনে এঁকে ফেলেছিলেন রাজস্থান-পাঞ্জাব কিংসের ম্যাচটি দেখতে বসা ক্রিকেটভক্তরা। কিন্তু শেষটা তেমন হলো না। পারলেন না রাজস্থানের ট্র্যাজিক হিরো, ১১৯ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেও হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো অধিনায়ক স্যামসনকে।
আইপিএলের উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচটিতে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ৪ রানে হেরে গেছে রাজস্থান রয়্যালস। হারটি যেন রাজস্থানের নয়, পুরো হারের বোঝা স্যামসনের মাথায়ই। ২২২ রানের বিশাল লক্ষ্য পাড়ি দিতে নেমে 'ওয়ান ম্যান আর্মি' হয়ে লড়ে যাওয়া ভারতীয় এই ব্যাটসম্যান ইনিংসের কেবল শেষ বলটিই ভালোভাবে খেলতে পারলেন না। তাতে তার নামটি যোগ হয়ে গেলো পরাজিতর দলে!
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে অধিনায়ক লোকেশ রাহুল ছাড়াও ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালান ক্রিস গেইল ও দীপক হুদা। তাতে ৭ উইকেটে ২২১ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় পাঞ্জাব কিংস। জবাবে ইনিংসের চতুর্থ বল থেকেই দলকে পথ দেখানো স্যামসন খেললেন শেষ পর্যন্ত। তবু ব্যবধান থেকে যায় ৪ রানের, ৭ উইকেটে ২১৭ রানে শেষ হয় রাজস্থানের ইনিংস।
ঝাঁঝালো এই লড়াইয়ের ম্যাচ দিয়ে এবারের আইপিএল মিশন শুরু হয়েছে মুস্তাফিজুর রহমানের। তবে শুরুটা একেবারেই মনের মতো হয়নি বাংলাদেশের বাঁহাতি এই পেসারের। পাঞ্জাবের ইনিংস ছোট রাখতে বল হাতে কিছুই করতে পারেননি তিনি। ৪ ওভারে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৫ রান খরচা করেও উইকেটশূন্য থেকে যান মুস্তাফিজ।
বিশাল লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় রাজস্থান। ইনিংসের তৃতীয় বলে ফিরে যান বেন স্টোকস। এখান থেকেই দলের হাল ধরেন স্যামসন। অন্য প্রান্তের সহযোদ্ধারা দিক হারিয়ে ফিরতে থাকলেও আলোক বর্তিকা হাতে লক্ষ্যের দিকে ছুটে যেতে থাকেন স্যামসন।
আইপিএল ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করে জয়ের ঘ্রাণই নিতে শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ ওভারটা পুরো ইনিংসের ছন্দের সঙ্গে মিললো না। ১৩ রানের দরকার থাকলেও স্যামসন তুলতে পারলেন ৭ রান। ৬৩ বলে ১২টি চার ও ৭টি ছক্কায় ১১৯ রান করেও তাই স্যামসনকে মাঠ ছাড়তে হলো রাজ্যের হতাশা নিয়ে। জশ বাটলার ২৫, শিভম ধুবে ২৩ ও রিয়ান পরাগের ২৫ রানও বিশেষ কাজে এলো না। পাঞ্জাবের বাঁহাতি পেসার আর্শদ্বীপ সিং সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন। মোহাম্মদ শামি পান ২টি উইকেট।
এরআগে ব্যাটিং করতে নেমে ৯১ রানের চোখ ধাঁধানো এক ইনিংস খেলেন পাঞ্জাবের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। তার ৫০ বলের ইনিংসটি ছিল ৭টি চার ও ৫টি ছক্কায় সাজানো। ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইল ২৮ বলে ৪০ রান করেন। সবেচেয়ে বড় তাণ্ডব চালান দীপক হুদা। মাত্র ২৮ বলে ৪টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৬৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন ডানহাতি এই অলরাউন্ডার। রাজস্থানের চেতন শাকারিয়া ৩টি ও ক্রিস মরিস ২টি উইকেট নেন।
Comments
While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.