সাকিবের শাস্তি ঘোষণা নিয়ে বিসিবির ‘সাজানো’ নাটক!
যেকোনো ধরনের ঘোষণার আগে নাটকীয়তা পছন্দ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। দল ঘোষণা থেকে শুরু করে, কোচ নিয়োগ, সফর সূচিসহ এ জাতীয় অনেক ঘোষণা নিয়েই নাটকীয় আবহ তৈরি করে থাকে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এবার সাকিব আল হাসানের শাস্তি ঘোষণার ক্ষেত্রেও নাটকীয়তার পথ বেছে নিলো বিসিবি। আর এই নাটকীয়তায় দুর্ভোগের স্বীকার হলেন ক্রীড়া সাংবাদিকরা।
শুক্রবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ম্যাচ চলাকালীন স্টাম্পে লাথি মারা, দুই হাতে স্টাম্প তুলে আছাড় মারা ও অন ফিল্ড আম্পায়ারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন সাকিব। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়কের করা এমন আচরণের শুনানি সাধারণত ১৮ থেকে ২২ ঘণ্টার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়, এরপর সিদ্ধান্ত নেন সংশ্লিষ্টরা।
সাকিবের এই ঘটনায় অবশ্য শুনানির প্রয়োজন হয়নি। ম্যাচের দুই অন ফিল্ড আম্পায়ার ইমরান পারভেজ ও মাহফুজুর রহমান এবং ম্যাচ রেফারি মোরশেদুল আলম রিপোর্ট জমা দেন। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে সাকিবকে তিন ম্যাচের নিষিদ্ধ ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
শাস্তির নোটিশ দুপুরে সাকিবের কাছে পাঠানো হলে তিনি তাতে স্বাক্ষর করেন। শাস্তি মেনে না নিলে তখন শুনানি অনুষ্ঠিত হতো। অর্থাৎ, দুপুরের মধ্যেই সাকিবের শাস্তি চূড়ান্ত হয়ে যায়। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত সংবাদমাধ্যমকে জানাতে বিসিবি যে নাটকের জন্ম দিয়েছে, তা রীতিমতো অপেশাদার এবং হাস্যকর।
সাকিবের শাস্তি ঘোষণা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি দিনের শেষভাগে জানায় বিসিবি। ৬টা ১৫ মিনিটে বিসিবি থেকে জানানো হয়, সাড়ে ৭টায় ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের মীনাবাজারে সংবাদ সম্মেলন। যেখানে কথা বলবেন বিসিবি পরিচালক ও সিসিডিএম চেয়ারম্যান কাজী ইনাম। কিন্তু ৬টা ৫২ মিনিটে ধানমন্ডির সংবাদ সম্মেলন বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরই গুলশানে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের বাসভবনে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন সিসিডিএম চেয়ারম্যান।
অথচ অনেক সংবাদকর্মী এরমধ্যে ধানমন্ডিতে ২৭ নম্বরে গিয়ে উপস্থিত হন। কিছুক্ষণ পর তারা জানতে পারেন, গুলশানে সংবাদ সম্মেলন হয়ে গেছে। ধানমন্ডির সংবাদ সম্মেলন বাতিলের পর ৩৭ মিনিটে কাজী ইনামের গুলশানে পৌঁছে যাওয়ার বিষয়টি রীতিমতো বিস্ময়ের! আবার এতো অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ সংবাদমাধ্যমও গুলশানে পৌঁছে যায়। ধারণা করা হয়, তাদেরকে আগেই জানানো হয়েছিল।
সব মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা নিয়ে ক্রীড়া সাংবাদিকদের অনেককেই ধোঁয়াশার মধ্যে রেখেছিল বিসিবি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আম্পায়ারদের পাঠানো রিপোর্টে সাকিবের স্বাক্ষর নিয়ে দুপুরের মধ্যেই বিসিবি সভাপতির বাসভবনে যান কাজী ইনামসহ সংশ্লিষ্ট কর্তারা। কিন্তু সোয়া ছয়টার দিকে জানানো হয় ধানমন্ডিতে সংবাদ সম্মেলন হবে। আর এই সংবাদ সম্মেলন বাতিলের ঘোষণা এমন সময়ে দেওয়া হয়, যখন অনেকেরই সুযোগ ছিল না তাতে অংশ নেওয়ার।